ওজন কমিয়ে; -ডাঃ পার্থপ্রতিম; ১৯ জানুয়ারী ২০০৮; উত্তরবঙ্গ সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত
চকোলেট পেলেই হল। গোগ্রাসে গিলতেন। অতি চকলেট খাওয়ার জেরে বেড়ে শরীরটা মুটিয়ে যায়। ওজন বেড়ে ১৫০ কিলোগ্রাম। ডায়াবেটিস হয়। ওজন বাড়ার কারণে প্রজনন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিলেন এই মহিলা। ২৯ বছর বয়সি এই মহিলার ডিম্বেস্ফোটন না হওয়ায় কৃত্রিম উপায়েও সন্তানের মা হওয়া সম্ভব ছিল না। ডাক্তাররা বলে দিয়েছিলেন, আপনার যা অবস্থা ‘নলজাতক’-এর জন্য চেষ্টা বৃথা। আশা ছেড়ে দিননি ব্রিট্রেনের রোদারহ্যাম-এর বাসিন্দা নিকোলা ওয়ালেস। শুধু চকোলেটই নয়, সব ধরনের খাওয়া দাওয়া কমিয়ে দিতে তিনি পাকস্থলির মুখ মুড়িয়ে ছোট করে নেওয়ার অস্ত্রোপচার করাবেন বলে মনস্থ করেন। বাড়ি বন্ধন দিয়ে ৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা লোন নেন।
সেই ঋণের টাকা দিয়ে গ্যাসট্রিক বাইপাস অপারেশন করিয়ে নেন। এই অপারেশনের আগেও নানাভাবে ওজন কমানোর চেষ্টা চালিয়েছিলেন তিনি। পারেননি। কারণ, চকোলেটে অতি-আসক্তি। পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছিল, মুটিয়ে যাওয়ায় ডিম্বাণু উৎপাদন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আই ভি এফ চিকিৎসায় সাফল্য মেলার পর যদি গর্ভবতীও হন এই মহিলা, সেক্ষেত্রে শিশুর জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা থাকবে।
শেষমেশ, গ্যাসট্রিক বাইপাস অপারেশনই মহিলাকে বাঁচিয়ে দিয়েছে। পাকস্থলির মুখ মুড়িয়ে দেওয়ায় সামান্য খাওয়া অর্থাৎ বেশি খেতে না পারায় ১৮ মাসে ওজন কমে গিয়েছে ৭২ কিলোর মতো। শেফিল্ডের বি এম আই থ্রনবারী হাসপাতালে এই অস্ত্রোপচার করানোর তিন মাসের মধ্যেই দ্রুত ওজন কমতে থাকে। ডায়াবেটিস উধাও হয়। রক্তে সুগারের মাত্রা স্বাভাবিক হয়ে যায়। আরও তিন মাস বাদে নিকোলার শরীর ডিম্বাণু উৎপাদন শুরু করে দেয়। এর দু-মাস বাদে ডাক্তারদের চমকে দিয়ে গর্ভবতী হয়ে পড়েন নিকোলা। কদিন আগে মেয়ে অ্যালেক্সের জন্ম দিয়েছেন। ৩ কিলোর মত ওজন নিয়ে জন্মেছে সে। পাকস্থলির মুখ মুড়ে দেওয়ায় চকোলেট আর হজম করতে পারবেন না নিকোলা।