ডুয়ার্সের ল্যান্ডস্কেপ; -ডাঃ পার্থপ্রতিম; ২ আগস্ট, শনিবার ১৯৯৭; দৈনিক বসুমতী পত্রিকায় প্রকাশিত
বর্ষা রাতের শেষে চা-বাগিচার সবুজ গালিচায় আছড়ে পড়া সোনা রোদের আভা, অদূরেই মাথা তোলা হিমালয়, যৌবনমদে মত্ত পাগলা ঝোরা, অলস পায়ে হেঁটে চলা বুনো হাতির দল। এ সবই পরিচিত ল্যান্ডস্কেপ।
হ্যাঁ, এ সবের বাইরেও বানারহাটে রয়েছে আরও বহু আকর্ষণ। যা শুধু ভ্রমণবিলাসীদের নয়, ছা-পোষারও মন কেড়ে নেবে। শিলিগুড়ি জংশন থেকে আসা মিটারগেজ ট্রেনে চা-বাগিচার কোলে ছোট সুন্দর বানারহাট রেল স্টেশন। বানারহাট থেকে ৯ কিলোমিটার দূরে সীমান্তগ্রাম চামুর্চি। চামুর্চি থেকে হাঁটাপথে পাহাড়ি পাকদণ্ডী ধরে পৌঁছে যাওয়া যায় মহাকাল মন্দিরে। পাহাড়ে ট্র্যাকিং করা যাদের নেশা, এ পথ তো তাদের কাছে স্বর্গরাজ্য। আপনার ভেতরে যদি একটি রোমাঞ্চপিয়াসী মন থাকে তবে অপ্রচলিত পথে মন্দিরে যাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। প্রকৃতির এক অদ্ভুত খেয়ালে পাহাড়ের গুহার ভেতর নেমে এসেছে পাথরের তৈরি লম্বা লম্বা শিবের জটা। এগুলি আবার ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। জটা অবিরাম টুপটাপ ঝরে পড়ছে জলবিন্দু। এই জলে রয়েছে কিছু দুরারোগ্য চর্মরোগ আরোগ্য করার ক্ষমতা। ভূবিজ্ঞানীদের পরিভাষায় এ গুহাকে বলে স্ট্যালাকটাইট-স্ট্যালাগমাইট কেভ (Stalactite-stalagmite cave)। চুনাপাথর বা ক্যালসিয়াম কার্বোনেটের সঙ্গে পাহাড়ি আম্লিক জলের অনেক রাসায়নিক ভাঙাগড়ার খেলার চলে এই আঁধারঘেরা গুহায়। মহাকাল পাহাড়ের পাশেই চলছে ডলোমাইট সংগ্রহের খাদ খনন। এর নিচেই দেখতে পাবেন ছোট সিমেন্ট ও সার কারখানা।