ইউরিক অ্যাসিড কমবে, সুগারও; -ডাঃ পার্থপ্রতিম; ১১ জুলাই ২০০৯; উত্তরবঙ্গ সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত
ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রাধিক্য? পা ফুলেছে? গমপাতার রস নিয়মিত খেয়ে যান। দিনে দুবার সকাল/ সন্ধে। পারলে পাশাপাশি অন্য খাবার কমিয়ে ফলের রসও খান। এক মাস যেতে না যেতেই দেখুন ইউরিক অ্যাসিডের বাড়াবাড়ি বন্ধ। কতটা করে খাবেন? প্রতিবারে অন্তত দুই টেবিল চামচ পরিমাণ। মাথায় রাখবেন, হুইটগ্রাস পাউডার, ট্যাবলেটও পাওয়া যায়। গমপাতার রসের বিকল্প। তার আগে এই লেখাটা পুরো পড়ে ফেলুন। মুটিয়ে গেছেন? ওজন কমাতে, খাওয়া কমাতেই মুখ ব্যাজার? কুছ পরোয়া নেই। নিয়মিত গমপাতার রস খান। খিদে কমবে, শরীর সব ধরনের প্রাকৃতিক পুষ্টি পাবে। শরীরে পুষ্টি উপাদানের ভারসাম্য ফিরবে, ফ্যাট গলবে, ওজন কমবে। অ্যানিমিয়ায় ভুগছেন? গমঘাসের রস করে খান। নিয়মিত। অ্যানিমিয়া থেকে মুক্তি পাবেন। যোনিপথে দুর্গন্ধ? গমপাতার রসে নিষ্কৃতি মিলবে। আর্থ্রাইটিসের ভোগান্তি থেকে বাঁচবেন। হুইটগ্রাস পাউডার খাইয়ে সুগার কাউন্ট ৪২৫ থেকে ৩৬৫- তে নিয়ে যাওয়া গেছে ৮ দিনে। ১৫ দিনে সুগার কাউন্ট নামিয়ে ফেলা গেছে ২৮২-তে। ৬ সপ্তাহ বাদে ১২৩, স্বাভাবিক! হিমোগ্লোবিন কাউন্টও নর্মাল হয়ে গেছে। গমপাতার রস/ হুইটগ্রাস পাউডার নিয়মিত খেয়ে যাওয়ায় পাইলস তথা অর্শের ভোগান্তিই শুধু কমেনি, সেরে গেছে।
পুনের জারমিস ন্যাচার কিউর সেন্টারে রেকর্ড আছে। ঘন ঘন মূর্ছা (ফিট) যেত এক স্কুল ছাত্র, গমপাতার রস খাইয়ে তাকে মূর্ছা যন্ত্রণা থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা গেছে। গমপাতার রস এবং ন্যাচারোপ্যাথি ডায়েট চালিয়ে থ্যালাসেমিয়া থেকে ভালো হয়ে যাওয়ার খবর আছে। অ্যান উইগমোরের বই ‘বি ইয়োর ওন ডক্টর’-এ আছে। হুইটগ্রাস থেরাপিতে একজনের হাইব্লাড প্রেসার দু-সপ্তাহের শুশ্রুষার পর ৩৭ পয়েন্ট, তৃতীয় সপ্তাহের শুশ্রুষার পর আরও ১৭ পয়েন্ট কমিয়ে আনা গেছে। এক্ষেত্রে বলে রাখা দরকার, ন্যাচারোপ্যাথি ডায়েট হল, যখন গমঘাসের রস খাচ্ছেন, তখন পাশাপাশি খেতে হয় গাজর, করলা, শশা, লাউ, তুলসীপাতার রস। ভেজিটেবল স্যুপ। ভেজিটেবল স্যালাড। মাছটাছ অল্পস্বল্প। মাংস বন্ধ। শরীর সুস্থ স্বাভাবিক হলে ফের মাংসটাংস। যাঁদের গমপাতার রস শুধু খেতে ভালো লাগবে না, তাঁরা একটু মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। দি বুক অফ ড্যানিয়েল ইন দ্য ওল্ড টেস্টামেন্টে আছে রাজা নেবুনচাদনেজার পুরো সাতটি বছর স্রেফ গমঘাসের রস খেয়েই বেঁচে ছিলেন। তাতে তাঁর শারীরিক এবং মানসিক উজ্জীবন ঘটেছিল, ফের শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে পেরেছিলেন। শুধু গমপাতার রসে বেঁচে থাকার কারণ, গমপাতা কমপ্লিট ফুড।
আধুনিক যুগে গমঘাসের ব্যাপক উপকারিতার কথা রূপকথার মতো ছড়িয়ে পড়ে কানসাসের খাদ্যবিজ্ঞানী চালর্স স্নাবেলের গবেষণা সূত্রে. ১৯৩০ সালে। এরপর ডা. অ্যান উইগমোর ম্যাসাচুসেটস-বস্টনে হিপোক্রেটাস হেলথ ইন্সটিউট খুলে দিলেন। জানিয়ে দিলেন, ১৪ থেকে ২১ দিন বয়সি গমগাছের পাতায় যেসব পুষ্টি উপাদান আর খনিজ পদার্থ থাকে তা শরীরের জন্য সর্বরোগহর মহোত্তম ঔষধি। দেখা গেল, গমঘাসের রস সহজেই হজম হয় এবং হজমকারক হিসেবে কাজ করে। গমগাছের রসে থাকা তাজা ক্লোরোফিল গোটা শরীর থেকে বিষবর্জ্য সাফ করে। হাঁস, মুরগিদের কচি গমপাতা খাওয়ালে ডিম বড় হয়, বেশি হয় পুষ্টি বেশি হয় ডিমে।
গমপাতার রস শরীরে ঢোকা মানে মুখ থেকে শুরু করে মলাশয় পর্যন্ত সব জায়গা থেকে বিষবর্জ্য সাফসুতরো হওয়া। শুধু তাই নয়, অনাসৃষ্টি ঘটায় যে সব ভারী বিষ ধাতু, যেমন সীসা, ক্যাডমিয়াম, পারদ, অ্যালুমিয়াম এদের ঝেঁটিয়ে বিদেয় করে গমঘাসের রস। মাছ, সবজি, ফলটলের মাধ্যমে কীটনাশক ঢুকে থাকলে তাদেরও তাড়ায়। শরীরে জমে থাকা ওষুধের অবশেষ বের করে দেয়।