১৪ জানুয়ারি পালন করুন ডুয়ার্স ডে; জানুয়ারি ২০১৫; এখন ডুয়ার্স পত্রিকায় প্রকাশিত
২০০৮ থেকে ডুয়ার্স এলাকায় বসবাসকারী মানুষের মধ্যে যে মিলনের ভাবধারা ছিল তা ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। দিকে দিকে অশান্তির আগুন ছড়িয়ে পড়ে - কে এই এলাকার ভূমিপুত্র? এই প্রশ্নকে সামনে নিয়ে এসে শুরু হয়ে যায় চূড়ান্ত হানাহানি। মিশ্র সংস্কৃতির ঐতিহ্য, মিলনের সুরের বদলে অশান্তির আগুন জ্বলতে থাকে। অবিশ্বাস আর বিভ্রান্তিকে পাথেয় করে রাস্তায় অস্ত্র হাতে নেমে পড়ে সহজ সরল মানুষ। ডুয়ার্সের চামুর্চি, বানারহাট, নাগরাকাটা, মালবাজার, বাগরাকোট, বীরপাড়া সবজায়গায় জাতের নামে, সম্প্রদায়ের নামে, ভাষার নামে শুরু হয় সংঘাত। দীর্ঘদিন ধরে পাশাপাশি থাকা আদিবাসী, নেপালি, বাঙালি হিন্দু, বাঙালি মুসলমান, বিহারী সকলে যেন অবিশ্বাসের বাতাবরণে পাল্টে যেতে থাকে। বনধ, হরতাল, অবরোধের মধ্য দিয়ে ডুয়ার্সের জনজীবন বিপর্যস্থ হয়ে পড়ে। এই অশান্তির পটভূমিকায় ডুয়ার্সের সাধারণ মানুষের মধ্যে আবার শান্তি-সম্প্রীতির বাতাবরণ তৈরি করবার লক্ষ্যে এবং ডুয়ার্সের অনগ্রসরতা কাটিয়ে উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে এই অঞ্চলের সংবাদ মাধ্যমের সাথে যুক্ত কিছু মানুষ ২০১১ সালে ‘ডুয়ার্স ডে’ পালনের উদ্যোগ গ্রহণ করে।
ডুয়ার্স ডে পালনের ক্ষেত্রে আড়ম্বড়, জাঁকজমক না থাকলেও অশান্ত ডুয়ার্সে বিভিন্ন ভাষাভাষী, ধর্মের মানুষের মধ্যে এই মিলনের চিন্তা নতুন বার্তা বহন করে নিয়ে আসে। ডুয়ার্সে বসবাসকারী মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি, সৌহার্দের বিকাশ ঘটাতে এবং ডুয়ার্সের আর্থসামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে রাজনীতির কুটচালিকাকে পরিহার করে এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গী বিকশিত করার লক্ষ্য নিয়ে ১৪ জানুয়ারি ডুয়ার্স ডে উদ্যাপনের ৩ বছর অতিক্রান্ত।
একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে এই দিনটি উদযাপনের মধ্য দিয়ে নতুন ভাবনার বিকাশ সাধন জরুরী। ‘এখন ডুয়ার্স’ পত্রিকার নববর্ষ সংখ্যাটি (জানুয়ারি ২০১৫) উৎসর্গ করা হল এই ডুয়ার্স দিবস পালনের জন্য।