হৃদয়ের কথা; পর্ব-৮; হার্ট অ্যাটাক বড়ো মেয়ে দীপান্বিতার বিয়ে দিয়ে তারপর অন্য কাজ। সমীরবাবু এখন আর অন্য কিছু ভাবতে রাজী নন। আর ছয় বছর চাকরি আছে। ততদিনে বাবলুর গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট হওয়ার কথা। বড়ো ম্যানেজারকে বললে তিনি কথা ফেলতে পারবেন না। তাছাড়া চা-বাগানের এটা একটা অলিখিত নিয়ম। না, জগতের সব ঘটনা আশানুরূপ ভাবে ঘটে না। যদিও বিষয়টিকে পুরোপুরি আকস্মিক বললে ভুল হবে। মাঝে মাঝে বুকে একটা ব্যথা হতো। তবে এমনটি হবে তা কে জানতো। হার্ট অ্যাটাক এমন করেই হঠাৎ সব পরিকল্পনা ওলট-পালট করে দেয়। হার্ট অ্যাটাককে ডাক্তারি ভাষায় বলি মায়োকার্ডিয়াল ইনফ্রাকশন (Myocardial Infraction)। বুকে অসহ্য যন্ত্রণা, মনে হয় বুকটা যেন দুমড়ে-মুচড়ে যাচ্ছে। ব্যথাটা বুকের মাঝখান থেকে বাঁ-কাঁধে, পিঠে- হাতে, চোয়ালে ছড়িয়ে পড়ে। কখনো আবার অব্যক্ত অস্বস্তি ও শ্বাসকষ্ট হয়। বুক ধড়ফড় করে। কারো ক্ষেত্রে হৃৎস্পন্দনের হার খুব বেড়ে যায়, কারো বেলায় তা কমে আসে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বমির উপসর্গ দেখা দেয়। প্রথমদিকে ব্লাডপ্রেসার বেড়ে গেলেও পরে তা কমে আসে। এ ধরণের বিভিন্ন লক্ষণ হার্ট অ্যাট...
continue reading →হৃদয়ের কথা- ৫ পর্ব;‘হৃদয়’ কি মন ? না হৃৎপিন্ড; ৭ অক্টোবর ১৯৯৬; দৈনিক বসুমতী পত্রিকায় প্রকাশিত সেদিন আমার কবি বন্ধু জীবকময় বেশ অভিযোগের সুরেই বললো- হৃদয় মানে হৃৎপিন্ড নয়। মন, অন্তর আরো কিছু...। পরক্ষণেই প্রশ্ন করলাম, তোমার অন্তর মন আছে কোথায়? নিজের অজান্তেই যেন তার হাতটি চলে গেল বুকের কাছে। হ্যাঁ, বিষয়টি নিয়ে ভাবা যেতে পারে। শুধু আমার কবি বন্ধু কেন? অনেকেরই তো ধারণা হৃদয়-মন রয়েছে মানুষের বুকের মাঝে। ‘রামায়ণ’ বা ‘রামচরিত মানস’ যারা পড়েন নি, তারাও হয়তো পুরনো ক্যালেন্ডারের পাতায় দেখে থাকবেন সেই ছবি। হনুমান দু’হাতে নিজের বুক চিরে ফেলেছেন। রক্ত পড়ছে ঝর-ঝর করে। বুকের ভিতর বিরাজ করছে রাম ও সীতার যুগলমূর্তি। শরীর বিজ্ঞান সমন্ধে যারা সচেতেন তারা জানেন- আমাদের চিন্তা-ভাবনা, ভাব-ভালোবাসা সবই নিয়ন্ত্রিত হয় গুরুমস্তিষ্ক বা সেরিব্রাম (Cerebrum) থেকে। মন হ’ল সুবিশাল স্নায়ুতন্ত্রের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার ফল। গুরুমস্তিষ্কের মধ্যে রয়েছে এক লিম্বিক অংশ (Limbic Lobe)। বিজ্ঞানীরা একেই চিহ্নিত করেছেন প্রেম-আবেগের উৎসভূমি হিসাবে। লিম্...
continue reading →হৃদয়ের কথা- ৬ পর্ব; হৃদয়ের সাড়াশব্দ; -ডাঃ পার্থপ্রতিম। সে চলেছে. . . । কান রাখুন না আপনার প্রিয়তম বা প্রিয়তমার বুকে, শুনতে পাবেন তার চলার ধ্বনি। হ্যাঁ, ডাক্তারবাবুরা যখন স্টেথোস্কোপ দিয়ে আপনার বুক পরীক্ষা করেন তখন বুকের বাঁ-দিকে শুনতে পান এই লাব্-ডুব্ ছন্দ। ভ্রূণের বয়স যখন ৯ সপ্তাহ তখন থেকেই মা অনুভব করে অনাগত অতিথির প্রাণের স্পন্দন। এ শব্দের মধ্যেই রয়েছেজীবনের সজীব ছোঁয়া। এ থেমে যাওয়া মানেই মৃত্যুর নিথর পরশ। চিকিৎসকেরা একেই বলে হৃদধ্বনি বা হার্ট সাউন্ড (Heart Sound)|। হৃৎপিন্ডের সংকোচন ও প্রসারণের সময় মোটামুটিভাবে চার রকমের কম্পন তৈরি হয়। হৃদয় যখন সংকুচিত হতে থাকে, সে সময়ে অলিন্দ ও নিলয়ের মধ্যে থাকা বাইকাসপিড ও ট্রাইকাসপিড ভালভ্ দু’টি সজোরে বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলেই সৃষ্টি হয় প্রথম হৃদধ্বনি বা ফার্স্ট হার্ট সাউন্ড। এই শব্দ স্থুল ও দীর্ঘ। অনেকটা ইংরেজি L-U-B-B-এর মতো। ফার্স্ট হার্ট সাউন্ড ০.১ থেকে ০.১৭ সেকেন্ড পর্যন্ত থাকে। হৃৎপিন্ডের সংকোচনের সময় নিলয় থেকে রক্ত মহাধমনী ও ফুসফুসীয় ধমনীর ভেতরে দিয়ে দেহের বিভিন্ন প্রান্তে ছিটকে পড়ে। ...
continue reading →হৃদয়ের কথা পর্ব-৭; হৃদবেদনা বা অ্যানজাইনা; -ডাঃ পার্থপ্রতিম। মধ্যদিনের রক্ত নয়ন এখন অন্ধ। ঈশান কোণে কালো মেঘ। পিঁপড়েরা সারি বেঁধে উঁচুতে উঠছে। কারো মুখে ডিম, কারো মুখে খাবার। না, আর কোনো বর্ণনার প্রয়োজন নেই। পাঠক বন্ধুরা নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন এরপরেই নামবে ঘনঘোর বরষা। কোনো বড়ো ঘটনার আগে এমন আভাস পাওয়া যায়। হার্ট অ্যাটাকের ক্ষেত্রে এই পূর্বাভাসকে বলে অ্যানজাইনা পেক্টোরিস (Angina Pectoris)। নামটা একটু খটমটে। আসলে এটি গ্রিক শব্দ থেকে এসেছে। একে বাংলা তর্জমা করে হৃদবেদনা বলা যেতে পারে। আমাদের বুকের গভীরে থাকা হৃদয়টি যখন প্রয়োজনের তুলনায় সঠিক পরিমাণে পুষ্টি ও অক্সিজেন পায় না তখনই তা জানিয়ে দেয়। সেদিক থেকে অ্যানজাইনা পেক্টোরিসকে হৃৎপেশীর দাবি-দাওয়ার চাটার্ড অব্ ডিমান্ড বলা যেতে পারে। হৃদযন্ত্রের মূল পেশিস্তর হ’ল মায়োকার্ডিয়াম। মায়োকার্ডিয়ামে রক্তের ঘাটতি হলে শুরু হয়ে যায় বিভিন্ন উপসর্গ, অ্যানজাইনা পেক্টোরিস। তাই অনেকে অ্যানজাইনা পেক্টোরিসকে বলেন ট্র্যান্সিয়েট মায়োকার্ডিয়াল ইস্কিমিয়া (Transient Myocardial Ischaemia)। দেহের কোনো অ...
continue reading →হৃদয়ের কথা পর্ব -২; হৃদয়ের বিবর্তন; -ডাঃ পার্থপ্রতিম। ৩০শে সেপ্টেম্বর ১৯৯৬; দৈনিক বসুমতী পত্রিকায় প্রকাশিত শুধু আজ নয়। আগামীকাল-আগামী পরশু- প্রতিদিনের সূর্যোদয় আমার কাছে কাঙ্খিত। সে সকাল যেন না আসে- ‘‘যখন সেই প্রভাতে নেই আমি’’। জীবজগতের সকলে আরো সুখে, আরো ভালোভাবে বাঁচতে চায়। কতিপয় ছাড়া আর কেউ বলবেনা- ‘‘মরণ রে তুঁহু মম শ্যাম সমান’’। বেঁচে থাকার জন্য খাদ্য, অক্সিজেন, রেচন প্রভৃতি বস্তুর মিলিত দ্রবণ দেহের এক স্থান থেকে অন্যত্র পরিবাহিত হয়। এই পদ্ধতিকে এক কথায় বলে সংবহন (Circulation)। উচ্চ শ্রেণীর প্রাণীদের ক্ষেত্রে সংবহনের চাবি-কাঠি থাকে হৃৎপিন্ডে। বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে জটিল থেকে জটিলতর হয়েছে প্রাণীর জীবনযাত্রা। সেই একই সঙ্গে উন্নত থেকে উন্নততর হয়েছে প্রাণীর অঙ্গ-তন্ত্র-হৃদয়। মানবসভ্যতায় ইতিহাস হলে নৃতত্ত্ববিদদের যেমন নাড়াচাড়া করতে হয় গুহালিপি-স্তম্ভলিপি নিয়ে, তেমনি জৈব বিবর্তনের দলিল দস্তাবেজ লুকিয়ে আছে হৃদয়ের অলিন্দ-নিলয়ের খাঁজে খাঁজে। বানর মানুষেরই পূর্বপুরুষ এ সত্য যারা জেনে গিয়েছেন, তাদের কানে কানে বলি- কেঁচো, ...
continue reading →হৃদয়ের কথা পর্ব-৩; রক্তচাপ ও তার মাপজোখ; ডাঃ পার্থপ্রতিম। তিনি বিজ্ঞানী নন। চিকিৎসক বা শরীরতত্ত্ববিদ্? না, তাও না। মানুষের পরলোককে সুখ ও স্বাচ্ছন্দ্যে ভরে দেওয়াই তার কাজ। ঈশ্বরের সকল সন্তানের মৃত্যুর পর পরমপিতার কাছে পৌঁছে দেবার লক্ষ্য নিয়েই তার কর্মজীবন শুরু। হ্যাঁ, এই রকমই এক ব্যক্তি গির্জার ইংরেজ যাজক রেভ্ স্টিফেন হল্স (Rev Stephen Hales) চিকিৎসা জগতে ঘটিয়ে দিলেন এক যুগান্তকারী ঘটনা। তখন ১৯৬৩ সাল। এর প্রায় একশো বছর আগে উইলিয়াম হার্ভি আবিষ্কার করেছিলেন রক্তসঞ্চালন পদ্ধতি। হল্স বিড়ালের করটিড ধমনীর মধ্যে ঢুকিয়ে দিলেন একটি ক্যানুলা (Cannula)। ক্যানুলা হ’ল ক্ষতস্থান থেকে পুঁজ, রস প্রভৃতি বের করার জন্য বিশেষ নল। স্টিফেন সাহেব ক্যানুলার সঙ্গে খাড়াখাড়ি ভাবে যুক্ত করলেন তিন মিটার লম্বা কাঁচের নল। তিনি লক্ষ্য করলেন নলের ভিতর দিয়ে রক্ত প্রায় আড়াই মিটারে উঁচুতে উঠে গেছে। শুধু তাই নয়, দেখা গেল, প্রতিবার নিলয়ের সংকোচন ও প্রসারণের সঙ্গে সঙ্গে রক্ত নলের মধ্যে ওঠা-নামা করছে। স্টিফেন হলস্-এর এই পর্যবেক্ষণ ব্লাডপ্রেসার পরিমাপের সূচনা ঘটালো। পরবর্তীকালে ...
continue reading →Dr. Parthapratim. He exposes himself in such name i.e. without surname. This is his first revolt against such caste, creed and religion of so called society. Since the very boyhood he has been integrally attached with various scientific movement. He actively takes part in different Health and Science seminar bot
Read More →