জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে ‘ডুয়ার্স ডে’ পালনের পরিকল্পনা ডুয়ার্সে; বাবলু রহমান; ৩রা নভেম্বর ২০১০; আজ বাংলা পত্রিকায় প্রকাশিত
উত্তরে মাথা তোলা মৌন হিমালয়, তার কোল বেয়ে নেমে আসা আদিগন্ত বিস্তৃত চা-বাগিচার সবুজ গালিচা। অনামী পাহাড়ী ঝোড়া, অলস পায়ে হেঁটে চলা বুনো হাতির দল। শাল, সেগুন, শিশু, জারুল, চিকরাশি আর সব নাম জানা-না-জানা গাছ-গাছালির শ্যামল অরণ্য। আরও বহু কিছু নিয়ে এই ডুয়ার্স। ওরাঁও, মুন্ডা, সাঁওতাল, বাঙালী, বিহারী, নেপালী, মারোয়ারী, মেচ, রাভা, কোচ, টোটো, গারো, রাজবংশী আরো বহু ভাষাভাষী ও জনজাতির সন্মিলিত সংস্কৃতিতে এই ভূখন্ড। অতীতে বছরের পর বছর ধরে এখানকার মানুষেরা সকলে পাশাপাশি থেকে একে অপরের সুখ-দুঃখে সামিল হয়েছে। বর্তমানে বিভিন্ন ঘটনাচক্রে বিস্মৃত হয়েছে ডুয়ার্সের অতীত ঐতিহ্য। এমনিতেই স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে এ-অঞ্চলে তেমন কোন শিল্পের বিকাশ হয়নি। বেকারত্ব-কর্মহীণতার কারণে বহু যুবককে পাড়ি দিতে হচ্ছে ভিন রাজ্যে। বহু কিছু উন্নয়নের সমভাবনা থাকা স্বত্ত্বেও স্বাস্থ্য, শিক্ষা, যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো বিভিন্ন বিষয়ে পিছিয়ে রয়েছে এই এলাকা। সেই কারণে আগামী ২০১১ সালের ১৪ই জানুয়ারী ডুয়ার্স ব্যাপী জাতি -ধর্ম নির্বিশেষে ‘ডুয়ার্স ডে’ উদ্যাপন সমিতি । ডুয়ার্স ডে উদ্যাপন প্রস্তুতি সমিতির সম্পাদক ডক্টর পার্থপ্রতিম বলেন, আমরা চাই ডুয়ার্সের সকল ধর্ম-ভাষাভাষী, সকল সম্প্রদায়ের মানুষ ডুয়ার্সে শান্তি-প্রগতির বার্তা নিয়ে ওই দিনে সকলে মিলে উৎসবে মেতে উঠুক। চলুক আম-সমীক্ষা, স্ব-নির্ভরতা, শিক্ষা, প্রগতি উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা। নেওয়া হোক গঠনমূলক পরিকল্পনা। হোক তার আন্তরিক রূপায়ন। ডুয়ার্সে প্রাকৃতিক ও লোকসংস্কৃতির যে বিরাট সম্ভার রয়েছে তার পুনঃজীবন হোক। শুরু হোক ঐক্যবদ্ধ হয়ে সন্মিলিত পদক্ষেপে নতুন পথ চলা। দিনটিকে উদযাপন করার জন্য প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কাছে তিনি ওই দিনটি সুষ্ঠুভাবে পালনের জন্য আবেদন জানান।