হাঁ করুন কিংবা হাই তুলুন; -ডাঃ পার্থপ্রতিম; ১০ ডিসেম্বর ২০০৫; উত্তরবঙ্গ সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত
শহুরে জীবনের প্রতিযোগিতা এবং মানসিক চাপ কমাতে প্রতিদিন অল্প সময় বার করে নিয়ে, কিছু ব্যায়াম যদি করা যায়, তাহলে সহজেই মন মর্জিকে চাঙ্গা করে যেতে পারে। সকলের সামনে করতে হয়তো লজ্জা করতে পারে, সেক্ষেত্রে একটু নির্জনে যে কোনো জায়গায় করতে পারেন। নিম্নলিখিত ব্যায়ামগুলি প্রয়োজন বুঝে বেশি বার করুন আর হাতেনাতে ফল উপভোগ করুন।
রাগ কমাতে
প্রথমে মুখটা হাঁ করবেন। গভীর করে শ্বাস নিন। তারপর কোনোরকম আওয়াজ না করে নিঃশ্বাসটা ছেড়ে দিন। অন্য একভাবেও রাগ কমানো যেতে পারে। চোখ বন্ধ রেখে বা খুলে গভীর প্রশ্বাস নিন এবং ধীরে ধীরে নিঃশ্বাস ছাড়ুন। এটি করার সময় সম্পূর্ণ মনযোগ দেবেন শ্বাসপ্রশ্বাসের দিকে। এরকম ক্রমান্বয়ে বেশি সময় ধরে করুন।
হতাশা কমাতে
হতাশা থেকে নিজেকে তাড়াতাড়ি জাগিয়ে তোলার ক্ষেত্রে হৃদপিন্ডের ব্যায়াম খুব কাজ দেয়। কিছু পরিমাণ ওজনের জিনিস হাতে নিয়ে হাঁটুন। কয়েক মিনিট পর হাঁটা থামিয়ে সামান্য লাফান। এটি একধরনের উপায়। অথবা অ্যারোবিকসের একটি পাঠ্যক্রমও নেওয়া যেতে পারে। ছন্দোবদ্ধ ভজনার সঙ্গে এই ধরনের ব্যায়াম হতাশা কমাতে খুবই সাহায্য করে। অল্প সাঁতার কাটুন। সাঁতার মানসিকভাবে মানুষকে চাঙ্গা করতে পারে সহজেই। এছাড়াও সিঁড়িভাঙা, দড়ি লাফানো, সাইকেল চালানো, কোনো সুন্দর প্রাকৃতিক স্থানে মানসিক হতাশা কাটানোর ক্ষেত্রে খুবই কাজের হয়।
হাসি
মনের অবস্থা খুবই তিক্ত হলে, সেটা ক্রমশ ফিকে করে ফেলার উপায় হল হাসা। জোকসের বই পড়ুন, হাসির গান শুনুন, নাহলে জোর করেই হাসুন এবং দেখুন, কত তাড়াতাড়ি নিজেকে অনেকটা সহজ, প্রাণবন্তু করে তুলতে পারছেন।
চাপ কমায়
মানসিক চাপটা প্রধানত মাথাতেই সৃষ্টি হয়। ক্রমশ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। চুলের মধ্যে দু-হাতের আঙুলগুলিকে চালিয়ে দিন। অনেকটা চুল হাতের মধ্যে নিয়ে ক্রমশ গোড়ার দিকে যান। তারপর উপর দিকে চুলগুলিকে ধরে টানুন। এইভাবে দু-এক মুহূর্ত ধরে থাকতে হবে। এই পদ্ধতিটি সম্পূর্ণ মাথার খুলিতে করতে হবে। অল্প ব্যথা লাগলেও এটি মানসিক চাপ কমাতে খুবই উপযোগী।
কপাল মালিশ
হাতের পাঁচ আঙুলের সাহায্যে এটি করতে হবে। কপালের দু-দিকে বুড়ো আঙুলের মাংসল অংশ দিয়ে টিপে ধরে মধ্যমার মাংসল অংশের সাহায্যে কপালের মাঝখান থেকে দু-ধারে আলতোভাবে মালিশ করার মতো করতে হবে। হাতের অন্য আঙুলগুলিকে এইসময় ভারসাম্য রক্ষার কাজে লাগাতে হবে। এই সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যাতে কপালে নখ বা আঙুলের শক্ত অংশ না লাগে। কপাল জুড়ে আলতো হাতে মালিশ, মাথা হালকা করে সহজেই।
একঘেয়েমি কাটাতে
হাত দুটি দুপাশ থেকে উপর দিকে তুলে দিন। তারপর আবার দু-হাত নামিয়ে আনুন। এটি শরীরের সমস্ত জড়তা/ আলস্য কাটিয়ে দেয়। আর শরীর সতেজ হয়ে উঠলে মনও সতেজ হয়ে ওঠে।
হাই তুলুন
শরীর ও মনকে দ্রুত সতেজ করে তুলতে হাই তোলার জুড়ি নেই। কতটা তাজা বা ক্লান্ত রয়েছেন, হাই তোলার মাধ্যমে তা যেমন বুঝে যাবেন, তেমনি হাই তোলার মাধ্যমে দ্রুত সহজেই মানসিকভাবে সুস্থ হতে পারেন আপনি।
অসহায় ভাব কাটাতে
নিঃশ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম, হাঁটা কিছুটা দৌড়নো এই তিনটি ব্যাপারই মানসিকভাবে সুস্থ করে তুলতে পারে। সুতরাং মন খারাপ লাগলে ভয় ভয় করলে এই কসরতগুলি করতে শুরু করুন।