আজ ডুয়ার্স দিবস পালনে ব্যাপক সাড়া স্থানীয় মানুষের

আজ ডুয়ার্স দিবস পালনে ব্যাপক সাড়া স্থানীয় মানুষের

আজ ডুয়ার্স দিবস পালনে ব্যাপক সাড়া স্থানীয় মানুষের; ১৪ জানুয়ারি ২০১১; বর্তমান পত্রিকায় প্রকাশিত
সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় অনুষ্ঠিত ডুয়ার্স উৎসবের বিরোধিতা করে অরাজনৈতিক মঞ্চের ‘ডুয়ার্স দিবস’ পালন আলিপুরদুয়ার সহ গোটা ডুয়ার্সে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। শুক্রবার ১৪ জানুয়ারি ‘ডুয়ার্স দিবস’ পালনে শামিল হয়েছে জাতপাত, বর্ণ, ধর্ম, রাজনীতি নির্বিশেষে সমস্ত সম্প্রদায়ের সাধারণ মানুষ। ডুয়ার্সের সাধারণ মানুষ বলেছেন, রাজ্য সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে ডুয়ার্স উৎসব যে সাড়া ফেলতে পারেনি ‘ডুয়ার্স দিবস’ পালনের মধ্যে দিয়ে তা সম্ভব হয়েছে। আলিপুরদুয়ারের ডুয়ার্স উৎসব কমিটির কর্মকর্তারা অবশ্য এই কথা মানতে নারাজ।
    ডুয়ার্সের শান্তি, সম্প্রীতি ও প্রগতির সঙ্গে ডুয়ার্সের নিজস্ব কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে এ বছরই প্রথম ১৪ জানুয়ারি ‘ডুয়ার্স দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ডুয়ার্সের ওদলাবাড়ি থেকে কুমারগ্রাম পর্যন্ত প্রায় ১৬০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ‘ডুয়ার্স দিবস’ পালনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। এই উপলক্ষে প্রতিটি ব্লক ও অঞ্চলস্তরে ডুয়ার্স দিবস উদযাপন সমিতি গঠন করা হয়। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, ধর্মীয় সংগঠন, রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা কমিটিতে অংশগ্রহণ করেন।
আদিবাসী বিকাশ পরিষদ এবং গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রতিনিধিরাও ডুয়ার্স দিবস পালনে অংশগ্রহণ করে।
    ডুয়ার্স দিবস উদযাপন সমিতির অন্যতম কর্মকর্তা ডাঃ পার্থপ্রতিম বলেন, ডুয়ার্স বরাবরই বঞ্চনার শিকার। অনুন্নয়নকে কেন্দ্র করে ডুয়ার্সবাসীর মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। বিগত দিনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্বার্থসিদ্ধির জন্য ডুয়ার্সে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। জাতিদাঙ্গার উপক্রম হয়েছিল। সেই সমস্ত দিন যেন আর ফিরে না আসে তা সুনিশ্চিত করতেই ‘ডুয়ার্স দিবস’ পালনের আয়োজন করা হয়।
    ডুয়ার্স দিবস উদযাপন কমিটির কর্মকর্তা নীলমণি বর্মন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রাজ্য সরকার ডুয়ার্সের সার্বিক উন্নয়নে নজর দেয়নি। এখানকার মানুষের নিজস্ব  কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য রক্ষায় কোনও উদ্যোগ নেয়নি। প্রতিবছর ঘটা করে আলিপুরদুয়ারে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে ডুয়ার্স উৎসব পালন করা হয়। উদ্যোক্তারা বড় মুখ করে প্রচার করেন, ডুয়ার্সকে জানতে ও জানাতে এবং ডুয়ার্সের কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সব মিথ্যা কথা। জনগণের টাকা খরচ করে কলকাতার নামীদামি শিল্পীদের নিয়ে এসে জলসা করা হয়। শহরের কিছু মানুষ মজা লোটেন। ডুয়ার্সবাসীর কথা কেউ মনেও রাখে না।
    ইতিমধ্যে অখিল ভারতীয় আদিবাসী বিকাশ পরিষদ ডুয়ার্স উৎসবের তীব্র বিরোধিতা করে উৎসব বয়কটের ডাক দিয়েছেন। সংগঠনের ডুয়ার্স -তরাই আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি জন বারলা বলেন, ডুয়ার্সের একের পর এক চা বাগান বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বাগিচা শ্রমিকরা অনাহারে দিন-কাটাচ্ছে। সেই সময় রাজ্য সরকারের অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দপ্তর লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে ডুয়ার্স উৎসবের পৃষ্ঠপোষকতা করছে। ডুয়ার্সের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে ডুর্য়াস উৎসবের কোনও ভূমিকাই নেই। এই কারণেই আমরা ডুয়ার্সের বঞ্চনার বিরুদ্ধে ‘ডুয়ার্স দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
    গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতা স্যামুয়েল গুরুং বলেন, ডুয়ার্স উৎসব কী কারণে করা হয় জানি না। তবে ডুয়ার্সের উন্নয়ন ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য আমরা ডুয়ার্স দিবসের সঙ্গে যুক্ত আছি।
    ডুয়ার্স উৎসব কমিটির সাধারণ সম্পাদক দীপ্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, শুধু নাচ গান নয়, ডুয়ার্স উৎসবের মাধ্যমে ডুয়ার্সের স্থানীয় বাসিন্দাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি তুলে ধরার ব্যবস্থাও থাকে।

 

Join our mailing list Never miss an update