এভারেস্টে উঠে

এভারেস্টে উঠে

এভারেস্টে উঠে;-ডাঃ পার্থপ্রতিম; ১৭ জানুয়ারি ২০০৯; পৃষ্ঠা-৩; উত্তরবঙ্গ সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত
এভারেস্ট শৃঙ্গ তখন মাত্র ৪০০ মিটার দূরে। মাইনাস ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস চলছে তাপমান। সেই অবস্থায় শরীর থেকে জ্যাকেট-সমন্বিত পোশাক-আশাক খুলে ফেললেন ডাঃ ড্যানিয়েল মার্টিন। নিজের পায়ের শিরা থেকে রক্ত টানলেন সিরিঞ্জে। বাকি ৯ সহ-অভিযাত্রী চিকিৎসকদের শরীর থেকে টানলেন রক্ত। ট্রাউজর খুলে ফেলা অবস্খায় ওই ঠান্ডায় ডাঃ মার্টিনের রক্তে যে পরিমাণ অক্সিজেন পাওয়া যায় তাতে অক্সিজেনের ম্াত্রা ছিল এই পৃথিবীতে সর্বনিম্ন। রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ ওইরকম কমে গেলে সেই মানুষ বেঁচে থাকতে পারে না, এতদিন সেই রকমই ধারণা ছিল। কিন্তু ট্রাউজার খোলা অবস্থায় সহ অভিযাত্রীদের রক্ত টানতে গিয়ে যতটা সময় ব্যয় করেন, তাতে তাঁর মরে  যাওয়ারই কথা। না, মরেননি অ্যানাসথেস্টিস্ট মার্টিন। উল্লেখ্য, স্বাভাবিক সুস্থ মানুষের রক্তে ১২ থেকে ১৪ কিলোপাস্কার অক্সিজেন থাকে, এভারেস্ট পথে এই ডাক্তারদের রক্তে ৩.২৮ কিলোপাস্কার করে অক্সিজেন পাওয়া যায়।

ডাঃ মার্টিনের রক্তে পাওয়া যায় ২,৫৫ কিলোপাস্কার। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকেন যাঁরা, তাঁদের মধ্যে রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ৮ কিলোপাস্কারের নীচে নেমে এলেই ধরে নেওয়া হয়, সেই রোগী ক্রিটিক্যালি ইল, অসুখ তাঁর বড়োই জটিল। এই ধরনের রোগী, যেমন অ্যাকিউট রেসপিরেটারি ডিসট্রেস সিনড্রোম, সিস্টিক ফাইব্রোসিস, এমফাইসেমা, সেপটিক শক, বøু-বেরি সিনড্রোম-এসব চিকিৎসার ক্ষেত্রে উন্নতি ঘটাতেই এভারেস্টের কোলে দাঁড়িয়ে এই রক্ত পরীক্ষায় নামা ব্রিটেনের দশ চিকিৎসক দলের এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছিল কডওয়েল এক্সিাট্রম এভারেস্ট এক্সপিডিশন। এই ডাক্তারবাবুরা এভারেস্টের পথে ২৭,৫৫৯ ফুট উপরে যখন ২০ নটেরও বেশি গতিতে তুষার-ঝঞ্ঝা চলছে, তখন প্রত্যেকে অক্সিজেনের মুখোস খুলে ২০ মিনিট ধরে প্রাকৃতিক বাতাসে শ্বাস নিয়েছেন। দেশে ফিরে নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মিডিসিনে ওঁরা লিখেছেন, যখন পর্বতশৃঙ্গে ওঠে মানুষ, তখন উচ্চতার কারণে ফুসফুসে এক ধরণের তরল জমে, সেই তরল জমাতেই রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমতে থাকে।                  

Join our mailing list Never miss an update