ডুয়ার্স দিন
-অমিত কুমার দে; ১৬ই জানুয়ারী ২০১১; উত্তরবঙ্গ সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত
ডাক দিয়ে বাগ্-বাগিচা, নিঝুম বনের মিষ্টি ঝোরা
তিপাই-তিপাই চায়ের বাগান, পাগলী নদী আপন-করা।
চিকরাশি-শাল-সেগুন-শিশু সাজিয়ে তোলে তাদের বাড়ি
বলছে-‘এবার মিলবো সবাই চোদ্দো তারিখ, জানুয়ারি।’
ঢেউ-খেলানো চায়ের বাগান নকশিকাঁথা বুনছে বসে
সঙ্গিনী ওই ছায়াগাছের জীর্ণ পাতা পড়ছে খসে
নতুন খুশি জাগবে প্রাণে, নতুন কুশি, নতুন শাড়ি
গাছ বলছে-‘আসবে কিন্তু চোদ্দো তারিখ, জানুয়ারি।’
শুড় উঁচিয়ে ডাকছে দ্যাখো জংলি বনের বুনো হাতি
শান্ত চোখে তাকায় হরিণ, বাইসনেরা তাদের সাথী।
গন্ডারটি বলছে যেন-‘মিলেমিশেই থাকতে পারি . . .
বিভেদ ভুলে হাত ধরে নাও চোদ্দো তারিখ জানুয়ারি।’
বক মেলে দেয় সফেদ ডানা, আকাশ-নীলে পাহাড় আঁকা
ক্যানভাসে কার নিটোল তুলি- অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকা।
পাহাড় বেয়ে কমলালেবু নামছে নিয়ে তম্বী নারী
নীরব ভাষায় বলছে-‘এসো, চোদ্দো তারিখ, জানুয়ারি।’
দোতারারই সঙ্গে মেশে ধামসা মাদল, পাগলা খমক্ . . .
গ্রাম পাহাড় আর বনের থেকে আসছে ভেসে সুরের দমক।
একই সাথে ঠোঁট মেলালো কোচ, রাভা, মেচ, মাড়োয়ারি
মুন্ডা, ওরাওঁ, টোটো, গারো . . . চোদ্দো তারিখ, জানুয়ারি।
রাজবংশী ভাওয়াইয়া গান গাইছে দ্যাখো বাংলাভাষী
কপটবিহীন নেপালী-মন বলছে-‘বন্ধু ভালোবাসি।’
ডুয়ার্স-দিনে শপথ নিলে আর হবে না বাতাস ভারী
ভালোবাসার বীজ বুনে দাও চোদ্দো তারিখ জানুয়ারি।