ব্রান্ডিতে বেঁচে.... ডাঃ পার্থপ্রতিম; ১ মার্চ ২০০৮; উত্তরবঙ্গ সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত
জন্মের পর ব্রান্ডি আর গ্লুকোজ খাইয়ে বাঁচিয়ে রাখতে হয়েছিল ওদের। সেই যমজ ভাই ষাটতম জন্মদিন জন্মস্থান ঘুরিয়ে দেখালেন তাঁদের স্ত্রীদের। ওদের জন্ম ১৯৪৮ সালের ১১ ফ্রেব্রুয়ারি। ব্যাপক তুষারপাত ঘটেছিল সেদিন। এসেকসের রাস্তায় দু-ফুট উঁচু হয়ে বরফ জমেছিল। ওদের মা এনিড ওয়েস্ট বাজার সেরে সেই বরফের উপর দিয়ে ছেঁটে বাড়ি ফিরেছিলেন। এনিড তখন ৮ মাসের গর্ভবতী। বাড়ি ফেরার পথেই প্রসব বেদনা উঠে গিয়েছিল। ওই বরফাবৃত পথে এনিডকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হসপিটালে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সায় দিতে পারেননি চিকিৎসক। এনিডের স্বামী ভিক্টরও চাপাচাপি করেননি। বাড়িতেই ভূমিষ্ঠ হয়েছিল ওরা। প্রথমে বিল। তার ১৫ মিনিট খোদ মাকেই অবাক করে দিয়ে ভূমিষ্ঠ হয় পিটার। জন্মের সময় ওদের ওজন ছিল যথাক্রমে ১ কিলো ৭০০ এবং ১ কিলো ২৫০ গ্রাম। তখন বাড়ি বলতে এসেকসের কোলেচেস্টারের সেনা ছাউনি। ক্যাভালরি ব্যারাক। সেই বাড়িতেই অকালপ্রসূত শিশুদের লালনের জন্য ইনকিউবেটর বানিয়ে নিয়েছিলেন ডাক্তারবাবু।
পিটার ওয়েস্ট জানাচ্ছেন, ‘আমরা জন্ডিসে কাবু হয়ে পড়েছিলাম, পুরো শরীর কালো হয়ে গিয়েছিল। আমাদের স্নান করানো হত না, পরিবর্তে অলিভ অয়েল মাখানো হত। দুধ খেতে দেওয়া হত না, বদলে খাওয়ানো হত ব্রান্ডি আর গ্লুকোজ। সেই আমরাই এই পৃথিবীতে ৫৯ বসন্ত পার করে দিলাম। জন্মের পর বহুদিন ব্রান্ডি খাওয়ানো হয়েছিল বটে, তবে আমার হুইস্কিই ভালো লাগে’। ব্রিটিশ- মেডিক্যাল জার্নাল ল্যানসেট-এ এই দুই ভাইয়ের মরণাপন্ন অবস্থা থেকে বেঁচে ফেরার ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে। দুই ভাই এখন থাকেন ব্রিটেনেরই রিডিং এবং বোর্নিমাউথ-এ। জন্মস্থানে হাজির হয়ে জন্মগৃহ অর্থাৎ সি টু ব্লকের সেদিনের পারিবারিক কোয়ার্টারটি ওঁরা অবশ্য খুঁজে পাননি। কেননা পুরো ব্যারাক গুঁড়িয়ে দিয়ে ডেভেলপার বোভিস হোসম সেখানে বহুতল গড়ছেন।