About-Heart (49 )

হৃদয়ের কথা; পর্ব-১১; হৃদয় কপাটিকার ত্রুটি

20 May 2018 হৃদয়ের কথা; পর্ব-১১; হৃদয় কপাটিকার ত্রুটি

হৃদয় কপাটিকার ত্রুটি; ডাঃ পার্থপ্রতিম। ২৪ শে মে ১৯৯৯; পৃষ্ঠা -তিন; দৈনিক বসুমতী পত্রিকায় প্রকাশিত     এই প্রাসাদে রয়েছে চারটি নিরস্ত্র প্রহরী। একঘর থেকে অন্য ঘরে যাওয়া যায়, কিন্তু ফিরে আসতে গেলেই দরজা বন্ধ। এ অট্টালিকায় রয়েছে আমাদের প্রাণ ভ্রমরা।     হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন হৃদযন্ত্রের কথাই বলছি। হৃৎপিন্ডের চারটি ভাগের মধ্যে যে যোগাযোগের দরজা রয়েছে সেগুলি ঢাকা থাকে একমুখী ভালভের সাহায্যে। কার্বন-ডাই অক্সাইড পূর্ণ রক্ত মহাশিরাগুলির মাধ্যমে ডান অলিন্দে আসে। তারপর সেই রক্ত যায় ডান নিলয়ে। ডান অলিন্দ ও ডান নিলয়ের মধ্যে রয়েছে একটি তিন পাল্লাওয়ালা দরজা। এই দরজার নাম ট্রাইকাসপিড ভালভ (Tricuspid Valve)। ডান নিলয় থেকে অর্ধচন্দ্রাকার কপাটিকা (Semilunar Valve)  দিয়ে রক্ত যায় ফুসফুসে। ফুসফুস থেকে অক্সিজেনপূর্ণ রক্ত প্রথমে বাম অলিন্দে আসে। বাম অলিন্দ ও নিলয়ের মধ্যে আছে দু’পাল্লার দরজা বাইকাসপিড ভালভ (Bicuspid Valve)। একে মাইট্রাল ভালভও বলে। বাম নিলয় থেকে অক্সিজেন পূর্ণ রক্ত মহাধমনীর (Aorta) মধ্য দিয়ে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। মহাধমনীর মুখে থাকা অর্ধচন্দ্রাকার কপাটিকার নাম...

continue reading →

হৃদয়ের কথা; পর্ব-১৬; ই.সি.জি.-হৃদয়ের লেখচিত্র

20 May 2018 হৃদয়ের কথা; পর্ব-১৬; ই.সি.জি.-হৃদয়ের লেখচিত্র

ই.সি.জি.-হৃদয়ের লেখচিত্র; ডাঃ পার্থ প্রতিম। ১৭ই আগষ্ট ১৯৯৮; দৈনিক বসুমতী পত্রিকায় প্রকাশিত লাব্-ডুব্-লাব্-ডুব। আপনার বুকের গভীর থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে  উঠে আসছে জীবনের সা-রে-গা। সোনালী প্রভাত থেকে উষ্ণ দুপুর পেরিয়ে গোধূলি। গোধূলি থেকে রাতের আঁধার বৃন্ত ছেঁড়া ফুটন্ত সকাল। এর কোন বিরাম নেই। মাতৃজঠর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত কাজ করে যাওয়া হৃদয়ের মূল চাবিকাঠিটি লুকিয়ে আছে বৈশিষ্ট্যময় হৃৎপেশির মাঝে।     হৃদযন্ত্রের ভেতরে আছে কতগুলি বিশেষ কোষ যার নাম পেসমেকার কোষ (Pacemaker Cell) । এদের কোষ না বলে বৈদ্যুতিক সেল বা ব্যাটারি বলা যায়। পেসমেকার থেকে তৈরী হয় বৈদ্যুতিক তরঙ্গ। হৃৎপিন্ডের ডান অলিন্দের প্রাচীরে থাকা সাইনো অরিকুলার পর্ব (Sino Auricular Node) থেকে ঋণাত্মক তড়িৎ তরঙ্গ (Negative Electrical Wave) অলিন্দের প্রাচীরে প্রবাহিত হয়। এই তড়িৎ তরঙ্গ নিয়মিত ভাবে এক নির্দিষ্ট মাত্রায় হার্টের অলিন্দ ও নিলয় দুটিকে সংকুচিত ও প্রসারিত করে। আসলে আমাদের ‘দিল কি ধড়কনের’র মূল উৎস হল সুনির্দিষ্ট তালে বয়ে যাওয়া এই তড়িৎ প্রবাহ।     হৃৎপিন্ডের ভেতরে চলা এই তড়িৎ স্পন্দন শরীরের ওপরকার চাম...

continue reading →

হৃদয়ের কথা পর্ব-১০; হৃদয়ের বাতরোগ

20 May 2018 হৃদয়ের কথা পর্ব-১০; হৃদয়ের বাতরোগ

হৃদয়ের বাতরোগ; ডাঃ পার্থপ্রতিম। ৬ই অক্টোবর ১৯৯৭ দৈনিক বসুমতী পত্রিকায় প্রকাশিত তেমনই ডাগর কালো চোখ, তেমনি একরাশ বাবরি চুল। আমি ওর নাম দিয়েছি নজরুল। নজরুলের বাবা হাতিম আনসারি রাজমিস্ত্রির জোগালি। মা মালতি খাতুন পাঁচবাড়ির ঠিকা ঝি। রেল লাইনে পাশে গড়ে ওঠা হঠাৎ কলোনিতে ওদের আস্তানা। শৈশবে নজরুল কিভাবে হেঁটে খেলে বেড়াত -তা আমি দু’চোখ বন্ধ করে বেশ দেখতে পাই। গত দশমাস সে পুরোপুরি শয্যাশায়ী।     প্রথমদিকে প্রায়ই সর্দি-কাশি, হাত-পা ব্যথা এসব লেগে থাকতো। তারপর গাঁটগুলি ফুলে যায়। মালতি পাড়ার দোকান থেকে এনেছিল পাইরোজেসিক-অ্যানালজেসিক ট্যাবলেট। বাবুর বাড়ির টিভি দেখে লাগিয়েছিল ‘সর্দি, শিরদর্দ, পীড়াকো পলমে দূর করা বাম।’ আমার কাছে যখন এল, তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। রোগ হাত-পা’র সঙ্গে বাসা বেঁধেছে হৃদয়ে।     চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় একে বলে রিউম্যাটিক হার্ট ডিজিজ্ (Rheumatic Heart Disease)। সহজে বাংলা করে হৃদয়ের বাতরোগ বলা যেতে পারে। বিটা হেমোলাইটিক স্ট্রেপটোকক্কাস (Beta Hemolytic Strepto Coctus) নামের জীবাণুই এর জন্য মূলত দায়ী। স্ট্রেপটোকক্কাস নাম থেকেই বোঝা যায় এ...

continue reading →

হৃদয়ের কথা পর্ব-১৯; কোলেস্টেরল ও হৃদরোগ

20 May 2018 হৃদয়ের কথা পর্ব-১৯; কোলেস্টেরল ও হৃদরোগ

হৃদয়ের কথা পর্ব-১৯; কোলেস্টেরল ও হৃদরোগ; ২২শে নভেম্বর ১৯৯৯; দৈনিক বসুমতী পত্রিকায় প্রকাশিত বর্তমানে হার্টের রোগী ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের মাথাব্যথার অন্যতম কারণ কোলেস্টেরল। আমাদের খাদ্যের মধ্যে সাধারণভাবে থাকে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন, খনিজ পদার্থ ও জল। ফ্যাট স্বতন্ত্রভাবে থাকতে পারে আবার কোনো কোনো সময় কার্বোহাইড্রেট প্রোটিনের সঙ্গেও মিশে থাকে। দুধ, মাংস, ডিম, বদাম এ সবেতেই ফ্যাট রয়েছে। ফ্যাট বা চর্বি আমরা দুভাবে পাই; প্রাণী, থেকে যেমন-ঘি, মাখন, পশু চর্বি; আর উদ্ভিদ খেকে যেমন-বিভিন্ন প্রকার ভোজ্য তেল, বনস্পতি।     চর্বি পাকস্থলী ও অন্ত্রে পরিপাক হয় তারপর রক্তে মিশে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। কিছু পরিমাণ চর্বি দেহে প্রয়োজনীয় ক্যালোরি যোগায়। বাকি ভাগ শরীরের বিভিন্ন অংশে সঞ্চিত হয়। চর্বিতে বিভিন্ন প্রকার ফ্যাটি অ্যাসিড ও গ্লিসারল (Glyceral)  থাকে।     কিছু কিছু ফ্যাটি অ্যাসিডের ভেতর থাকা কার্বন পরমাণুর সব যোজ্যতা বন্ধনী (Valency Bond)  হাইড্রোজেন পরমাণু দ্বারা আবদ্ধ থাকে, একে সংপৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড বা স্যাচিউরেটেড ফ্যাটি অ্যসি...

continue reading →

হৃদয়ের কথা; পর্ব-১২; হৃৎপেশির ব্যাধি

20 May 2018 হৃদয়ের কথা; পর্ব-১২; হৃৎপেশির ব্যাধি

হৃদয়ের কথা; পর্ব-১২; হৃৎপেশির ব্যাধি     দু’পারে দু’জন। জন্ম আর মৃত্যু। মাঝে কান্না-হাসির দোল দোলানো পৌষ ফাগুনের পালা- এই তো জীবন। আর হৃদয় হ’ল সেই অঙ্গ যার নড়াচড়ার মধ্যেই আছে আমাদের জিয়নকাঠি। হৃদযন্ত্রের পেশিগুলি তিনটি স্তরে সাজানো থাকে। ভেতরে থাকে এন্ডোকার্ডিয়াম (Endocardium), মাঝে রয়েছে মায়োকার্ডিয়াম (Myocardium) ও সবচেয়ে বাইরে থাকে পেরিকার্ডিয়াম (Pericardium)। ভেতর থেকেই শুরু করা যাক্। প্রথমেই আসি এন্ডোকার্ডিয়ামের রোগ-ব্যাধি প্রসঙ্গে। এন্ডোকার্ডিয়ামে জীবাণুর আক্রমণ হলে তাকে বলে এন্ডোকার্ডাইটিস (Endocarditis)। এ রোগ সরাসরি নিজে থেকে হয় না। নিউমোনিয়া, থাইসিস, টনসিলাইটিস, ডায়াবিটিস, বাত, গনোরিয়া আরো কতগুলি ব্যাধির পরবর্তী উপসর্গ হিসাবে এই রোগ সৃষ্টি হয়। তিন ধরনের এন্ডোকার্ডাইটিস সাধারণভাবে বেশি দেখা যায়-        সাব-অ্যাকিউট এন্ডোকার্ডাইটিস (Sub- Acute Endocarditis): এ রোগের উপসর্গ খুব তীব্রভাবে দেখা যায় না। হৃৎপেশিতে বিভিন্ন প্রকার জীবাণুর সংক্রমণ এ রোগের অন্যতম কারণ। স্ট্রেপটোকক্কাস স্যানগুইস (Streptococcus Sanquis) বা আলফা হেমোলাইটিক স্ট্রেপটোকক্কাস পোকা দাঁত সিল ক...

continue reading →

হৃদয়ের কথা; পর্ব-১৭; ইকোকার্ডিওগ্রাফি

20 May 2018 হৃদয়ের কথা; পর্ব-১৭; ইকোকার্ডিওগ্রাফি

হৃদয়ের কথা; পর্ব-১৭; ইকোকার্ডিওগ্রাফি; ডাঃ পার্থপ্রতিম।     নিথরতা যেমন মৃত্যু, তেমনি স্পন্দন বা কম্পন হলো সজীবতার প্রকাশ। হৃৎপিন্ড যেহেতু মানবজীবনের প্রাণস্পন্দনের জীয়নকাঠি, তাই  হৃদযন্ত্রের আনাচে-কানাচের সঠিক খোঁজখবর পেতে স্বাস্থ্য-প্রযুক্তিবিদদের মাথা ঘামানোর অন্ত নেই। হৃদযন্ত্রের বিভিন্ন ত্রুটি-বিচ্যুতি ধরতে ইকোকার্ডিওগ্রাফি এক আধুনিক ব্যবস্থা। ইকোকার্ডিওগ্রাফি হলো হৃদয়ের বিভিন্ন অংশের মানচিত্র (Map) আঁকার পদ্ধতি।     শব্দসৃষ্টির মূলকথা হলো কম্পন। শব্দ সৃষ্টিকারী বস্তুটি প্রতি সেকেন্ডে যত বার কাঁপে তাকে বলে কম্পাঙ্ক বা ফ্রিকোয়েন্সি (Frequency)। সাধারণভাবে ২০ থেকে ২০,০০০ ফ্রিকোয়েন্সির শব্দ আমাদের কান শুনতে পায়। শব্দের কম্পাঙ্ক ২০,০০০-এর বেশি হলে তাকে বলে শব্দোত্তর তরঙ্গ বা আলট্রা সাউন্ড (Ultra sound) এই তরঙ্গ মোটামুটি সরলরেখায় চলাফেরা করে। ইকোকার্ডিওগ্রাফি করার কাজে এই আলট্রা সাউন্ডকে ব্যবহার করা হয়। ইকো (Echo)-এই গ্রিক শব্দকে বাংলায় প্রতিধ্বনি বলা যায়। শব্দ বা ধ্বনি যখন কোনো বস্তুতে প্রতিফলিত হয়ে ফিরে আসে তাকেই বলে প্রতিধ্...

continue reading →

Join our mailing list Never miss an update