সেই ৪ কন্যা

সেই ৪ কন্যা

সেই ৪ কন্যা; -ডাঃ পার্থপ্রতিম। ১৯ মে ২০০৭; উত্তরবঙ্গ সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত
একইসঙ্গে চার সন্তানের জন্মদান! চারজনেরই রক্তের গ্রুপ এক! প্রত্যেকেই মেয়ে। জন্মের সময় ওদের ওজন ছিল ৮২৫ গ্রাম থেকে ৯৮০ গ্রাম। অর্থাৎ কেউই এক কিলোও ছিল না। এরকম অভিন্ন সদৃশাকার বোন বা ভাইদের জন্ম ঘটে ৪০ লাখে একবার। নির্ধারিত সময়ের ১০ সপ্তাহেরও বেশি সময় আগে জন্ম নিয়েছিল ওরা। ২৯ সপ্তাহ তিনদিনের মাথায় মায়ের পেট কেটে ওদের বের করে আনার কারণ ছিল, মাকে বাঁচানো। মা বমনেচ্ছার জন্য খেতে পারছিলেন না। গর্ভস্থ শিশুগুলি পর্যাপ্ত পুষ্টি পাচ্ছিল না। শিশুগুলিকে পূর্ণ সময় গর্ভে রাখলে উচ্চ রক্ত চাপ, অ্যানিমিয়া, ডায়াবেটিস, সংক্রমণজনিত ভোগান্তি, শ্বাসকষ্ট, জন্ডিস অনেক কিছুই ওদের হতে পারত। আর কিছুদিন গর্ভে থাকলে শিশুদের সঙ্গে মায়েরও এসব রোগ-ভোগান্তি হয়ে মৃত্যু হতে পারত। সেদিন ২৬ বছর বয়সে চার কন্যার মা হয়েছিলেন যিনি, সেই শ্রুতি বিবেকানন্দন পেশায় সফটওয়ার বিশেষজ্ঞ। শ্রুতির স্বামী বিবেকানন্দ ইঞ্জিনিয়ার। শ্রুতি জানাচ্ছেন, গর্ভাবস্থার তিনমাসের মাথায় জেনেছিলাম, একসঙ্গে তিন সন্তানের মা হতে চলেছি। শুনে ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। এরপর আরেকজন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে উনি জানান, গর্ভে একসঙ্গে বাড়ছে চারজন। আমার স্বামী অবশ্য ঘাবড়ায়নি, তার বরং অতি উৎসাহ! প্রতি মাসে টেকনিশিয়ান যখন আলট্রাসাউন্ডের স্ক্যান দেখাতেন, তখন আমরা চারটি হার্টের স্পন্দন শুনতে পেতাম। একসঙ্গে ৪-৪ টি খুদে হার্টের স্পন্দন শুনে আমি যত নার্ভাস হতাম, আমরা স্বামী তত আমাকে উজ্জীবিত করত, বলত কোনো চিন্তা করবে না, ওরা একদিন ঠিকঠাক আমাদের কোলে উঠে আসবে।’
    কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে ওরা জন্ম নিয়েছিল চেন্নাইয়ের অ্যাপোলো হসপিটালে। ওদের ওজন এক কিলো না হওয়া পর্যন্ত ডাক্তাররা ছুটি দেননি। একবছর আগে জন্ম নেওয়া ওই শিশুগুলির প্রত্যেকের এখন ৮ কিলোগ্রাম করে ওজন। ২৭ এপ্রিল ছিল ওদের জন্মদিন।     

Join our mailing list Never miss an update