বসু বিজ্ঞান মন্দির; মঙ্গলবার ৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৫; পৃষ্ঠা- নয়; আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত
চারিদিকে সবুজের মখমল। চা-বাগিচার পরিচিত দৃশ্য। মাঝে বন্দর জনপদ বানারহাট। এখানেই আদর্শপল্লিতে মধুবন বিতান। গাছপালা, অর্কিড, ফুলেফলে ভরা বাগিচা, খড়ের ছাউনির কুটির- এক তপোবন মাধুর্য।
না, এ কোনও ট্যুরিস্ট রিসর্ট বা ধর্মাশ্রম নয়। বরং উল্টোটাই। এ এক বিজ্ঞান মন্দির। ব্যক্তিগত উদ্যোগে তিল তিল করে এ মন্দির গড়ে তুলেছেন ডাঃ পার্থপ্রতিম। ডুয়ার্সের চা বাগিচা অঞ্চলে বিজ্ঞান সচেতনতা প্রসার, কুসংস্কার দূরীকরণ, পরিবেশ সংরক্ষণ- এ সব নিয়ে তিনি নিরলস ভাবে কাজ করে চলেছেন দীর্ঘ দিন ধরে। গড়ে তুলেছেন বিজ্ঞান ক্লাব ‘ডুয়ার্স এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড অ্যাডভান্সমেন্ট রিভেলি’,সংক্ষেপে ‘ডিয়ার’।
এখানে আছে বিশালকার দূরবীক্ষণ যন্ত্র, কম্পিউটার। ডুয়ার্সে পাওয়া যায় এমন সব সরীসৃপ, কীটপতঙ্গের সংরক্ষিত দেহ। আছে কালার ট্রান্সপেরেন্সি প্রোজেক্টর, ম্যালেরিয়া, ডায়ারিয়া, মহাকাশ, পরিবেশ নিয়ে অসংখ্য স্লাইড। এসব বিষয় নিয়ে সুন্দর সব পোস্টার সেটও তৈরি করেছেন। বড়সড় লনের পাশে রয়েছে চারচালার খড়ের মঞ্চ। এলাকার ছেলেমেয়েরা এখানে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করে, মহড়া দেয়, শিশুদের মঞ্চভীতি কাটে। কখনও কখনও কীট-পতঙ্গ, পরিবেশ নিয়ে দেখানো হয় অডিয়োভিস্যুয়াল শো। আকাশবাণী শিলিগুড়ি কেন্দ্রের অধিকর্তা শ্রীপদ দাশ এই মঞ্চের নামকরণ করে গেছেন 'সেঁজুতি'।
ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা যাতে বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় খেলার ছলেই বুঝতে পারে সে জন্য রয়েছে নানা ধরনের খেলনা। বিদ্যুৎ, চৌম্বকত্ব থেকে জীববিদ্যা, সব কিছুই শেখা যাবে খেলতে খেলতে।
পার্থপ্রতিমবাবুর পারিবারিক পদবি বসু। তাই স্থানীয় বাসিন্দারা মজা করে মধুবনের নাম দিয়েছেন বানারহাটের 'বসু বিজ্ঞান মন্দির'। পার্থপ্রতিমের আয়ের মোটা অংশই চলে যায় সামাজিক এই কাজে।