অভিনব ডুয়ার্স দিবস রূপ নেবে মিলন মেলায়

অভিনব ডুয়ার্স দিবস রূপ নেবে মিলন মেলায়

ডুয়ার্স তখন অগ্নিগর্ভ। নিত্যদিন বন্ধ, হরতাল, অগ্নিসংযোগে নাভিশ্বাস উঠেছে গণজনতার। রাজনৈতিক নেতা- কর্তাব্যক্তিরা দূরে দাঁড়িয়ে অনাগত বিধানসভার নির্বাচনের পাটিগণিত নিয়ে ব্যস্ত। সেসময় কিছু সাংবাদিক ও শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে ডাক দিয়েছিল শান্তি ও মহামিলনের। 'ডুয়ার্স দিবস' পালনের। উদাত্ত কন্ঠে আওয়াজ উঠেছিল-
" সকল দ্বন্দ্ব ভেদাভেদ ভুলে
আমরা মিলতে পারি-
সাক্ষী রইবে 'ডুয়ার্স দিবস'
১৪ই জানুয়ারী। "
নিরাপদ স্থান জলপাইগুড়ি শহরে থাকা সত্ত্বেও; এক বয়স্ক তরুণ মানবতার নিশান নিয়ে সেদিন ছুটে এসেছিল ডুয়ার্সের উত্তপ্ত মাটিতে। হাত রেখেছিলেন ভয়ার্ত, দিশাহীণ মানুষের হাতে। গৃহে ফিরে আকুতভয় হাতে তুলে নিয়েছিল তার ‘সোনার কলম’ । ডুয়ার্স দিবস উদযাপন কমিটির পক্ষ থেকে আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধা স্বর্গীয় সমর চৌধুরীকে।

অভিনব ডুয়ার্স দিবস রূপ নেবে মিলন মেলায়; সমর চৌধুরী; ১০ ডিসেম্বর ২০১০; উত্তরবঙ্গ সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত
হেমন্ত এবং শীত এই সময়কালের মধ্যে জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রৌদ্র ঝলমলে আকাশে মাঝে মাঝেই দৃষ্টিগোচর হয় তুষারশুভ্র মনোলোভা কাঞ্চনজঙ্ঘা। এই কাঞ্চনজঙ্ঘাই যেন উত্তরের রাজমুকুট, ডুর্য়াসকেও হাতছানি দেয়, আর সমতলের ডুয়ার্স, হিমালয়ের পাদদেশে পাহাড় থেকে নেমে এসে বিরাজ করছে যেন আপন গরিমায়। চারিদিকে সবুজ। নানারকমের সবুজ। ঘন, হালকা, কখনও বা মিহি, কখনও ফ্যাকাশে। সবুজের এই বৈচিত্র্যই অনন্য আকর্ষণ গড়ে তুলেছে সারা ডুয়ার্সজুড়ে। মনে হয়, চারপাশ তাকিয়ে শুধু দেখি আর দেখি। এ দেখার যেন শেষ হয় না।
    পাহাড়, অরণ্য, নদ-নদী আর সেই সঙ্গে বিভিন্ন জাতি-উপজাতির বৈচিত্র্যময় জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতির সমন্বয়েই গড়ে ওঠা এই ডুয়ার্সে বেজে উঠুক এক ঐক্যতানের সুর- এমনই বাসনা নিয়ে বিপুল উৎসাহে মাঠে নেমে পড়েছেন একদল সমাজসেবী মানুষ। সমগ্র ডুয়ার্স জুড়ে আগামী জানুয়ারির ১৪ তারিখে সারাটা দিনব্যাপীই চলবে নানাবিধ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এক উৎসব যজ্ঞ। খোঁজ নিয়ে আরও কিছু তথ্য জানা গেল যা, থেকে বোঝা গেল উদ্যোক্তারা অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে কাজে নেমে পড়েছেন এবং ওদলাবাড়ি থেকে কুমারগ্রাম পর্যন্ত সমগ্র ডুয়ার্স জুড়েই চলবে সেদিন উৎসবের মেলা। ছোটো বড়ো গ্রামগঞ্জ চা বাগান শহরাঞ্চল সর্বত্রই পৃথকভাবে, আপন আপন ভাবনায়, সংস্কৃতিতে রসসিক্ত হয়ে মেতে উঠবেন তাঁরা আনন্দ উৎসবে।
    নিঃসন্দেহে বলা যায় এ এক অভিনব উৎসব। এ কোনও সরকারি উৎসব নয়। সরকারি অর্থানুকূল্যে এবং সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ উৎসবের কোন কিছুই হচ্ছে না। এমনকি কোনো একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের স্বার্থে অথবা অপর কোনো দলের বিরোধিতায় এ উৎসব কাজ করবে না। এসব সঙ্কীর্ণতা থেকে এ উৎসব থাকবে শতহাত দূরে। এই আন্তরিক উদ্যোগকে সমর্থন না করে পারা যায় না। রাজনীতি নিরপেক্ষতা এবং গোষ্ঠী নিরপেক্ষতা বজায় থাকার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা থাকবে এমনটা আশা এবং ভরসা করা যায় বলেই এ উৎসবকে অভিনব আখ্যা দেওয়া যেতেই পারে।
    রাজনৈতিক সঙ্কীর্ণতা এবং গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মানুষের স্বাভাবিক সারল্য এবং শান্তিপ্রিয়তার জগৎটাকে ভয়াল-ভয়ঙ্কর এবং রক্তাক্ত করে তুলছে। প্রতিনিয়ত সাধারণমানুষ একটা আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। এইসব অশান্তি থেকে দূরে কোনও এক শান্তির উপবনে কেউ যদি আপন মনে তার বাঁশিটা বাজায়, আর সেই মধুর সুর শুনে কিছু মানুষজন যদি এসে তার পাশে জড়ো হয় একে একে, আর মন দিয়ে সেই সুর শুনে আপ্লুত হয়, তবে বাঁশি বাদকের মনটা যেমন ওঠে ভরে সেই সঙ্গে শ্রোতারাও কিছুক্ষণের জন্যে হলেও শান্তির পরিবেশে কাটিয়ে আনন্দ পায় বইকি। মানুষ তো শান্তির পূজারি। অশান্তি থেকে দূরে থাকতে চায় সে। এত যে জিনিস পত্রের দাম বাড়ছে, এত যে সমস্যাজীর্ণ কঠিন জীবনযাত্রায় লড়াই করতে করতে দরিদ্র মানুষেরা অসহায়ের মতো হতাশায় দিন কাটাচ্ছে, তবুও শীতের রাতে প্রত্যন্ত চা বাগানগুলির গহ্বর থেকে ভেসে আসে মাদল ও ধামসার মনমাতানো সুর যা কানে এলই মনের মধ্যে নাচন লাগে। আজ থেকে দুশো বছর আগে যে ডুয়ার্স সুবিস্তৃত নিবিড় অরণ্যে ছিল পরিকীর্ণ, ছিল ম্যালেরিয়ার ডিপো, শিক্ষা সভ্যতা ও সংস্কৃতিতে ছিল পিছিয়ে পড়া প্রায়ান্ধকার একটি সমাজ, সেই ডুয়ার্স আজ ধীরে ধীরে আলোকিত হয়ে উঠেছে। কর্মচাঞ্চল্যে তার যেন নতুন প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়েছে আধুনিক জগতের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাবার দৌড়ে।
    সারা দেশে আয়তনের তুলনায় সবচেয়ে বেশি প্রকারের জনজাতি মানুষ বাস করে এই অঞ্চলে। নানা ধরনের জাতি-উপজাতি এবং বিভিন্ন ধরনের ভাষাভাষির মানুষ। তাদের নিজস্ব সমাজ, নিজস্ব সংস্কৃতি। পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য অংশে এমনটা নেই। জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া তিস্তানদীর পূর্বদিকে সঙ্কোশ নদী পর্যন্ত প্রায় ১৬০ কিমি দীর্ঘ এর বিস্তৃতি। পর্যটকরা আকৃষ্ট হন এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে। এমনই এক সুন্দর এবং মনোহারী ডুয়ার্স নানান কারণে আজ অশান্ত হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন স্বার্থের সংঘাত। রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক। এই সব সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে এক শ্রেণির মানুষ। অথচ সাধারণভাবে সমস্ত মানুষই শান্তিপ্রিয়। শান্তিই তাদের প্রত্যেকের কামনার বিষয়। সেই শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়েই এই উৎসবের আয়োজন।
এখানকার অধিবাসীদের মধ্যে নানাধরনের বিভিন্নতা রয়েছে। জাতিগত বৈষম্য, ধর্মীয় বৈষম্য, সামাজিক রীতিনীতিতে পার্থক্য, পার্থক্য সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে, শিক্ষায়, আচরণে এবং জীবিকায়। এখানে মেচ আছে, রাভা আছে, টোটো, লিম্বু, রাজবংশী, কোচ, ওরাওঁ, সাঁওতাল, মুন্ডা, বিহারী, বাঙালী, নেপালীসহ আরও নানান জাতি উপজাতি আছে। আছে মন্দির, মসজিদ, গির্জা, বৌদ্ধমন্দির, গুরুদ্বার। এত যে বিভিন্নতা তবু প্রতিটি মানুষ কিন্তু শান্তিকামী। সমস্তরকম বিভেদকে আপাতত শিকেয় তুলে রেখে একটি দিনের জন্যেও কি শান্তিপ্রিয় মানুষজন শুধুমাত্র প্রেম-প্রীতি-ভালোবাসার বার্তা নিয়ে একটি স্থানে উৎসবের আনন্দে সমবেতভাবে মেতে উঠতে পারে না? এই প্রশ্নের সমাধানেই ব্রতী হয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন মালবাজার থেকে সুদূর কুমারগ্রামদুয়ার পর্যন্ত উৎসাহী একদল মানুষ। যুবা থেকে বৃদ্ধ। শিক্ষক থেকে শ্রমজীবী। চা বাগানের শ্রমিক থেকে খেতে কাজ করা কৃষিজীবিও। বানারহাটের চিকিৎসক ডাঃ পার্থপ্রতিমের ডাকে সাড়া দিয়ে এগিয়ে এসেছেন ওদলাবাড়ির জীবন মৈত্র, মালের রাজু বাগচি থেকে কামাখ্যাগুড়ির দেবাশিস ভট্টাচার্য, কালচিনির লীলা ছেত্রীও। সঙ্গে আছেন চালসার রেমা গাঙ্গুলি, আলিপুরদুয়ারের বুলা গৌতম, বিন্নাগুড়ির বলরাম রায়, বীরপাড়ার অলোক মৈত্র, গয়েরকাটার সুব্রত রায়, ধূপগুড়ির ডঃ অমিতকুমার দে, ময়নাগুড়ির স্নেহাশিস চক্রবর্তী।

এ উৎসবে সরকার নেই, সরকারি কোনো অনুদানও নেই। নেই কোনো রাজনীতি। আছেন শুধু বিভিন্ন অঞ্চলের শান্তিকামী মানুষের দল। এ যেন এক মহামিলনের উৎসব। শান্তিপ্রতিষ্ঠাই যার লক্ষ্য। নীতি ও আদর্শগতভাবে পরস্পরবিরোধী সংগঠনগুলিও একমঞ্চে জড়ো হয়ে ১৪ জানুয়ারি ‘ডুর্য়াস ডে’-কে সাফল্যমন্ডিত করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছেন। আদিবাসী বিকাশ পরিষদ, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, পিপিপি, ডুর্য়াস মিল্লাতি উসলামিয়া, কামতাপুরি পিপলস পার্টি সহ অন্যান্য সংগঠন, অরাজনৈতিক গোষ্ঠী ও রাজনৈতিক দল। আশীবছরের বৃদ্ধ, বার্ধক্যকে উপেক্ষা করে আজীবন যিনি শ্রমিকদের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে চলেছেন সেই চিত্ত দে মহাশয়ও এসে দাঁড়িয়েছেন এই উৎসবকে সাফল্যমন্ডিত করার মন্ত্র নিয়ে। আছে ছাত্র, যুব, বিভিন্ন ক্লাব, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান, নাট্য দলগুলি।
এ উৎসবের বিশেষত্ব হল এটি উদবোধন করার জন্য কোনো নেতা-নেত্রীর আগমন ঘটবে না। কোনো ফিতে কাটাও নেই। কোনও একটি স্থানেও উৎসব কেন্দ্রীভূত থাকবে না। সারা ডুয়ার্স জুড়ে ছোটো বড়ো গ্রামে গঞ্জে, চা বাগানগুলিতে, প্রতিটি ক্লাবে, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে, মন্দিরে মসজিদে, গুরুদ্বারা, বৌদ্ধমন্দিরে, অফিস-কাছারি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আপন গৃহপ্রাঙ্গণ সর্বত্রই সন্ধ্যা ছয়টা থেকে সাতটা পর্যন্ত মোমবাতি, প্রদীপ বা বিজলিবাতি জ্বালাবে ওই এলাকার মানুষজন। এভাবেই আলোকমালায় সজ্জিত হবে সমগ্র ডুয়ার্স। সারাটা দিন ধরেই চলবে অনুষ্ঠান, যে অঞ্চল যেমনভাবে পারে। আঞ্চলিকভাবেই স্থানীয় সংস্কৃতি প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে নিজেদের ঘরোয়া মঞ্চে। রবীন্দ্রনাথের সেই রাখিবন্ধন, কবির এই সার্ধশত জন্মবর্ষে সকালে রাখিবন্ধন দিয়েই শুভসূচনা হবে এই মহামিলন উৎসবের। একে অপরকে রাখি পরাবেন আলিঙ্গন করবেন।  ভালোবাসা ও প্রীতির বন্ধন দৃঢ়তর হোক- এই বার্তাই যেন বহন করবে এই রাখিবন্ধন অনুষ্ঠান।
ডুর্য়াস মিল্লাতি ইসলামিয়ার সম্পাদক মোক্তার খান উৎসাহিত হয়ে বলেছেন, ‘পবিত্র ইদ যেমন দীর্ঘ অনুশীলনের পর খুশির তোফা নিয়ে আসে, ঠিক সেভাবেই ডুয়ার্স দিবস আমাদের কাছে আসবে শান্তি ও প্রগতির পরওয়ানা নিয়ে। ‘বিন্নাগুড়ির বেথনিক ফেলোশিপ চার্চের মিঃ সাইমনের বক্তব্য, ‘সান্তাক্লজ আমাদের ডুয়ার্সবাসীর জন্য ১৪ জানুয়ারি অনেক শান্তি - সম্প্রীতি ও উন্নয়নের বার্তা আনবে।’ গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার ডুয়ার্সের মুখপাত্র মধুকর থাপা বলেছেন, ‘সামনেই বিধানসভা নির্বাচন। নির্বাচনে ঠান্ডা এলাকাও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সেকারণে নির্বাচনের উত্তাপে যেন ডুয়ার্সের কোনো বাড়ি না পোড়ে। কোনো নিরাপরাধ মানুষের যেন রক্ত না ঝরে। তাই আমরা সকলে শামিল হব ডুয়ার্স দিবস উৎসবে।’ আদিবাসী বিকাশ পরিষদের সভাপতি জন বার্লা বলেছেন, ‘নানা বিষয়ে অনেক পিছিয়ে আছে ডুয়ার্স। ‘ডুর্য়াস দিবস’-এর মধ্যে দিয়ে জাত-পাত ভুলে আমরা শান্তি ও প্রগতির পথে এগিয়ে যাব।’ কামতাপুর পিপলস পার্টির সাধারণ সম্পাদক শিক্ষক নিখিল রায় জানান- "শান্তি ও প্রগতির মধ্য দিয়েই বঞ্চিত মানুষের ন্যায্য অধিকারের আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তাই আমরাও দলগতভাবে শামিল হব ‘ডুয়ার্স দিবস’ উৎসবে।" বিহারী সাহিত্য সমাজের দিলীপ চৌরাশিয়ার কথায়- "জীবন ও জীবিকার সন্ধানে ভিনরাজ্যে পাড়ি দিচ্ছে এই এলাকার বহু যুবক-যুবতি। উন্নয়ন নিয়ে ভাবতে হবে। গড়ে তুলতে হবে কর্মসংস্থানের সুযোগ। ঘৃণ্য রাজনীতির কোনো স্থান নেই এখানে। ‘ডুয়ার্স ডে’ তে আমরা সেটাই ভাবব।" উৎসবের সাংস্কৃতিক বিভাগের দায়িত্বে থাকা রেমা গাঙ্গুলি ও নীলা ছেত্রীর বক্তব্য, ‘ডুয়ার্স ডে’-তে লোকসংস্কৃতির প্রাণচাঞ্চল্যে ভরে উঠবে প্রাঙ্গণ। প্রাণের আবেগে গাইব সবাই মিলিত ঐক্যতানে।

সব কিছু মিলিয়েই এ এক অভিনব উৎসব আয়োজন। এ উৎসবের একটি বার্তা, গণতান্ত্রিক পথে মানুষের বেঁচে থাকার লড়াই চলছে চলুক কিন্তু তা যেন বিপথগামী হয়ে হানাহানি ও জিঘাংসার রূপ পরিগ্রহ করে রক্ত পিচ্ছিল না করে তোলে ডুয়ার্সের মাটি। উদ্যোক্তাদের এই সৎ ও আন্তরিক প্রচেষ্টাকে অবশ্যই সাধুবাদ জানাতে হয়। এ ধরনের অঞ্চলভিত্তিক শুধুমাত্র শান্তির কামনায় মিলন উৎসব অন্য কোনও অঞ্চলে হয়ে বলে জানা নেই। কিন্তু রাজনীতি যেভাবে মানুষের মনকে তিক্ততায় পর্যবসিত করে তুলছে, নিত্য হানাহানি, হত্যা যেভাবে ক্রমবর্ধমান, সেই অন্ধকার পরিবেশকে আলোকিত করা বড়োই কঠিন কাজ। তবু কিছু শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষকে তো এগিয়ে আসতেই হবে। শান্তির কথা বলতেই হবে। শান্তি ও মিলনের বার্তা পৌঁছে দিতে হবে ঘরে ঘরে। থেমে থাকলে চলবে না। অন্যায়ের কাছে আত্মসমর্পন নয়। বরং বারেবারে নানা পন্থায় বিবেকের ওপর আঘাত করাটাই কাজ ‘ডুয়ার্স ডে’ মনে হয়; সেই কাজই করতে চাইছে পরম আন্তরিকতায়। পরস্পরের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে। অবশ্যই এ এক ইতিবাচক পদক্ষেপ।
 

Join our mailing list Never miss an update