দাওয়াই নিদানপত্র দিলেন ২ - ডাঃ পার্থপ্রতিম; উত্তরবঙ্গ সংবাদ ১৩ মে ২০০৬, শনিবাসর
বয়স ২৭। মৃগী রোগীদের যেরকম হয়, অবিকল সেরকম মূর্চ্ছাক্রান্ত হই। আগে কখনো হয়নি, তাই কী কারণে এমন হল, বুঝতে পারছি না। বড়ো উদ্বেগে রয়েছি।
এ বয়সে এরকম হওয়াটা অস্বাভাবিকই। একজন স্নায়ুবিদের কাছে যেতে হবে। যিনি ইলেকট্রো-এনসিফ্যালোগ্রাম (ই ই জি) করানোর পাশাপাশি ব্রেনের সিটি স্ক্যান (কনট্রাস্ট সহ) করাতে বলবেন।
তারপরই বোঝা যাবে কারণ কী। আপাতত একদিন অন্তর অন্তর সকালে ল্যাকেসিস ২০০ খেয়ে যান। পাশাপাশি কিউপ্রাম মেটালিকাম সিক্স দিনে দুবার করে খান। রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত দুই ওষুধই চলুক। রিপোর্ট পাওয়ার পর কোনো ভালো হোমিওপ্যাথের কাছে যান।
আমার বয়স ৩৮। হাঁটুতে ব্যাথা, অস্থিসন্ধিতে এই ব্যাথা সবসময়ই থাকে।
মল্লিকা নন্দী
দিনে দুবার সিমফাইটাম টু হান্ড্রেড এবং আর্নিকা মনটানা টু হান্ড্রেড টানা দু-মাস খেয়ে যান।
বয়স ৪৫। মাঝে মাঝে হাত দুটো কেমন কাঁপতে থাকে।
বর্ণালী মুখার্জি
মনে হচ্ছে, নিউরাইটিস-এ ভুগছেন। নার্ভের প্রবলেম থেকে হচ্ছে। স্নায়ুর এই সমস্যা দূর করতে হাইপেরিকাম টু হান্ড্রেড দিনে দুটো করে টানা তিন মাস খেয়ে যান। ডায়াবেটিস শনাক্তকরণের পরীক্ষা করিয়ে নিন, এখনই।
মাথায়, মুখে, গলায়, ভাঁজে ভাঁজে ফোড়া, খোসপাঁচড়া, চুলকানি...আর পারছি না। বয়স ২৯। গৃহবধু। আগে যে বাড়িতে ছিলাম, সেই বাড়ি ছেড়ে নতুন এক বাড়িতে এসেছি। আসা থেকেই এসব হচ্ছে।
অ্যালার্জি বা ছত্রাকঘটিত সংক্রমণের কারণে এসব হতে পারে। দিনে দুবার করে অ্যান্টিমোনিয়াম ক্রুডাম সিক্স খান। দিনে একবার করে খান আর্সেনিকাম অ্যালবাম টু হান্ড্রেড।
আমার মায়ের বয়স ৪৯। ডান হাতের ব্যাথায় কষ্ট পাচ্ছেন পাঁচ বছর ধরে। কনুইয়ের নিচের দিকটায় দিকটাই হঠাৎ করে প্রচন্ড ব্যাথা শুরু হয়ে যায়। আবার থেমেও যায়। অস্থি বিশেষজ্ঞকে দেখিয়েছিলাম, উনি জানিয়েছেন, এই ধরনের রোগের নাম কারপাল টানেল সিনড্রাম।
কবজির একটি প্রধান স্নায়ু সংকুচিত হওয়াতেই এরকম হয়েছে। কড়ে আঙুল বাদে করতল এবং বাকি আঙুলগুলির মধ্যে অনুভুতি তথা সংবেদন প্রবাহিত করাই এই স্নায়ুর কাজ।
অমুক ওষুধ দিলেই এই সমস্যা দূর হয়ে যাবে। এমন ওষুধ অ্যালোপ্যাথিতে নেই। সংশ্লিষ্ট এলাকায় স্টেরয়েড (ইঞ্জেকশন) দিয়ে সমস্যা কাটিয়ে ওঠার তৎপরতা চালানো হয়। সবসময় তা সফল হয় না । অস্ত্রোপচার করে ব্যথামুক্ত করা হয়। হোমিওপ্যাথি-তে ওষুধ আছে। অস্ত্রোপাচারের ধকল ছাড়াই রোগটিকে সারিয়ে তোলা যায়। এইসব ওষুধের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। আপনার মাকে সিমফাইটাম টু হান্ড্রেড এবং হাইপেরিকাম টু হাড্রেড, প্রথমটি একটি খাওয়ার তিন ঘন্টা বাদে দ্বিতীয়টি, তিন ঘন্টা বাদে ফের প্রথমটি, তিন ঘন্টা বাদে ফের দ্বিতীয়টি এরকম চালিয়ে যেতে হবে, যতক্ষণ না ব্যাথার উপশম হচ্ছে। ব্যথা কমে আসলে রোগটি থেকে পুরোপুরি মুক্তি না ঘটা পর্যন্ত প্রথম এবং দ্বিতীয়, দুটি ওষুধের, প্রত্যেকটির একটি করে দিনে দুবার খেয়ে যেতে হবে।