মাটির পাত্রে বিভিন্ন শাকসবজি ও খাবার সংরক্ষণ

মাটির পাত্রে বিভিন্ন শাকসবজি ও খাবার সংরক্ষণ

মাটির পাত্রে বিভিন্ন শাকসবজি ও খাবার সংরক্ষণ; ডাঃ পার্থপ্রতিম;  ১৪ মার্চ ১৯৯৫; পৃষ্ঠা- তিন; দৈনিক বসুমতী পত্রিকায়  প্রকাশিত

গ্রামাঞ্চলে বিভিন্ন খাদ্যবস্তু সংরক্ষণ করা একটি সমস্যা। শীতল পাত্র বা 'তাজা'-র মধ্যে রাখা ফল, শাকসবজি প্রায় এক সপ্তাহ এবং রান্না করা খাবার ও দুধ প্রায় তিনদিন পর্যন্ত ভাল থাকে।
'তাজা' আসলে দু’দেওয়ালের মাটির পাত্র। দেওয়াল দু’টির মাঝখানের ফাঁপা জায়গা জল দিয়ে ভর্তি থাকে। মাটির পাত্রের গায়ে যে ছোট ছোট অসংখ্য ছিদ্র আছে, তা দিয়ে সবসময় জল বাইরে বেরিয়ে আসে ও বাষ্পে পরিণত হয়ে উবে যায়। জল বাষ্প হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় লীনতাপ পাত্রের দেওয়াল থেকে সংগ্রহ করে। এর ফলে ধীরে ধীরে পাত্রের ভেতরের তাপমাত্রা বাইরের পরিবেশের তাপমাত্রা থেকে অনেক কমে যায়। এই কারণে কাঁসা বা পিতলের কলসী থেকে মাটির কলসীর জল বেশি ঠান্ডা হয়।

মাটির পাত্র তৈরির পদ্ধতি : রেখাচিত্রের মত প্রথমে ২০ ইঞ্চি ও ১৪ ইঞ্চি ব্যাসের দু’টি টবের মত পাত্র তৈরি করা হয়। এর পর বড় পাত্রের মধ্যে ছোট পাত্রটিকে এমনভাবে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়, যাতে পাত্র দু’টির মধ্যে যথেষ্ট ফাঁক থাকে। এর পর উপর দিকে পাত্র দু’টিকে মাটি দিয়ে জুড়ে দেওয়া হয়। পাত্রে জল ঢালার জন্য ‘জলছিদ্র’ ও অতিরিক্ত জল বেরিয়ে যাবার পথ থাকে। বায়ু চলাচলের জন্য শীতলপাত্রের ঢাকনায় কয়েকটি ছিদ্র রাখা হয়।
রক্ষণাবেক্ষণ : (১) পাত্রের ভেতরের ও বাইরের দেওয়াল সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে। (২) পাত্রে পরিষ্কার জল ঢালতে হবে। (৩) সম্ভব হলে তিনদিন অন্তর জল বদলাতে হবে। (৪) মাসে অন্তত একদিন পাত্রটিকে রোদে ভালভাবে শুকিয়ে নিতে হবে।
সুবিধা : (১) গ্রামের কুমোরকে একটু বুঝিয়ে দিলেই তিনি এটি তৈরি করতে পারবেন। (২) তৈরির খরচ খুব কম। কারণ মাটি ছাড়া এর জন্য আর কিছুই লাগে না। (৩) এটি চালাতে বিদ্যুৎ বা অন্য কোন শক্তির প্রয়োজন নেই।

Join our mailing list Never miss an update