কুকুরের সঙ্গে খেলুন - ডাঃ পার্থপ্রতিম; উত্তরবঙ্গ সংবাদ; ৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৯, তিন পাতা
কুকুর পুষুন। কুকুরের চোখে চোখ রেখে ওর সঙ্গে খেলাধুলা করুন। স্ট্রেস দূর হবে, অবসাদ থেকে মুক্তি মিলবে, অন্য মানুষের প্রতি আস্থা, বিশ্বাস বাড়বে। কুকুরের সঙ্গে খেলাধুলা করলে যেটা হয়, শরীরের মধ্যে প্রচুর অক্সিটোসিন নামক হরমোনের নিঃসরণ ঘটে। যা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মধ্যে আদর-আশ্লেষ তৈরি করে। মায়েরা যেভাবে শিশুদের ভালোবাসেন, সেরকম আবেগ-আশ্লেষ জাগে শরীরে। এজন্য অক্সিটোসিনকে আশ্লেষি-রাসায়নিক তথা লাভ ড্রাগ বলা হয়। জাপানের আজুবা ইউনিভার্সিটির দুই জীববিজ্ঞানী মিহো নাগাসাওয়া এবং তাকেসুমি কিকুসুই তাঁদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে জানিয়েছেন, কুকুরের সঙ্গে আড়াই মিনিট চোখে চোখ এবং পিঠে হাত রেখে খেলাধুলা করলে অক্সিটোসিন নির্গমনের হার ২০ শতাংশ বেড়ে যায়।
কুকুরের সঙ্গে সরাসরি চোখ না রাখলে অক্সিটোসিন নির্গমনের হার খানিকটা কমে। নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ডঃ আলরিকে রিস্মেলে জানিয়েছেন, শরীরে অক্সিটোসিন হরমোনের আধিক্য ঘটলে মানুষের মুখ মনে রাখা সহজ হয়। যাঁদের শরীরে অক্সিটোসিন হরমোনের ক্ষরণ বেশি ঘটে, তাঁরা বেশি সামাজিক হন। নাকে অক্সিটোসিন হরমোন স্প্রে করে দেখা গেছে, আগে কোথাও দেখেছি তাঁকে, সেই মানুষটিকে সহজেই শনাক্ত করা যাচ্ছে। অটিস্টিক শিশুদের সামাজিক সুগম্যতায় অক্সিটোসিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। ইউনিভার্সিটি অফ জুরিখের ডাঃ পিটার ক্লেভার লিখেছেন, জার্নাল অফ নিউরোসায়েন্সে। সন্তানের জন্মদান, স্তন্যদানের সময় মায়ের শরীরে প্রচুর অক্সিটোসিন নির্গমন ঘটে।
মাছের স্মৃতিশক্তি
এতদিন বলা হত মাছেদের স্মৃতিশক্তি মাত্র তিন সেকেন্ডের, এখন দেখা যাচ্ছে তা ঠিক নয়। প্রমাণ মিলেছে, মাছেরা পাঁচ মাস পর্যন্ত মনে রাখতে পারে। ইজরায়েলের হাফিয়া থেকে টেকনিয়ন ইনস্টিউট অফ টেকনোলজির বিজ্ঞানীরা জলের নীচে লাউডস্পিকারের মাধ্যমে সেইসব শব্দ প্রক্ষেপণ করে দেখেছেন, কয়েক মাস আগে যে ধরনের কণ্ঠস্বর শুনে মাছেরা খাবার পেতে ছুটে আসত, সেইসব শব্দ পাওয়ামাত্রই ফের ছুটে আসতে শুরু করেছে। হ্যাঁ প্রতিবারে শব্দ বাজানোমাত্রই। উল্লেখ্য জলতলে খাঁচার মধ্যে মাছ চাষ করায় মৎস্যকুল নিঃসৃত নাইট্রোজেন ঘনীভূত হয়ে উপকূল দূষণ ঘটে, মাছেদের খাবার দাবারের জন্যও বেশি খরচ হয়। মাছেদের স্মৃতিশক্তি পাঁচ মাসের প্রমাণিত হওয়ায় খাঁচার আবদ্ধ না রেখেই মৎস্যচাষ করা যাবে, খাবার দাবারের খরচ কম পড়বে, কেননা জলতলে স্বাধীনভাবে ঘুরে প্রাকৃতিক খাবার জোগাড় করতে পারবে ওরা। পরিবেশ দূষণও ঘটবে না। যখন বড়ো হয়ে যাবে, মাছ জলে খাঁচামুক্ত করে ছাড়ার আগে যে শব্দ প্রক্ষেপণ করে ওদের খেতে ডাকা হত , সেভাবেই ডেকে জড়ো করা হবে ওদের তুলে আনতে, খাবারের পাতে।
কম ঘুম হলেই
রাতের ঘুম যদি ৭ ঘন্টার একটুও কম হয়, ঠান্ডার ভাইরাস আক্রমণ চালাবে। যাঁরা আট ঘন্টা বা বেশি ঘুমোন তাঁদের ঠান্ডায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। ৭ ঘন্টার কম ঘুমোন যাঁরা, তাঁদের কোল্ড ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা, পুরো ৭ ঘন্টা নিরূপদ্রব ঘুমোন যাঁরা, তাঁদের তুলনায় তিন গুণ। জার্নাল আর্কাইভস অফ ইন্টারনাল মেডিসিন- এ জানানো হয়েছে। শোবার পর যাঁদের এ পাশ ও পাশ করে ঘুম ডেকে আনতেই ২৫ মিনিট চলে যায়, তাঁদের ঘুম ভালো হয় না। আর ঘুম ভালো হয় না বলে প্রতিরোধী শক্তি দুর্বল হয়ে ঠান্ডার ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা পাঁচ গুণ বেড়ে যায়। ঠান্ডা লেগে হাঁচি হয়, নাক দিয়ে জল ঝরে, শিকনি সামলাবার জন্য নাক টানা এরকম অবস্থা হয় সহসাই।