হৃদরোগ আটকাতে ব্যায়াম

হৃদরোগ আটকাতে ব্যায়াম

হৃদরোগ আটকাতে ব্যায়াম; ডাঃ পার্থপ্রতিম; ২৪ নভেম্বর ২০০৭, পৃষ্টা- তিন; উত্তরবঙ্গ সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত
জীবনের সব সাফল্যই কষ্টার্জিত, শরীরকে সুস্থ ও কর্মঠ রাখতে গেলে তার জন্য সঠিকভাবে পরিশ্রম করতে হবে। সজীব ও সবল রাখতে হবে সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। ব্যায়াম বা এক্সারসাইজ হল সঠিক নির্দেশ মেনে, শরীর চালনার মধ্য দিয়ে দেহ ও মনকে নীরোগ রাখার বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি। হৃদরোগ প্রতিরোধ ও নিরাময় করতে নিয়মিত ব্যায়ামের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। হৃদয়ের পেশিগুলিকে সুস্থ সবল রাখতে চাই পর্যাপ্ত অক্সিজেন  ও পুষ্টি। করোনারি ধমনি নিয়মিতভাবে হৃদযন্ত্রে তা সরবরাহ করে। রক্তের মধ্যে কোলেস্টেরল বা চর্বির পরিমাণ বেশি হলে সেই চর্বি কারোনারি ধমনির মধ্যে এক বা একাধিক স্থানে জমতে থাকে, ফলে হৃদপেশিগুলিতে রক্ত সরবরাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়।
    নিয়মিত ব্যায়ামের ফলে করোনারি ধমনির ভেতরে রক্তচাপ বেড়ে যায়। সে কারণে করোনারি ধমনির অন্তর্বর্তী আয়তন ক্রমশ বাড়তে থাকে, ধীরে ধীরে এই ধমনি অনেক বেশি রক্তচাপ নেওয়ার ক্ষমতা অর্জন করে। হর্টের পেশি বেশি পুষ্টি ও অক্সিজেন পেয়ে সুস্থ-সবল হয়ে ওঠে। করোনারি ধমনির শাখা-প্রশাখার মধ্যেও অনেক বেশি রক্ত প্রবাহিত হয়। ফলে ধমনির কোনো নির্দিষ্ট শাখা যদি বন্ধ হয়ে যায়, তখন আশেপাশের শাখা ধমনিগুলি প্রসারিত হয়ে হৃদপেশির রক্ত জোগান সঠিক রাখে। রক্তে চর্বি ও কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমে যায়। কমে যায় করোনারি থ্রম্বোসিসের আশঙ্কা। শুধু হৃদপেশিতে নয়, দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-যন্ত্র ও তন্ত্রে রক্ত সঞ্চালনের হার বেড়ে যায়। ফলে শরীরের সকল মাংসপেশি, অঙ্গ-যন্ত্র সবল ও সজীব হয়ে ওঠে। দেহ হয় রোগমুক্ত। শারীরিক ও মানসিক অবসাদ দূর হয়। মনে আত্মবিশ্বাস জন্মায় ও ঘুম ভালো হয়। ঘুম ভালো হওয়াটা হৃদরোগীর জন্য অন্তত জরুরি।
    উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল ও ব্লাডসুগার কমে আসে। এর ফলে হার্ট ডিজিজ থেকে মৃত্যুর আশঙ্কা অনেকাংশেই কমে যায়।

    ব্যায়াম বিভিন্ন রকমের হয়। সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা, হাঁটা, অ্যারোবিক ব্যায়াম, মাল্টিজিম ব্যায়াম, যোগ ব্যায়াম এবং আরো কিছু পদ্ধতি প্রচলিত আছে।
    হাঁটা হৃদরোগীর পক্ষে এক সুন্দর ব্যায়াম। কার্ডিওলজিস্টরা বলেন, ওয়াকিং ইজ দ্য বেস্ট এক্সারসাইজ। আজকাল গাড়ির সংখ্যা বেশি হওয়ার জন্য স্বাভাবিক হাঁটাচলার সুযোগ কমে এসেছে। হাঁটা বা ভ্রমণের জন্য ভোরবেলাই ভালো। তবে যাঁদের সকালে অসুবিধা আছে তাঁরা গোধূলি বা সন্ধ্যায় হাঁটবেন যে রাস্তায় বেশি গাড়ি চলাচল করে সেখানে না হাঁটা ভালো। পার্ক, খেলার মাঠ ভ্রমণের সবচেয়ে উপযুক্ত জায়গা। হাঁটার সময় পোশাক হবে ঢিলেঢালা। চামড়ার জুতো বা রবারের চটি না পরে কাপড়ের আরামদায়ক কেডস ও মোজা পরবেন। হাঁটার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে মেরুদন্ড যেন সোজা থাকে। শুরুতে আস্তে হাঁটুন, মাঝে দ্রুত ও শেষে আবার হাঁটার গতি কমিতে আনতে হবে। হার্ট ডিজিজে যাঁরা একবার আক্রান্ত হয়েছেন তাঁরা প্রথমদিকে ১০-১৫ মিনিট আস্তে আস্তে হাঁটুন। পরে ধীরে ধীরে সময়সীমা ও হাঁটার গতিবেগ বাড়াবেন। কোনো সময় যদি কষ্ট হয় তৎক্ষণাৎ বসে বা শুয়ে বিশ্রাম নিন।
    সাইকেল চালানো এক ধরনের অ্যারোবিক এক্সারসাইজ অর্থাৎ শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম। এতে হৃদযন্ত্র ও ফুসফুস দুই-ই ভালো থাকে। সপ্তাহে অন্তত তিন-চারদিন আধ ঘন্টা করে সবারই সাইকেল চালানো উচিত। তবে যাঁরা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের ঘন্টায় ৫ মাইলের বেশি বেগে সাইকেল না চালানোই ভালো। তাছাড়া আপনি যদি আগে নিয়মিত সাইকেল না চালিয়ে থাকেন, তাহলে হার্ট অ্যাটাকের পর সাইকেল চালাবেন না।
    সাঁতার কাটা একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যায়াম অর্থাৎ শরীরের মোটামুটি সব অঙ্গ সাঁতারের সময় নড়াচাড়া করে।  সাঁতারে দেহের প্রধান প্রধান মাংসপেশি যেমন-কোমর, হাত, কাঁধ, পা, বুক ও পিঠ সুদৃঢ় ও মেদমুক্ত হয়। সাঁতারে হৃদপিন্ড ও ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়ে। যাঁদের হৃদরোগ ধরা পড়েছে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া তাঁদের সাঁতার কাটা উচিত নয়।
 

   ঘরের মধ্যে মিউজিক অর্থাৎ আবহ সংগীতের তালে তালে এই ব্যায়াম করা হয়। এটি অনেকটা নাচের মতো উপভোগ্য। মহিলাদের মধ্যে অ্যারোবিক ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে। এতে ব্যায়ামজনিত ক্লান্তি অনেক কম হয়। মনের মধ্যে কিছুটা উচ্ছাস ও আনন্দ আসে। দেহের ক্ষিপ্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চর্বি কমে যায়। যেসব মহিলাদের দেহ মেদবহুল তাঁরা এ থেকে ভালো ফল পাবেন।
    মাল্টিজিম একটি আধুনিক ব্যায়ামাগার। শহরের বিভিন্ন সম্ভ্রান্ত অঞ্চলে হেলথ ক্লাব গড়ে উঠেছে। মাল্টিজিম হেলথ ক্লাবগুলির অন্যতম উপকরণ। মাল্টিজিমের মধ্যে শরীরের বিভিন্ন অংশের এক্সারসাইজের জন্য আলাদা আলাদা যন্ত্র লাগানো থাকে। যেমন- সাইড টুইস্টিং সিট -আপ আরো কত কিছু। শরীরের বাড়তি মেদ কমাতে এসব খুবই কার্যকরী। হৃদরোগ শনাক্ত হওয়ার পর মাল্টিজিমে গিয়ে ভারি ব্যায়াম করা উচিত নয়।
    ব্যায়াম করার সময় শরীরে অক্সিজেনের চাহিদা বেড়ে যায়। স্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায় হৃদস্পন্দনের হার। কিন্তু হার্টবিট মাত্রাধিক হয়ে গেলে হৃদরোগীর ক্ষেত্রে তা থেকে বিপদ ঘটতে পারে। তাই যেরকম এক্সারসাইজই করুন না কেন তার ফাঁকে মাঝে মাঝে পালস বিট গুনে নেবেন। যখন দেখবেন এই মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে সঙ্গে সঙ্গে ব্যায়াম বন্ধ করে বিশ্রাম নিন।
    হৃদস্পন্দনের সর্বোচ্চ মাত্রা নির্ভর করে দুটি বিষয়ের উপর- ব্যাক্তির শারীরিক সুস্থতা ও তাঁর বয়স। এবার জেনে নেওয়া যাক কোন ব্যক্তি সর্বোচ্চ কত পালস রেট পর্যন্ত এক্সারসাইজ করতে পারেন।
যোগ ব্যায়াম :- সাধারণত শরীরকে সুস্থ রাখা, রোগাক্রান্ত শরীরকে রোগমুক্ত করা ও পরমাত্মার সঙ্গে অন্তরাত্মার মিলনের মাধ্যমে হিসেবেই প্রাচীন ভারতীয় ঋষি-মনীষীরা যোগ ব্যায়াম অভ্যাসের প্রচলন করেন। হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে ও রোগমুক্তি পেতে যোগাসন খুবই কার্যকরী। মহর্ষি পতঞ্জলি বলেছেন, ‘স্থিরে সুখমাসনম’ অর্থাৎ স্থিরভাবে সুখকর অবস্থানই আসন। যোগাসন ছাড়াও আছে বহুবিধ মুদ্রা ও প্রাণায়াম। হৃদব্যাধির তীব্রতা যখন বেশি থাকে তখন ভালোভাবে হাঁটাচলার পর রোগী প্রথমদিকে সকাল ও বিকালে খোলামেলা জায়গায় ভ্রমণ-প্রাণায়াম করতে পারেন। প্রাণায়াম হল-প্রাণ ও অপান বায়ুর পরস্পর সংযোগ। যোগী যাঞ্জবল্কের ভাষায়, ‘প্রাণাপান সমাযোগঃ প্রাণায়াম ইতিরিতঃ।’ সহজ কথায় ভ্রমণ প্রাণায়াম হল হাঁটার সময় পদ্ধতিগত ভাবে শ্বাস-প্রশ্বাসের নিয়ন্ত্রণ।

    হাঁটার সময় প্রতি পদক্ষেপের সঙ্গে মনে মনে ১-২-৩-৪ উচ্চারণ করে উভয় নাসারন্ধ্র দিয়ে শ্বাস নিন। তারপর অবার আগের মতো ১-২-৩-৪ উচ্চারণের সঙ্গে শ্বাস ত্যাগ করুন। এভাবে একমাস অভ্যাস করার পর শ্বাস নেওয়ার ও ছাড়ার সময় বাড়িয়ে দিন। যেমন পঞ্চম ও ষষ্ঠ পদক্ষেপ পর্যন্ত শ্বাস ছাড়ুন। মনে রাখবেন শ্বাসগ্রহণ ও শ্বাসত্যাগ এই দুইয়ের উপর মনঃসংযোগ করতে হবে। কোনো মতেই শ্বাসধারণ করবেন না। তাড়াহুড়ো না করে ধীরে ধীরে এবং সংযত পদচালনার ভ্রমণ-প্রাণায়াম করুন। শ্বাস গ্রহণের সময় লক্ষ্য রাখুন কত বেশি বায়ু আপনি ফুসফুসে ভরে নিতে পারছেন এবং শ্বাস ছাড়ার সময় দেখুন ধীরে ধীরে কত বেশি বায়ু ছাড়তে পারছেন।
    এমন প্রাণায়ামের পর বাড়ি ফিরে শবাসন করুন। শব অর্থাৎ মড়ার মতো নিঃস্পন্দভাবে শুয়ে বিশ্রাম নিতে হবে। চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ুন, পা দুটি লম্বা করে দিন। দু পায়ের মাঝে এক থেকে দেড় ফুট ফাঁক থাকবে। পায়ের গোড়ালি ভিতর দিকে থাকবে এবং আঙুলগুলি বাইরের দিকে থাকবে। হাত দুটি লম্বালম্বিভাবে নিজের সুবিধা মতো শরীরের দু-পাশে রেখে  শরীরটাকে যতটা সম্ভব আলগা করে দিন।
প্রথমে শরীরের নিচের  অংশ, পায়ের বুড়ো আঙ্গুল থেকে শুরু করে  পায়ের  অন্যান্য আঙুল, পায়ের পাতা, হাঁটু, থাই, কোমর থেকে সমস্ত পা অর্থাৎ প্রতিটি অঙ্গকে আলগা করে দিতে হবে। একইভাবে পিঠ, বুক, কাঁধ, ঘাড় ও সব শেষে মাংসপেশি গুলিকে শিথিল করে দিতে হবে। শরীরের সঙ্গে সঙ্গে মন হবে শান্ত-ধীর-চিন্তাশূন্য। আসন অবস্থায় যদি ঘুম আসতে থাকে তবে বুঝতে হবে আসনটি ঠিকমতো অভ্যাস হচ্ছে। উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগীদের পক্ষে শবাসন অবশ্য করণীয়। এই আসনে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ- তন্ত্র ও হৃদয় সম্পূর্ণ বিশ্রাম পায়। রোগের উপসর্গ গুলি যখন কমে আসবে তখন সকালে প্রাতঃকৃত্য শেষ করে ও বিকালে ভ্রমণ প্রাণায়ামের পর যোগমুদ্রা, অর্ধচন্দ্রাসন, পদহস্তাসন অভ্যাস করা যায়।

     যোগমুদ্রা : পদ্মাসনে বসে হাতের তালু উপর দিকে করে কোলের ওপর রাখুন। এবার দম ছাড়তে ছাড়তে কোমর থেকে দেহের ওপরের অংশ সামনে বাঁকিয়ে মাটিতে লাগান। স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিন। এভাবে ১০-১৫ সেকেন্ড থাকার পর শ্বাস নিতে নিতে সোজা হয়ে বসুন। তিন-চারবার করে অভ্যাস করুন। এই মুদ্রায় কোষ্ঠ পরিষ্কার হয়, পেটে চর্বি জমতে পারে না, হৃদযন্ত্র সবল হয়।

    অর্ধচন্দ্রাসন :- এই আসনটি অভ্যাসের সময় সমস্ত দেহটিকে আধখানা চাঁদের মতো দেখায়, তাই এই নাম। পা দুটি জোড়া হয়ে দাঁড়ান। হাত দুটি নমস্কারের ভঙ্গিতে জোড়া করে মাথার উপরে তলুন। হাত-কানের সঙ্গে লেগে থাকবে, এবার কোমর থেকে শরীরের উপরের অংশ যতদূর সম্ভব পেছনদিকে বাঁকিয়ে দিন। আবার ধীরে ধীরে সোজা হয়ে দাঁড়ান। এই আসন ৩-৪ বার অভ্যাস করুন।

    পদ-হস্তাসন:- পা দুটি জোড়া করে সোজা হয়ে দাঁড়ান। এরপর দম ছাড়তে ছাড়তে কোমর থেকে দেহের  উপরের অংশ বাঁকিয়ে সামনে ঝুঁকে হাত দু'টি মাটিতে লাগান। এ অবস্থায় দম স্বাভাবিক থাকবে। এরপর দম নিতে নিতে প্রথম অবস্থায় ফিরে যেতে হবে। এই আসনে প্যাংক্রিয়াসে চাপ পড়ার জন্য মূত্রে শর্করা কমে যায়, ক্ষুধা বাড়ে ও হৃদপেশি সবল হয়।
    ব্যায়াম না করার অজুহাত :-ব্যায়ামের উপকারিতা মনে মনে উপলদ্ধি করলেও বিভিন্ন অজুহাতে অনেকেই ব্যায়াম করাকে এড়িয়ে যান। তাঁরা বলেন : (১) এখনকার  দিনে যা খাওয়া, শরীর কতটুকুই বা পুষ্টি পায়? এর উপর ব্যায়াম করলে -আর বাঁচতে হবে না। (২) ব্যায়াম করার মতো সময় হাতে নেই, প্রচন্ড কাজের চাপ। (৩) ব্যায়াম-ট্যায়াম বড়োলোকের জিনিস, গরিবের জন্য এসব নয়। (৪) পেটের জন্য সারাদিন প্রচন্ড ছোটাছুটি, তাতেই যথেষ্ট ব্যায়াম হয়। এর উপর আরো কিছু করতে গেলে শরীর অসুস্থ হয়ে পড়বে। (৫) ব্যয়াম করতে হলে উযুক্ত পোশাক পরিচ্ছদ দরকার, ওসব কেনার পয়সা নেই। (৬) আজ থাক, কাল থেকে...।

    দৈনন্দিন জীবনে মধ্যবিত্ত মানুষেরা যা খাবার খান, তাকে সঠিকভাবে হজম করতে পারলে দেহ প্রচুর শক্তির যোগান পেতে পারে। খাবার খাওয়াটাই মূল কথা নয়। খাদ্যকে পরিপাক করে দেহে আত্মস্থ করাই পুষ্টির মূল চাবিকাঠি। নিয়মিত ব্যায়ামে পরিপাক শক্তি বৃদ্ধি পায়। ফলে খাদ্য সঠিকভাবে ব্যবহৃত হয়ে দেহকে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করে তোলে।
    প্রতিদিন ২০-২৫ মিনিট ব্যায়াম করলেই শরীর সুস্থ রাখা যায়। আমরা যদি সঠিকভাবে হিসাব করি , তবে দেখব এর চেয়ে বহুগুণ বেশি সময় আমরা বাজে ভাবে নষ্ট করি। তাছাড়া শারীরিক অসুস্থতার জন্য আমাদের যে শ্রমঘন্টা নষ্ট হয়, তার মোট বার্ষিক হিসাবও কম নয়।
    যাঁদের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো নয়, তাঁদের ব্যায়াম করা অত্যন্ত প্রয়োজন। কারণ, এতে চিকিৎসাখাতে ব্যায় অনেক কমে যায়। বর্তমান যুগে বিভিন্ন চিকিৎসা প্রযুক্তির  প্রভাবে (যেমন- আলট্রাসাউন্ড, স্ক্যান, ইকোকার্ডিওগ্রাফি, প্যাথোলজি ইত্যাদি) রোগনির্ণয় চিকিৎসার ব্যয় ক্রমেই বেড়ে চলেছে। তাই গরিব মানুষদের আগে থেকে সতর্ক হতে হবে।
ব্যায়ামের সময় শরীরের বিভিন্ন অংশে প্রয়োজন অনুসারে অক্সিজেন ও পুষ্টি সরবরাহ হয়, যা অন্য সব প্রাত্যহিক কাজকর্মে হয় না। এছাড়া যোগব্যায়াম, মুদ্রা এসব অভ্যাসের ফলে দেহের বিভিন্ন হরমোনাল গ্রন্থিগুলি সক্রিয় হয়, যা শরীর  রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

যে কোনো ঢিলে ও হালকা পোশাক পরেই ব্যায়াম করা যায়।
    আজ নয়, কাল-পরশু থেকে ব্যায়াম শুরু করা যাবে। এ ভাবনা যাঁদের মাথায় আছে তাঁদের কাল মহাকালে পর্যবসিত হয়। এ প্রসঙ্গে বেশি কথা না বলে মহাবীর রাবণের এক উপদেশ স্মরণ করতে পারি- ‘শুভস্য শীঘ্রম/ অশুভস্য কালহরণম।’       

Join our mailing list Never miss an update