নারী প্রগতি : কর্মশালা বানারহাটে; ৫ বর্ষ ১১০ সংখ্যা, ২২ নভেম্বর, শুক্রবার ১৯৯৬; দৈনিক বসুমতী পত্রিকায় প্রকাশিত
সূদূর অতীত থেকে বর্তমানকাল পর্যন্ত নানানভাবে নারীরাই শোষিত হচ্ছে। সতীদাহ থেকে আজকের ঘৃণ্য পণপ্রথা-এই দীর্ঘ শোষণের শিকার নারীরাই। সম্প্রতি কলকাতার গণ-উন্নয়ন পর্ষদের সহযোগিতায় ডুয়ার্স এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড অ্যাডভান্সমেন্ট রিভেলি (ডিয়ার) আয়োজিত নারী প্রগতির ওপর এক- কর্মশালায় প্রধান অতিথির ভাষণে গণ-উন্নয়ন পর্ষদের সহ অধিকর্তা বিদ্যুৎ দেবনাথ এ কথা বলেন।
শ্রী দেবনাথ নারীর অধিকার রক্ষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করেন। মহিলা শিল্পদ্যোগীদের জন্য বিভিন্ন সরকারি যোজনার বিষয় তিনি বিস্তারিত আলোচনা করে বলেন, প্রশাসন, স্থানীয় পঞ্চায়েত ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সকলে মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই নারী প্রগতি সম্ভব।
কর্মশালায় স্বাগত ভাষণে ডিয়ারের সাধারণ সম্পাদক ডাঃ পার্থপ্রতিম বলেন, নারীর স্বাধীনতা এবং অধিকারের মূল চাবিকাঠি লুকিয়ে আছে অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতার ওপর। এই অঞ্চলে চা-শিল্প ছাড়া অন্য কোন শিল্প গড়ে না ওঠার জন্য বহু মহিলা অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে রয়েছেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে মহিলাদের উপযোগী শিল্প গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দেন।
চিকিৎসক অলি দত্ত মহিলাদের বিভিন্ন শারীরিক অসুবিধা ও তার প্রতিকারের বিষয়গুলি আলোচনা করে নারীদের স্বাস্থ্যগত চিত্র কর্মশালায় তুলে ধরেন। তিনি বলেন, শরীরকে ঘিরে সংস্কার এবং প্রাচীন ধ্যানধারণা নারী সমাজকে পিছিয়ে রেখেছে। অকারণে লজ্জা এবং সংকোচ নারীদের রোগ নির্মূল করার ক্ষেত্রে এক বিরাট বাধা বলে তিনি মন্তব্য করেন। ডুয়ার্সের বিভিন্ন কুটিরশিল্প গড়ে তোলার গুরুত্ব ও সম্ভাবনার কথা বলেন ডিয়ারের মহিলা প্রগতি উপসমিতির সম্পাদিকা সুকন্যা বসু এবং বানারহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ছায়া চক্রবর্তী।
কর্মশালায় আগত বিভিন্ন শিক্ষার্থীর মধ্যে কৃষ্ণা নন্দী, অনিতা সিং ভুঁই, গীতা কর, আরতি দাস স্থানীয় মহিলাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা উল্লেখ করেন। ডিয়ারের পক্ষ থেকে কর্মশালার শেষে মহিলাদের উন্নয়নে প্রাথমিকভাবে কিছু কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।