কত রকমের মেঘ দেখি ঘরে বসে; -ডাঃ পার্থপ্রতিম ও সুকন্যা আচার্য ; ২৪ জুলাই ১৯৯৫, পৃষ্ঠা- তিন; দৈনিক বসুমতি পত্রিকায় প্রকাশিত
অলকাপুরীপতি কুবের কর্তব্যকর্মে অবহেলার জন্য তাঁর এক ভৃত্য যক্ষকে সূদূর রামগিরি আশ্রমে নির্বাসিত করেন। দীর্ঘদিন স্ত্রীসঙ্গ বঞ্চিত হয়ে উন্মনা হয়ে উঠল যক্ষের মন। যক্ষকান্তার সংবাদলাভে ব্যাকুল হয়ে মেঘের কাছে আকুল অনুরোধ জানালেন যক্ষ। আর মেঘ ভেসে চলল অলকাপুরীর অভিমুখে। মহাকবি কালিদাসের বর্ণনায় যাই বর্ণিত হোক না কেন মেঘ সুনীল আকাশের বুকে ভেসে বেড়ায় পত্নী বিরহীর অনুরোধে নয়, প্রাকৃতিক নিয়ামানুসারেই। মেঘের বিজ্ঞানভিত্তিক গল্প তুলে ধরেছেন পা র্থ প্র তি ম ও সু ক ন্যা প্র তি ম।
দূর আকাশের বুকে যে ছোট ছোট জলকণা বা তুষারকণা ভেসে বেড়ায় মেঘ বলতে তাকেই বুঝি আমরা। আমরা এও জানি সূর্যের উষ্ণ কিরণে ভূপৃষ্ঠ থেকে জল বাষ্পে পরিণত হয়ে উপরে উঠে। কারণ, জলীয় বাষ্প বায়ুর তুলনায় বেশ হাল্কা। এইভাবে হালকা বাষ্প ওপরে উঠতে উঠতে ক্রমে শীতল হতে থাকে। তারপর একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় পৌঁছে গেলেই তা ঠান্ডা হয়ে জলকণায় পরিণত হয়, বিজ্ঞানীরা সেই নির্দিষ্ট তাপমাত্রাকে শিশিরাঙ্ক (Dew point) নাম দিয়েছেন। সাধারণভাবে দেখা যায় বায়ুতে ভেসে থাকা অসংখ্য ধূলিকণাকে আশ্রয় করে জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়। অর্থাৎ জলকণায় পরিণত হয়। এজন্য বায়ুর ভাসমান ধূলিকণাকে ঘনীভবনের ভরকেন্দ্র (Condensatn Nuclei) বলে।
বহু প্রাচীন কাল থেকে মানুষ মেঘের রকমফের লক্ষ্য করছিল। তারা মেঘের বিভিন্ন শ্রেণিবিন্যাসে সচেষ্ট ছিল। ১৮০৩ সালে ইংরেজ রসায়নবিদ লিউক হাওয়ার্ড (Luke Howard) বিশেষ তৎপর হন। তিনি আকৃতি ও চেহরা অনুসারে মেঘকে চারভাগে ভাগ করলেন। যার নাম করণ হল ল্যাটিন ভাষাতে। (১) সিরাস (Cirrus) বা অলক মেঘ। এ মেঘ দেখতে পালক বা আঁশের মত। (২) স্ট্রাটাস (Stratus) বা স্তর মেঘ। স্তরে স্তরে সাজান থাকে। (৩) কিউমুলাস (Cumulus) বা স্তূপ মেঘ। (৪) নিম্বাস (Nimbus) বা ঝঞ্ঝা মেঘ খুব বৃষ্টি-ঝড়-ঝঞ্ঝার জন্য এ মেঘ দায়ী।
এ ছাড়াও উচ্চতা অনুসারে অর্থাৎ ভূপৃষ্ঠ থেকে মেঘ কত উঁচুতে আছে সেই অনুয়ায়ী মেঘকে ভাগ করা হয়েছিল। যেমন উঁচু মেঘ বা High Cloud, মাঝারি মেঘ বা Medium Cloud, নিচু মেঘ বা Low Cloud.
১৮৯৪ সালে আন্তর্জাতিক আবহাওয়া সমিতি (International Meteorological Committee) আকার উচ্চতা অনুসারে মেঘকে দশটি ভাগে ভাগ করেন। এই সব বিভিন্ন মেঘের মধ্যে কোনটি খাঁটি বা Pure অবস্থায় আলাদাভাবে বিশেষ দেখা যায় না। অধিকাংশ সময় একটির সঙ্গে আরেকটি বা অনেকগুলি একসঙ্গে মিশে আকাশে ভেসে বেড়ায়। এখানে আর একটি কথা মাথায় রাখতে হবে, উঁচু আকাশে মেঘের আকৃতি, রঙ, চেহরা সব সময় পাল্টাতে থাকে, এরকম মেঘ যে-কোন সময় অন্যরকম মেঘে পরিবর্তিত হয়। এ জন্য আকাশে যে কোন শ্রেণীর মেঘকে আলাদাভাবে দেখা যায় না।
পরবর্তীকালে আন্তর্জাতিক মেঘ সংহিতায় (International Cloud Code) ২৮ রকম মেঘের কথা বলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সাধারণ উচ্চতা বোঝানোর জন্য অল্টো (Alto) খুব বেশি উচ্চতার জন্য সিরো (Siro) আর যে মেঘ বৃষ্টি আনে তার নামের আগে নিম্বো (Nimbo) শব্দ যোগ করা হয়েছে। যে সকল মেঘ আমাদের অতি পরিচিত অর্থাৎ যে মেঘগুলিকে সাধারণভাবে আমরা আমাদের দেশের আকাশে দেখে থাকি তাদের নিয়ে আলোচনা করা যাক।
উঁচু আকাশের মেঘ : যারা সাধারণত সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে ৬০০০ মিটার থেকে ২০০০ মিটারের মধ্যে থাকে । যেমন-সিরাস (Cirrus), সিরোকিউমুলাস (Cirro-Cumulus) সিরোস্ট্রাটাস (Cirro-Stratus).
সিরাস বা অলক মেঘ: নীল আকাশে হালকা পেঁজা তুলো বা পালকের মত ভেসে বেড়ায়। এর রং সাধারণভাবে সাদা। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বরফ বা তুষার কণা দিয়ে এই মেঘ তৈরি হয়। আবহাওয়া যখন ভাল থাকে অর্থাৎ আলো ঝলমল দিনে এগুলিকে দেখা যায়। এই মেঘ থেকে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা নেই।
সিরোকিউমুলাস বা অলক স্তূপ মেঘ: কিছুটা গোলাকার হালকা সাদা ঢেউয়ের মতন দূর আকাশে ভেসে থাকে। দেখতে খুবই সুন্দর। শরৎ আকাশে অলকস্তূপ মেঘ অনেক কবির কাব্যের প্রেরণা। খুব সূক্ষ্ম তুষার কণা দিয়ে এই মেঘ তৈরি। এই মেঘও পরিষ্কার আবহাওয়ার কথাই বলে।
সিরো-স্ট্রাটাস বা অলক স্তর মেঘ : একেবারে দুধের মত সাদা। দূর আকাশের অনেক উঁচুতে এ মেঘ দেখে মনে হয় প্রকৃতি যেন সাদা চাদর গগনপথে মেলে দিয়েছে। কয়েক পশলা বৃষ্টির পর দূর আকাশে যে সাতরঙা ইন্দ্রধনু রঙের পাখা মেলে তা আর কিছুই নয় অলকস্তর মেঘের ওপর সূর্যরাশ্মির পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিসরণ মাত্র।
মাঝারি আকাশের মেঘ : ২১০০ মিটার থেকে ৬০০০ মিটারের মধ্যে থাকে। অল্টোকিউমুলাস (Alto-cumulus), অল্টো স্ট্রাটাস (Alto-stratus), এই মাঝারি আকাশের মেঘ।
অল্টো কিউমুলাস বা স্তূপ মেঘ : দেখতে গোল পাকানো পশমের মত। তবে কোন কোন সময় একে ছেঁড়া ছেঁড়া সূক্ষ্ম মসৃণভাবেও দেখা যায়। হঠাৎ দেখে মনে হতে পারে কোন পাগলা ভোলা বালক আকাশজুড়ে পশম ছিটিয়েছে। এই মেঘে সাধারণত বৃষ্টি হয় না। তবে বেশি মাত্রায় জমলে হালকা ধরণের বৃষ্টি হতে পারে।
অল্টো স্ট্রাটাস বা স্তর মেঘ : ধূসর চাদরের মত সারা আকাশ জুড়ে ভেসে থাকে। এর মধ্যে দিয়ে সূর্যকে দেখলে মনে হয় যেন সূর্য একটি স্বল্প আলোর বাতি। ধূসর ছাড়াও কোন কোন সময় এ মেঘ নীলাভ হয়ে থাকে। এ মেঘ থেকে বিরাট অঞ্চল জুড়ে অনেকক্ষণ বৃষ্টি হয়।
নীচু আকাশে মেঘ : অর্থাৎ যারা ২১০০ মিটারের নিচে অবস্থান করে। যেমন স্ট্রাটো-কিউমুলাস (Strato-cumulus), স্ট্রাটাস (Stratus), নিম্বাস (Nimbus) ও নিম্বো স্ট্রাটাস (Nimbo- status)।
স্ট্রাটো কিউমুলাস : মাঝ আকাশে অল্ট্রো কিউমুলাস মেঘ আরোও ভারি ও গাঢ় রঙরূপ নিয়ে নিচে নেমে এসে এই নামের মেঘে পরিণত হয়। এর রং গাঢ় ধূসর থেকে কালো পর্যন্ত হতে পারে। গঙ্গার দু’ধারে সমভূমি অঞ্চলে শীতকালে কোন কোন সময় এই মেঘ আকাশে ঢেকে ফেলে। সেই সময় এই মেঘ থেকে প্রচুর বৃষ্টি হয়।
স্ট্রাটাস মেঘ দেখতে ঘন কুয়াশার মত ধূসর রঙের। স্তরে স্তরে সাজান এই মেঘ সারা আকাশ ঢেকে ফেলে। এই মেঘের উচ্চতা খুব বেশি নয়। দার্জিলিং, মুসৌরি প্রভৃতি শৈল শহরের উঁচু বাড়ির জানলা দিয়ে এই মেঘ ঘরে ঢুকে যায়। এই মেঘকে নিয়ে সবচেয়ে বিপদে পড়ে বিমান চালক আর যাদের পাহাড়ে চড়ার শখ। এই মেঘ থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হয়।
নিম্বাস বা বাদল মেঘের কোন নির্দিষ্ট আকার নেই। কালো বা ধূসর মেঘ বর্ষায় সারা আকাশ ঢেকে ফেলে, এই মেঘ থেকে ঝমঝমিয়ে প্রচুর বৃষ্টি হয়। সেই জন্যই এর নাম বাদল মেঘ।
নিম্বো স্ট্রাটাস মেঘ ঘন গাঢ় ধূসর কালো রঙ্গের, কিছুটা স্তরে স্তরে সাজান থাকে। আকাশে এ মেঘ থাকলে বেশ ভয়ের ব্যাপার। বিশেষত সাইক্লোনের সময় এই মেঘের দেখা মেলে। বৃষ্টি হয় এবং ক্ষয়ক্ষতি হয়।
কিছু কিছু মেঘ বেশ নিচু আকাশ থেকে অনেক উঁচু পর্যন্ত বেশ খাড়াভাবে থাকে। এরা গাছের মত বা চাদরের মত নিচ থেকে ওপর পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে, এদের উপস্থিতি সাধারণত ১৫০০ মিটার থেকে ৭০০০ মিঃ পর্যন্ত হয়। যেমন কিউমুলাস (Cumulus), কিউমুলোনিম্বাস (Cumulo Nimbus)।
কিউমুলাস দেখতে অনেকটা গম্বুজের মত বেশ নিচু থেকে শুরু হলেও এর মাথা অনেক ওপরে থাকে। নিচের ভাগ ধূসর বা কালো রঙ্গের, ওপরের দিক সাদা। এর ওপর সূর্যের আলো পড়লে চকচকে দেখায়। এ মেঘ থেকে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।
কিউমুলো নিম্বাস বিশাল পাহাড়ের মত দেখতে হয়। এই বিশাল আকৃতির মেঘের মাঝখান ও তলদেশ থাকে কালো, ধারের অংশ সাদা। কিউমুলাস থেকে কিউমুলো নিম্বাস মেঘের সৃষ্টি হতে পারে। ঘামঝরা বৈশাখীর পড়ন্ত বেলায় এই মেঘই নিয়ে আসে কালবৈশাখী ঝড়।
এই সব বিভিন্ন শ্রেণীর মেঘের মধ্যে কোন একটি মেঘকেও পৃথক অবস্থায় বিশেষ দেখা যায় না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে একটি মেঘের সঙ্গে আরেকটি বা অনেকগুলো মেঘ একসঙ্গে মিশে ভেসে বেড়ায়। সবচেয়ে মজার ব্যপার হল উঁচু আকাশে ৬০০০ মিটার এর ওপরে থাকা মেঘগুলি অনবরত নিজেদের রং চেহরা আকৃতি বাদলাতে থাকে। যারা আবহাওয়ার পূর্বাভাষ দিতে ব্যস্ত তাঁদের কাছে এক মহাজটিল ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। মেঘের ধর্ম-অবস্থান-গঠন জানবার জন্য মেঘের ওপর উজ্জ্বল আলোকরশ্মি ফেলে সেই প্রতিফলিত আলোক বিশ্লেষণ করে আবহাওয়াবিদরা জানার চেষ্টা করেন। এই কাজে সিলোমিটার (Ceilo meter) যন্ত্রটি বহু প্রাচীন কাল থেকে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু এই যন্ত্রের আলোক রশ্মি মেঘের স্তরকে ভেদ করতে পারে না। তাই বেশি উঁচুতে থাকা মেঘের সম্বন্ধে সিলোমিটারের সাহায্যে বিশেষ তথ্য পাওয়া অসম্ভব হয়ে দাড়ায়। লেসার (Laser) আবিষ্কারের পর এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটে। লেসারের তরঙ্গ দৈর্ঘ্য একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে থাকে এবং লেসার রশ্মি বিশেষ সুসংবদ্ধ (Coherent)। তাছাড়াও লেসার রশ্মির ভেদন ক্ষমতা (Penetrting power) সাধারণ আলোকরশ্মির চেয়ে অনেক বেশি। এই কারণে সিলোমিটারের ব্যবহার কমে আসে। রেডার (Reder) বা রেডিও ডিটেকশন এন্ড রেঞ্জিং-এর সাহায্যে যে ভাবে দূর আকাশে থাকা শত্রু পক্ষের বিমানের অস্তিত্ব ভূমি নিরীক্ষণ কেন্দ্র ধরা পড়ে, সেভাবেই লেসার রশ্মিকে কাজে লাগিয়ে লাইট ডিটেশন এন্ড রেঞ্জিং বা লিডারের সাহায্যে মেঘের উচ্চতা, ঘনত্ব, তাপমাত্রা, দূরত্ব প্রভৃতি তথ্য পাওয়া যায়। এ ছাড়াও বাতাসের জলীয় বাষ্পের পরিমাণ যা খালি চোখে বোঝা সম্ভব নয় তাও লিডারে জানা যায়।
রেডার ঝড় ও তুফানের অভিমুখ ও গতি নির্ণয়ের ক্ষেত্রে বহু যুগ ধরে ব্যবহৃত হচ্ছে। আগে আমাদের বিশ্বাস ছিল মেঘের মধ্যে বরফের স্ফটিকের উপস্থিতির ফলে বৃষ্টি ফোঁটা মাটির বুকে নেমে আসে। কিন্তু আবহাওয়াবিদ্যায় রেডারের প্রচলনের পর জানা যায় যে বরফের কেলাশ নয়, বায়ুমন্ডলে ধূলিকণার উপস্থিতিই জলীয় বাষ্পকে মেঘে পরিণত করে। মেঘের নীচে নেমে আসার কারণ হিসাবে নতুন Precipitation তথ্যের প্রচলন হয়।
মহাকাশের কৃত্রিম উপগ্রহ আবহাওয়াবিদ্যার ব্যবহার হওয়ার পর মেঘের অবস্থান সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের বিষয়ে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। পৃথিবীর চারপাশে নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘুরতে থাকা কৃত্রিম উপগ্রহ বা স্যাটালাইট মেঘের ছবি তুলে পাঠিয়ে দিচ্ছে পৃথিবীর বিভিন্ন আবহাওয়া কেন্দ্রে। তাই আমরা আমাদের ঘরে রাখা ছোট বৈদ্যুতিক বাক্সটির দিকে তাকিয়ে দেখতে পাচ্ছি আমাদের দেশের বিভিন্ন প্রান্তরের মেঘের ঘনঘটা।
পলাশ দাস, পদার্থবিদ্যা বিভাগ, শিলিগুড়ি কলেজ।৩য় বর্ষ ২৬ জুলাই, বুধবার ১৯৯৫ দৈনিক বসুমতি পত্রিকায় প্রকাশিত
কত রকমের মেঘ দেখি ঘরে বসে
গত ২৪ জুলাই’৯৫ তারিখে জানা -অজানা বিভাগে পার্থপ্রতিম ও সুকন্যাপ্রতিম-এর ‘কত রকমের মেঘ দেখি ঘরে বসে’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি পড়লাম। ভারী চমৎকার হয়েছে। সময়োপযোগী হয়েছেও বটে। বিনয় মূখার্জির বর্ষার মেঘের ছবিটি প্রতিবেদনটিকে আরও সরস করে তুলেছে। কিন্তু প্রতিবেদনে একটি ছোট্ট ভুল রয়েছে। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে যে, উঁচু আকাশের মেঘ সাধারণত সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে ৬০০০ মিটার থেকে ২০০০ মিটারের মধ্যে থাকে। কিন্তু তা নয়, সঠিক তথ্যটি হল ৬০০০ মিঃ থেকে প্রায় ১২,০০০ মিটার। এ ছাড়া সিরাস এবং সিরোকিউমুলাস মেঘ বর্ণনা করার সময় দুটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উল্লেখ করা হয় নি। সিরাস মেঘ আকাশে পূর্ণ থাকলেও এই মেঘের মধ্য দিয়ে সূর্য ও চাঁদকে দেখা যায়। তাই এই প্রকার মেঘকে অশ্বিনীপুচ্ছ (Mare’s tails) বলা হয। সিরোকিউমুলাস মেঘ যখন সমস্ত আকাশ ঢেকে ফেলে তখন তাকে Makeral বলে। ম্যাকরেল বা ম্যাকারেল নামক এক প্রকার সামুদ্রিক মাছের গায়ে গোলাকার গুচ্ছের মত দাগ কাটা থাকে। সিরোকিউমুলাস মেঘের সঙ্গে এই মাছের মিল আছে বলে এই মেঘ আকাশেকে ঢেকে ফেললে তাকে ম্যাকারেল আকাশ বলে।
পলাশ দাস, পদার্থবিদ্যা বিভাগ, শিলিগুড়ি কলেজ।