কান্নাহীন পেঁয়াজ

কান্নাহীন পেঁয়াজ

কান্নাহীন পেঁয়াজ; -ডাঃ পার্থপ্রতিম। ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৮; উত্তরবঙ্গ সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত
এতোদিন কাঁদিয়ে এসেছে, এবার নিজেই কাঁদবে! পেঁয়াজ কাটার সময় চোখে জল আসবে না আর। জিনগত যে উৎসেচকটির কারণে পেঁয়াজ কাটার সময় চোখে জল আসত, সেটিকে শুকিয়ে মেরে ফেলার প্রযুক্তি হাসিল হয়ে গিয়েছে। জাপানের বিজ্ঞানীরা ৬ বছর আগে পেঁয়াজের মধ্যে থাকা এই কান্নাপ্রদায়ী উৎসেচকটিকে শনাক্ত করেছিলেন। কদিন আগে সেই উৎসেচকটিকে অকর্মা করে দেওয়ার কাজে সফল হয়েছেন নিউজিল্যান্ডের গবেষকরা। জিন স্লাইসিং প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে বাইরে থেকে ডিএনএ ঢুকিয়ে দিয়ে এরকম করা সম্ভব হয়েছে। সম্ভবপর করেছেন নিউজিল্যান্ড ইন্সটিটিউট ফর ক্রপ অ্যান্ড ফুড রিসার্চের বিজ্ঞানী ড. কলিন ইয়াডি এবং তাঁর সহযোগীরা। ক্রাইস্টচার্চ, নিউজিল্যান্ডের এই বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ১০ বছরের মধ্যে বিশ্বের সর্বত্র কান্নাহীন এই পেঁয়াজ উৎপাদন করা যাবে। এই প্রক্রিয়ায় পেঁয়াজের উগ্র ঝাঁঝ-গন্ধকেও নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। মুখে গন্ধ হওয়ার ভয়ে যাঁরা কাঁচা পেঁয়াজ খেতে চান না, এই পেঁয়াজ বাজারে এসে গেলে সুন্দর গন্ধের জন্যই তা খেতে চাইবেন। উল্লেখ্য, এখনকার পেঁয়াজ যখন কাটা হয়, তখন উৎসেচকটি নির্গত হয়ে পেঁয়াজের মধ্যেকার সালফার  যৌগের সঙ্গে নানা ধরনের বিক্রিয়ার মাধ্যমে চোখের ল্যাক্রাইমাল গ্রন্থিকে উদ্দীপিত করে জল ঝরিয়ে থাকে। এবার উৎসেচকটির উৎপাদন যখন বন্ধ করে দেওয়া হবে, তখন ওই সালফার যৌগগুলিই আকর্ষণীয় স্বাদ-গন্ধ তৈরি করতে সক্ষম হবে।

ব্লাড প্রেসার কমায়
আয়রনের অভাব? রক্তাপ্লতায় ভুগছেন? আলুর খোসা খান। আলুর খোসায় একসঙ্গে অনেকটা আয়রন মেলে। ১০০ গ্রাম আলুর খোসায় ৩.২৪ মিলিগ্রাম। আলুর খোসায় সোডিয়াম খুব কম, অথচ পটাসিয়াম বেশি।
ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে পটাসিয়ামের ভূমিকা যাঁরা জানেন, তাঁদের জন্য বার্তা হল ১০০ গ্রাম আলুর খোসায় ৪১৩ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম থাকে, সমপরিমাণ আলুর খোসায় সোডিয়াম থাকে মাত্র ১০ মিলিগ্রাম। ১০০ গ্রাম আপেলে পটাসিয়াম থাকে ১৭০ মিলিগ্রাম। সম ওজনের কলায় ৪০০ মিলিগ্রাম। পেঁয়াজে ২৪০ মিলিগ্রাম। আলুর খোসায় থাকা বিভিন্ন উপাদান হার্টের রোগভোগ হওয়া আটকায়, ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমায়। আলুর খোসায়  খাদ্যআঁশও অনেকটা। কোষ্ঠকাঠিন্যে যাঁরা ভোগেন, তাঁদের জন্য এই খাদ্য আঁশ জরুরি। ১০০ গ্রাম আলুর খোসায় খাদ্যআশঁ থাকে ২.৫ গ্রাম। ক্যালসিয়াম থাকে ৩০ মিলিগ্রাম। ফ্যাট মাত্র ০.১ গ্রাম। কার্বোহাইড্রেট ১২.৪৪ গ্রাম। ভিটামিন সি ১১.৪০ মিলিগ্রাম। খোসাসহ আলু খেলে ভিটামিন সি ছাড়াও ভিটামিন বি সিক্স, কপার এবং ম্যাঙ্গানিজ মেলে অনেকটা করে।
আলুর খোসায় শরীরের জরুরি ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট তথা উদ্ভিজ পুষ্টি উপাদান যেমন ক্যারোটিনয়েড, ফ্ল্যাভোনয়েড এবং ক্যাফিক অ্যাসিড থাকে। এগুলি প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট হিসেবে কোষকলাকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করে। এগুলি প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট হিসেবে কোষকলার ক্ষয় হওয়া আটকায়। ১০০ গ্রাম আলুর খোসায় প্রোটিন থাকে ২.৫৭ গ্রাম। এছাড়াও থাকে থিয়ামিন, রাইবোফ্ল্যাভিন এবং নিয়াসিন। তবে আলুর খোসা খেতে হবে গরম জলে পরিষ্কার করে ধুয়ে, তবেই। আলুর খোসা থেকে তৈরি ব্যান্ডেজ আগুনে পুড়ে যাওয়া ক্ষত তাড়াতাড়ি শুকোতে সাহায্য করে। অন্য ব্যান্ডেজের তুলনায় এর খরচও অনেক কম। কেরালার জুবিলি মিশন মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউটে গত ১৬-১৭ বছর ধরে বিভিন্ন হোটেল, রেস্তোরাঁ থেকে সেদ্ধ আলুর খোসা জোগাড় করে ব্যান্ডেজ বানিয়ে রোগীর শুশ্রুষা চলছে।   

Join our mailing list Never miss an update