বানারহাট হাই স্কুলের-সপ্তাহব্যাপী সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব সমাপ্ত; ৬ ফেব্রুয়ারী ১৯৯৯; দৈনিক বসুমতী পত্রিকায় প্রকাশিত
সংবাদদাতা, বানারহাট: বানারহাট উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তাহব্যাপী সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব সোমবার শেষ হয়েছে। পতাকা উত্তোলন করে এই উৎসবের সূচনা করেছিলেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জুগোপাল মুখোপাধ্যায়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেছিলেন বনমন্ত্রী যোগেশ বর্মন। পরবর্তীতে উপস্থিত ছিলেন পূর্ত দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী মনোহর তিরকি সহ আরও অনেকে। প্রতিদিন সন্ধ্যায় ছিল আলোচনাসভা। আলোচনাসভায় অংশ নেন অধ্যাপক দীপক ভট্টাচার্য (জনকল্যাণমুখী অর্থনীতি ও অমর্ত্য সেন), অধ্যাপক অমিত চক্রবর্তী (মূল্যবোধ ও বর্তমান সমাজ ব্যবস্থা), সুজিত ঘোষ এবং প্রশান্ত গুহ মজুমদার (জন্মশতবর্ষে জীবনানন্দ), বিমলেন্দু মজুমদার (জলপাইগুড়ি জেলার ভাষা ও ভাষা পরিস্থিতি), অধ্যক্ষ নিরঞ্জন পাল (আমাদের জীবনে গান্ধীজির অবদান), ডঃ সুভাষ সেনগুপ্ত (জন্মশতবর্ষে বনফুল), অমর চৌধুরি (জন্ম শতবর্ষে নজরুল) ও জগন্ময় ভট্টাচার্য। সাংস্কৃতিক মঞ্চের সামনে সুদৃশ্য প্রদশর্নী কক্ষে ছিল বিজ্ঞান ও ভূগোল বিষয়ক নানা ধরনের মডেল। বানারহাট উচ্চ বিদ্যালয় ছাড়াও পার্শ্ববর্তী বানারহাট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, বলকা পরিমল স্কুল, এ ভি এম হাই স্কুল, ভারতীয় পাঠশালা হাই স্কুল ও স্থানীয় তরুণ সঙ্ঘ এই প্রদর্শনী কক্ষে তাদের মডেল উপস্থাপন করে।
জুনিয়ার্স স্পোর্টিং ও ডিয়ারের ব্যবস্থাপনায় ছিল বিজ্ঞান পরিবেশ বিষয়ক ও একক চিত্রকলা প্রদর্শনী। কলকাতা ও উত্তরবাংলার চিত্রশিল্পীদের পাশাপাশি বানারহাটের লক্ষীপাড়া চা-বাগানের সুব্রত করের ডট পেন দিয়ে আঁকা মাদার টেরেসা, সত্যজিৎ ও রবীন্দ্র চিত্র বেশ প্রশংসা পায়।
সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব উপলক্ষে ম্যারাথন দৌড় সহ আরও কিছু ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
সুদৃশ্য সাংস্কৃতিক মঞ্চে প্রতিদিন ছিল আন্তঃ বিদ্যালয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা আর রাত্রে স্থানীয় ক্লাবের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নাটক এবং বহিরাগত শিল্পীদের বিচিত্রানুষ্ঠান। প্রথমদিন, বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা এবং পুনর্মিলনের দিন প্রাক্তন ছাত্ররা নাটক পরিবেশন করেন। চতুর্থ দিন লোকরঞ্জন শাখার শিল্পীরা ‘দিল্লি চলো’ নাটকটি পরিবেশন করেন। যে সব নাটক প্রতিদিন মঞ্চস্থ হয় সেগুলি হল মুখোশ (বানারহাট উচ্চ বিদ্যালয়), বিরুদ্ধে (আদর্শপল্লী নেতাজী সঙ্ঘ), মরা (রবীন্দ্র স্পোটিং অ্যান্ড কালচারাল), এখানেই শেষ নয় (প্রাক্তন ছাত্রবৃন্দ), অবিচ্ছিন্ন (তরুণ সঙ্ঘ), একটি অ-বাস্তব গল্প (প্রান্তিক)। বহিরাগত শিল্পীদের ছৌ-নৃত্যে মহিষাসুর বধ এবং সুচরিতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও পল্লব সরকারের আধুনিক গান দর্শক শ্রোতাদের প্রশংসা পায়। নাটক ছাড়াও স্থানীয় ক্লাবগুলির পরিবেশিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দর্শকদের আকৃষ্ট করে। বিদ্যালয়ের ৩ প্রাক্তন ছাত্র অরবিন্দু বসু, শৈবাল ভট্টাচার্য ও রবি দত্ত পুনর্মিলনের দিন স্মৃতিচারণা করেন। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার সঙ্গে যাঁরা জড়িত ছিলেন তাদের মধ্যে জীবিত একজন বিদ্যালয়ের প্রাক্তন হিসাব রক্ষক হেরম্ব বসুকে এই উৎসবে সংবর্ধনা জানান হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুবক্তা সুনীলকুমার চক্রবর্তী।