হাতের কাছেই হোমিওপ্যাথি (সর্দি-জ্বর)

হাতের কাছেই হোমিওপ্যাথি (সর্দি-জ্বর)

হাতের কাছেই হোমিওপ্যাথি সর্দি-জ্বর; -ডাঃ পার্থপ্রতিম; ১৪ নভেম্বর ২০০৯; উত্তরবঙ্গ সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত
শীত আসছে। ঘাসের আগায় শিশিরবিন্দু। দিনের বেলায় গরম, সূর্যডোবার পর ঠান্ডা নেমে আসে। সর্দি-কাশি-নাক দিয়ে জল পড়া এসব উপসর্গের এখন বাড়বাড়ন্ত। প্রথমে নাক, মাথায় ও বুকে সর্দির লক্ষণ প্রকাশ পায়। জ্বর-জ্বরভাব, নাক দিয়ে জলের মতো সর্দি ঝরে। মুখ-চোখ ভার, গা-হাত-পা ব্যথা, হাঁচি, চোখ দিয়ে জল পড়া, মাথাধরা, মাথা-কামড়ানি, কাশি, স্বরভাঙা আরও কত কিছু। মূলত শিশুদের মধ্যেই এই অসুবিধাগুলি বেশি দেখা যায়। এইসব সমস্যার মোকাবিলার জন্য সহজেই হোমিওপ্যাথিক ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন। ওষুধের দাম ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অ্যালোপ্যাথিক ওষুধের তুলনায় অনেক কম। লক্ষণ অনুসারে ঠিকমতো প্রয়োগ করতে পারলে খুব তাড়াতাড়ি ফল পাওয়া যায়।
    এবার কয়েকটি হোমিও ওষুধের প্রয়োগ নিয়ে আলোচনা করা যাক।
    জ্বরের সঙ্গে ঠান্ডাবোধ, অস্থিরতা, ছটফটানি, জলপানের তৃষ্ণা ও হাঁচি এসব লক্ষণে অ্যাকোনাইট ন্যাপ ৩ এক্স বা ৩০ শক্তি চার-পাঁচ ঘন্টা পরপর খেলে রোগী বেশ আরাম পায়। বিশেষত রোগের প্রথম অবস্থায় বেশ ভালো কাজ করে।
    শরীর ঠান্ডা, জ্বর নেই কেবল জলের মতো তরল সর্দি নাক দিয়ে পড়তে থাকে। নাক চুলকায়। এই অসুবিধায় ক্যাম্ফার ১ এক্স বা মাদার চিনি বা বাতাসার সঙ্গে মিশিয়ে খেলে ম্যাজিকের মতো ফল পাবেন।
 

  চোখ-মুখ লাল, মাথাধরা, মাথার ভিতর দপদপ করে ব্যথা, গলা শুকিয়ে যাওয়া, ঘুমঘুম ভাব সঙ্গে জ্বর থাকুক বা না থাকুক বেলেডোনা ৩০ বা ২০০ এক-দু ডোজ খেলেই উপকার পাবেন। জ্বরের সঙ্গে কাশি, বুকে ব্যথা, মাথাভার ও মাথাধরা, প্রবল জলপিপাসা, কোষ্ঠবদ্ধতা, শুকনো-কঠিন মল, গা-হাত-পায়ে ব্যথা, কাশতে গেলে বুকে ব্যথা এইসব লক্ষণে ব্রায়োনিয়া ২০০ পোটেন্সি খেতে পারেন। অন্যতম লক্ষণ হল রোগী যখন চুপচাপ বসে বা শুয়ে থাকে তখন তেমন অসুবিধা হয় না, কিন্তু নড়াচড়া বা হাঁটাচলা করলেই রোগ লক্ষণগুলি বেড়ে যায়। রোগীর মধ্যে অস্থিরতা তৈরি হতে থাকে।
    ভরদুপুরে ও মাঝরাতে প্রবল জ্বর আসে সঙ্গে হাঁচি চলে, নাক দিয়ে জলের মতো গরম স্রাব বের হয়, নাক জ্বালা করে, রোগীর মনে  হয় তার নাকে যেন ঘা হয়েছে। রোগী কাপড় দিয়ে মুখ কান ঢেকেঢুকে শুতে ভালোবাসে। এই লক্ষণে আর্সেনিক অ্যাল্ব ২০০ শক্তি কয়েক ডোজ দিলে ভালো ফল পাবেন।

    মাথাভার, রাতে জ্বর বাড়ে, ঘন শ্লেষ্মা, কখনো কখনো কাশি, রোগীর মনে হয় তার মুখে যেন কিছু খাবার লেগে আছে, সে তার স্বাদ পায়। গন্ধের অনুভূতি কমে যায়। খাবারে অরুচি, কাশলে কফ ওঠে। এসব ক্ষেত্রে পালসেটিলা ৩০ বা ২০০ পোটেন্সি খাওয়া যেতে পারে।
    খুব ঘাম, মুখে দুর্গন্ধ, অপরিষ্কার জিভ, কাশিতে বা নাক দিয়ে হলদে রঙের শ্লেষ্মা বের হয়, মুখ বিস্বাদ বা মুখ তেতোভাব, বমি বা বমিভাব লক্ষণে মার্কসল ৩০ বা ২০০ খুবই ফলপ্রসূ। জ্বরের সঙ্গে গলাবসা, গলার ভিতর সর্দি ঘর্ঘর করা বিশেষত যে সব শিশুরা সবসময় প্যানপ্যান করে, খিটখিটে স্বভাবের তাদের ক্ষেত্রে ক্যামোমিলা ২০০ এক-দু মাত্রা ভালো ফল দেয়।
    জ্বর, নাক বন্ধ, সবসময় শীত-শীতভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য, মাথাধরা। বাইরের খোলা হাওয়ায় রোগী বেশ আরাম পায়, ঘরে ঢুকলে বদ্ধ জায়গায় নাক বন্ধ হয়ে আসে। এই লক্ষণে নাক্সভমিকা ৩০ বা ২০০ খেতে পারেন।

Join our mailing list Never miss an update