হাসিমারার সেঁজুতি রায়, আপনাকে যে চেনাই দায়!

হাসিমারার সেঁজুতি রায়, আপনাকে যে চেনাই দায়!

হাসিমারার সেঁজুতি রায়, আপনাকে যে চেনাই দায়!; -ডাঃ পার্থপ্রতিম; ২৪ জানুযারি ২০০৪; উত্তরবঙ্গ সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত
নিজে থেকে পরিচয় না দিলে চিনতেই পারতাম না, এ সেই সেঁজুতি। রঙটা চাঁপা বটে, কিন্তু গোলগাল চেহারার মধ্যে একটা আলাদা অ্যাপিল ছিল। চোখের সেই মায়াবিনী চাহনি, টোলপড়া গালের দুষ্টু-দুষ্টু হাসি-স্মৃতির পটে এখনো তুফান তোলে। আজ যেন সব উধাও। কে যেন দু-পোঁচ কালি লেপ্টে দিয়েছে সেই মিষ্টি মুখে।
    শুধু সেঁজুতি কেন? মিতালি, সুরঞ্জনা, ডালিয়া অনেকেরই তো একই দশা। রোগা হতে গিয়ে দিনের পর দিন উপোস করে কাটায়। তাতে তারা কতটা রোগা হয়েছে সেটা জানা না গেলেও, এদের অনেককেই রোগী হয়ে যেতে দেখেছি। এ ধরনের অপচেষ্টা শুধু এদেশে নয়, আটলান্টিকের ওপারে তো বহুদিন আগেই শুরু হয়েছে। বারবি পুতুল ও ফ্যাশন শো-র মডেলদের লিকপিকে পেনসিল কাটিং চেহারা দেখে হাজারো হাজারো যুবতী তাদেরকেই আইডল করে জোর কদমে নেমে পড়েছেন। রোগা হওয়ার জন্য খাওয়ার পাট প্রায় তুলেই দিয়েছেন। কেউ আবার খাওয়ার পর গলায় আঙুল দিয়ে বমি করে কৃশতার সাধনায় রত।

এইসব তরুণীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে অ্যানোরোক্সিয়া, অ্যাভিটামিনোসিস, বুলিমিয়া এবং এ ধরনের আরো বহু রোগ। অ্যানোরেক্সিয়া হল সাধারণ ভাষায় খাদ্যে অনীহা। খাবার দেখলেই রোগীর গা গোলায়, বমি আসে। রোগটা যতটা না শারীরিক তার চেয়ে বেশি মানসিক। অ্যাভিটামিনোসিস বা ভিটামিনের অভাবজনিত কারণে চোখের দৃষ্টি কমে আসে, ত্বক ঔজ্জ্বল্য হারায়, দেখা দেয় হাজারো অসুবিধা।
মেয়েদের এই অবস্থা দেখে অনেক বাবা-মার রাতের ঘুম উধাও। গলা ছেড়ে গাল পাড়ছেন ফ্যাশন শো-র উদ্যোক্তাদের। অবস্থা এমনই ভায়াবহ আকার নিয়েছে যে বেশ কিছুদিন থেকে সে দেশগুলির সরকারি স্বাস্থ্য বিভাগকে প্রচারে নামতে হয়েছে। সাদামাটা প্রচারে তেমন ফল না হওয়াতে হলিউডের জনপ্রিয় নায়িকা ক্যাথরিন জিটা-জেনস ও জুলিয়েন মুরকে দূরদর্শনের পর্দায় এসে বলতে হচ্ছে- "না খেয়ে মরার দরকার নেই। ঠিকমত নিয়ম করে খেয়েও তন্বি হওয়া যায়। আমি নিজেই তার জ্বলন্ত প্রমাণ।"
এটা ঠিক যে মেদ নিয়ন্ত্রণের চাবিকাঠিটি লুকিয়ে আছে খাদ্য-খাবারের মধ্যে। আমাদের দৈনন্দিন কাজ কারবারের জন্য শক্তির প্রয়োজন। এছাড়াও শারীরিক ক্ষয়ক্ষতি পূরণ ও দৈহিক বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পুষ্টি দরকার এই পুষ্টি আমরা পাই খাদ্যের মধ্য দিয়ে। ফিগার আকর্ষণীয় করে তুলতে চাইলে সবার আগে খাদ্যের দিকে নজর দিতে হবে। তাই খাদ্য খাবার ও পুষ্টি সম্বন্ধে স্বচ্ছ ধারণা থাকা খুবই দরকার।

ডাক্তারবাবুরা খাদ্যের পুষ্টি উপাদানকে প্রধানত পাঁচ ভাগে ভাগ করেন-
১)কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা ২) প্রোটিন বা দেহসার ৩) ফ্যাট বা স্নেহপদার্থ ৪) ভিটামিন বা খাদ্যপ্রাণ ৫) মিনারেল বা খনিজ পদার্থ। এছাড়া রয়েছে জল। এইসব উপাদান নতুন কোষ তৈরি, দেহবৃদ্ধি, দেহের প্রয়োজনীয় শক্তির সরবরাহ ও খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে। খাবারের মধ্যে এই সব উপাদানই দরকার। কারণ বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান বিভিন্ন চাহিদা মেটায়। যেমন-
কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা: আমাদের শরীরে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাদ্য সবচেয়ে বেশি পরিমাণে দরকার। সাধারণভাবে শর্করা থেকেই আমাদের শক্তির চাহিদা পূরণ হয়। এছাড়া প্রোটিন হজমেও সাহায্য করে কার্বোহাইড্রেট। কার্বোহাইড্রেটের সরল রূপ হল- গ্লুকোজ। অর্থাৎ জটিল শর্করা আমাদের পৌষ্টিকতন্ত্রে পরিপাক হয়ে সরল শর্করা বা গ্লুকোজে পরিণত হয়। শর্করা মোটামুটি তিন রকমের। যেমন, চিনি জাতীয় শর্করার মধ্যে আছে- গুড়, চিনি, মধু, বিট, আখের রস, কিসমিস ইত্যাদি।
মন্ড জাতীয় শর্করা হল- চাল, গম, ভুট্টা, বার্লি, সুজি ইত্যাদি। আর কচু, আম, মটরশুঁটি, বেল, পেয়ারা এসব ফল ও সবজি হল তন্তু বা ফাইবার জাতীয় শর্করা।
আমাদের পরিপাক পুষ্টির জন্য সব ধরনের শর্করাই কম বেশি প্রয়োজন। চিনি ও মন্ড জাতীয় শর্করা যেমন ক্যালোরির চাহিদা তাড়াতাড়ি মেটায়, সেরকম আবার তন্তুজাতীয় শর্করা কোষ্ঠ পরিষ্কার করে। দেহের মোট শক্তি চাহিদার শতকরা ৫০ থেকে ৫৫ ভাগ কার্বোহাইড্রেট থেকে পূরণ করা উচিত। সাধারণভাবে ১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট থেকে ৪ ক্যালোরি শক্তি পাওয়া যায়। প্রয়োজন থেকে কম শর্করা খেলে শরীর দূর্বল লাগে, মাথা ঘোরে, ওজন  কমে, শারীরিক ও মানসিক অবসাদ দেখা দেয়। আর অতিরিক্ত শর্করা খাবার ফ্যাটে রূপান্তরিত হয়ে দেহে চর্বির মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
প্রোটিন বা দেহসার: আমাদের দেহের সবকিছুই কোনো না কোনো প্রোটিন দিয়ে তৈরি। তা সে পায়ের নখ থেকে মাথার চুল পর্যন্ত। প্রতিটি দেহকোষের একটি নির্দিষ্ট আয়ু বা জীবনকাল আছে। তারপর সে মারা যায়। প্রোটিনের সাহায্যেই নতুন নতুন কোষ তৈরি হতে থাকে। দেহের বিভিন্ন হরমোন, হজমের জন্য উৎসেচক ও রক্তরস কণিকা তৈরি হয় প্রোটিন থেকে। এসব ছাড়াও রোগ প্রতিরোধ, অম্ল-ক্ষারের সমতা রক্ষা আরো হরেকরকম শারীরবৃত্তীয় কাজে প্রোটিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
প্রোটিন মোটামুটি দু-রকম। প্রাণীদের দেহ থেকে যে প্রোটিন পাওয়া যায়, তাকে বলে প্রাণিজ প্রোটিন বা অ্যানিম্যাল প্রোটিন। উদ্ভিজ প্রোটিন বা ভেজিটেবল প্রোটিন আসে গাছপালা থেকে। যেমন- বিভিন্ন রকমের ডাল, সয়াবিন, কাজুবাদাম, রাজমা, কাঁঠালের বিচি ইত্যাদি।
প্রোটিনের সরলতম রূপ হল অ্যামাইনো অ্যাসিড। অ্যামাইনো অ্যাসিড বিভিন্ন রকমের। ২৩ রকমের অ্যামাইনো অ্যাসিড দেহগঠনের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। এক একটি অ্যামাইনো অ্যাসিড এক-একরকম কোষের কাজে লাগে। উদ্ভিজ্জ প্রোটিনে সবরকমের অ্যামাইনো অ্যাসিড পাওয়া যায় না। তাই চল্লিশ বছর বয়সের আগে সবারই কম বেশি আমিষ খাবার খাওয়া উচিত। উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের তুলনায় প্রাণিজ প্রোটিন সহজে হজম হয়। আমরা দৈনিক যে পরিমাণ প্রোটিন খাই তার অর্ধেক প্রাণিজ প্রোটিন হওয়া দরকার। দেহের মোট ক্যালোরি চাহিদার ২০-২৫ শতাংশ প্রোটিন থেকে পূরণ করা উচিত। ১ গ্রাম প্রোটিন মোটামুটিভাবে ৪ ক্যালোরি শক্তি উৎপাদন করতে পারে।    দেহে প্রোটিনের ঘাটতি হলে শরীরের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। ওজন কমে, ত্বক ও চুল ফ্যাকাসে হয়ে পড়ে। হাত-পা-মুখ এইসব বিভিন্ন স্থানে ফোলাফোলা ভাব দেখা যায়। খাদ্যে প্রোটিনের মাত্রা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি হলে তা চর্বিতে রূপান্তরিত হয়ে দেহের বিভিন্ন স্থানে মেদ হিসেবে জমে।
ফ্যাট বা স্নেহ পদার্থ: দেহের অতিরিক্ত শক্তি ফ্যাট হিসেবে সঞ্চিত থাকে। অর্থাৎ ফ্যাট বা চর্বি হল শক্তির ঘনীভূত রূপ। মোটামুটি হিসেবে দেখা গেছে ৭৫০০ ক্যালোরি শক্তি দেহে সঞ্চিত হলে ১ কিলো মেদ বা চর্বি তৈরি হয়। স্নেহ পদার্থ শুধু স্থূলত্বের জন্য দায়ী এমনটি নয়। বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কাজে ফ্যাটের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। ত্বকের নিচে জমা মেদ বাইরের ঠান্ডা-গরম থেকে দেহকে কিছুটা হলেও রক্ষা করে। ত্বকের উপর ছোটোখাটো আঘাত প্রতিহত করে চর্বিস্তর। গরমকালে তেমন প্রয়োজন না হলেও শীতকালে এটি দেহকে গরম রাখে। পরিচিত চর্বি ত্বককে উজ্জ্বল ও চকচকে করে। এছাড়াও শরীরের কোষকলা ও হাড়ের প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়াম সরবরাহ করার কাজে ফ্যাট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। প্রোটিনের মতো ফ্যাটও দু-রকমের। প্রাণিজ স্নেহপদার্থ ও উদ্ভিজ্জ স্নেহপদার্থ। প্রাণিজ ফ্যাট হল- মাছের তেল মাংসের চর্বি, ঘি, মাখন, কড লিভার তেল এবং আরো অনেক কিছুই। সরষে, বাদাম, নারকেল এসব বিভিন্ন তেল ও বনস্পতি, মার্জারিন উদ্ভিজ্জ স্নেহপদার্থ।

আপনার ওজন যদি স্বাভাবিক থাকে তবে দৈনিক মোট ক্যালোরির ১৫-২০ শতাংশ ফ্যাট জাতীয় খাদ্য দিয়ে পূরণ করতে পারেন। তবে ওজন বেশি থাকলে খাদ্যে ফ্যাটের পরিমাণ কমিয়ে দিতে হবে। এক গ্রাম স্নেহপদার্থ থেকে ৯ ক্যালোরি কমিয়ে দিতে হবে। এক গ্রাম স্নেহপদার্থ থেকে ৯ ক্যালোরি শক্তি পাওয়া যায়। খাদ্যে স্নেপদার্থের ঘাটতি থাকলে চামড়া খসখসে ও রুক্ষ হয়। দেহের লাবণ্য ও কমণীয়তা কমে। মাংসপেশির কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়। আবার যাঁরা বেশি পরিমাণে ফ্যাট জাতীয় খাদ্য খান তাঁদের শরীর মোটা হয়ে যায়। ওজন বাড়ে, হজমের গোলমাল দেখা দেয়। অনেক সময় রক্তের কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইড বেড়ে গিয়ে রক্তনালীর ভেতর আস্তরণ তৈরি করে যা রক্ত চলাচলে বাধা দেয়। হৃদরোগ, ডায়াবেটিস আরো বহু ব্যাধি দরজায় এসে কড়া নাড়তে শুরু করে।
ভিটামিন বা খাদ্যপ্রাণ:- ভিটামিন আমাদের দেহে কোনো শক্তি বা ক্যালোরি জোগায় না। কিন্তু দেহের পুষ্টি, বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধ বিভিন্ন কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এখনো পর্যন্ত প্রায় ৬ রকম ভিটামিনের কাজ কারবার সম্বন্ধে জানা গেছে। রোমান বর্ণমালা অনুসারে এদের নাম রাখা হয়েছে- এ, সি, ডি, ই, কে এবং বি-কমপ্লেক্স। তবে প্রত্যেক ভিটামিনের আলাদা আলাদা রাসায়নিক নাম রয়েছে। যেমন-ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ১২ টি বিভিন্ন ভিটামিনের সমষ্টি।
প্রতিটি ভিটামিনের ভিন্ন ভিন্ন কাজের ক্ষেত্র রয়েছে। ভিটামিনগুলি দলবদ্ধভাবে কাজ করে। সে কারণে শারীরবৃত্তীয় কাজ ঠিকমতো চালানোর জন্য সব ভিটামিনই সঠিক মাত্রায় প্রয়োজন।
প্রচলিত পদ্ধতিতে ভিটামিনগুলোকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। যে সব ভিটামিন জলে গুলে যায় তাদের বলে ওয়াটার সলিউবিল। ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ও ভিটামিন সি এই শ্রেণিতে পড়ে। শরীরে প্রয়োজনের অতিরিক্ত ওয়াটার সলিউবিল ভিটামিন প্রস্রাবের সঙ্গে দেহের বাইরে বেরিয়ে যায়।
স্নেহপদার্থে দ্রবীভূত ভিটামিন বা ফ্যাট সলিউবিল ভিটামিনের মধ্যে রয়েছে - এ, ডি, ই, এবং কে। এগুলি অতিরিক্ত হলে কিছুদিনের জন্য তা লিভারে জমা থাকে । আবার প্রয়োজন মতো দেহের চাহিদা মেটায়। অনেক হাফজান্তাকে দেখি বাজার থেকে ভিটামিন ট্যাবলেট, ক্যাপসুল কিনে মুড়ি-মুড়কির মত খান। এটা কোনো অবস্থাতেই ঠিক নয়। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এভাবে ভিটামিন খাবেন না। মাত্রা-অতিরিক্ত ভিটামিন আপনার দেহের বিশেষত কিডনি ও লিভারের ক্ষতি করতে পারে। ডাক্তারি ভাষায় একে বলে হাইপার ভিটামিনোসিস।
মিনারেলস বা খনিজ পদার্থ:- আমাদের দেহের পুষ্টি, বৃদ্ধি, বিভিন্ন জৈবিক  কাজকর্ম স্বাভাবিক রাখতে খনিজ পদার্থ অপরিহার্য। আমাদের রক্তের হিমোগ্লোবিন তৈরিতে যেমন আয়রন ও কপার  অর্থাৎ লোহা এবং তামা খুবই দরকার, তেমনই দেহের অম্ল-ক্ষারের ভারসাম্য রক্ষা করতে দরকার সোডিয়াম। খাবার ও পানীয় জলের মাধ্যমে বিভিন্ন রকমের খনিজ পদার্থ নিয়মিত আমাদের শরীরে আসে। এক একটি খনিজ পদার্থ এক একরকমের কাজ করে। এসবের মধ্যে প্রধান হল- ক্যালসিয়াম , ফসফরাস, সোডিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, সালফার, কপার, কোবাল্ট, জিঙ্ক, আয়োডিন, ক্লোরিন ও ম্যাঙ্গানিজ।

জল:- আমাদের দেহে জলের ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। জলের অপর নাম ‘জীবন’ তো সে কারণেই। প্রতিদিন যে পরিমাণ জলের দরকার তার অর্ধেকটা আমরা পাই বিভিন্ন খাদ্যবস্তু থেকে। ভাত-ডাল- শাকসবজি এসব খাবারের সঙ্গে জল মিশে থাকে। তবে এটাই যথেষ্ট নয়। তাই ঢক ঢক করে জলপান করি। চো-চো করে কোল্ড ড্রিংকস, ডাবের জল টানি। এছাড়াও চা, কফি, দুধ, মিনারেল ওয়াটার সরাসরি জলের চাহিদা মেটায়। জল পরোক্ষভাবে বিভিন্ন কোষে কোষে পুষ্টি সরবরাহ করে। জলীয় ভাগ বেশি থাকে বলেই না রক্ত তরল। এছাড়াও শরীরের মধ্যে তৈরি হওয়া দূষিত ও অবাঞ্জিত পদার্থ ঘাম ও প্রস্রাবের মাধ্যমে বার করে দিতে জল মূল ভূমিকা নেয়। পটাসিয়াম আয়রন এবং আরো বহু খনিজ পদার্থ পানীয় জলের সঙ্গে মিশে শরীরে ঢোকে এবং যাঁরা মোটা হন তাঁদের জলের চাহিদা বেশি থাকে, এঁদের ঘামও বেশি হয়। তবে মাত্রাতিরিক্ত জল খাওয়া ভালো নয়, তাতে পরিপাক যন্ত্রের মধ্যে থাকা বিভিন্ন উৎসেচক অতিমাত্রায় লঘু হয়ে যায়। হজমের গোলমাল দেখা দিতে পারে। চাহিদা অনুসারে জল কম খেলে ক্লান্তি ও অবসাদ বাড়ে। দেহের ত্বক শুকনো ও কুঁচকে যায়। স্বাভাবিক ওজনের একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির দৈনিক দুই থেকে আড়াই লিটার জল পান করলেই হয়ে যায়। মাথা কি ভোঁ ভোঁ করছে, না, গম্ভীরানন্দের মতো আপনাদের আর বড়ো বড়ো জ্ঞানের কথা শোনাবো না। তবে যে কথা না বললেই নয়, তা হল-মেদ কমানোর জন্য আগে পিছে না ভেবে দুম করে খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দিলে কপালে শনি নাচবে। আগে ঠান্ডা মাথায় সব ব্যাপারটা বুঝুন, তারপর না হয় উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন। তা না হলে আপনার অবস্থা হবে সেই হাসিমারার সেঁজুতি রায়ের মতোই। 
            

Join our mailing list Never miss an update