ভালো ঘুম হয় আখরোট খেলে; -ডাঃ পার্থপ্রতিম; ৪ অক্টোবর ২০০৮ পৃষ্ঠা- নয়; শনিবাসর; উত্তরবঙ্গ সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত
ভালো ঘুম চাই? প্রতিদিন ৩০ গ্রাম করে আখরোট খান। আখরোট খেলে রক্তে মেলাটোনিন নামে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের উৎপাদন তিন গুনের মতো বেড়ে যায়। যা ভালো ঘুম উপহার দেয়। জানিয়েছেন আমেরিকার চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা। আখরোট ভিটামিন ই জাতীয় উপাদান থাকে প্রচুর। যা স্তন ক্যানসার, প্রস্টেট ক্যানসার এবং ফুসফুসের ক্যানসার হওয়া আটকাতে পারে। আখরোট এবং আখরোটের তেল হার্টকে সুস্থ রাখে। আখরোটের তেল খেতে হবে এক চা চামচ করে প্রতিদিন। আখরোট ধমনিপথে রক্তকে জমাট বাঁধতে দেয় না। আখরোট বুদ্ধিগম্যতা বাড়ায়। হাঁপানি, রুমাটইড আর্থ্রাইটিসে, একজিমা এবং সোরিয়াসিসের মতো ত্বকপ্রদাহী রোগেও আখরোট খুবই উপকারী।
ফুলকপিতে থাকে জলে দ্রবনীয় ভিটামিন বায়োটিন। এটি খুশকির বাড়াবাড়ি রোধ করে। ফুলকপিতে থাকে ক্যানসার প্রতিরোধী যৌগ ইনডোল-থ্রি-কারিনোল। থাকে সালফোরাফেন রাসায়নিক যা ফুসফুসে ক্যানসার হওয়া আটকাতে পারে। প্রস্টেটে ক্যানসার কোষের বাড়বৃদ্ধি আটকায়। ফুলকপি, বাঁধাকপি যাঁরা নিয়মিত খান, তাঁদের রুমাটাইড আর্থ্রাইটিসের ভোগান্তিও হয় কম।
ডিমে আছে লুটেইন এবং জিয়াক্সনথিন নামে দুটি প্রাকৃতিক উপাদান। এরা চোখে ছানি পরা এবং অক্ষিপটের রোগ ম্যাকুলার ডিজেনারেশন হওয়া আটকায়। কিউই ফলেও মেলে লুটেইন এবং জিয়াক্সানথিন। উল্লেখ্য, মাতৃদুগ্ধের পর ডিমের প্রোটিনই হল সেরা প্রোটিন।
মুটিয়ে যাচ্ছেন? প্রতিদিন কয়েকটা করে আমন্ড খান। শরীরে চোলেসিস্টোকিনি নামে হরমোনের উৎপাদন বাড়বে, খাবার-দাবার অল্প খেলেই পেটটা ভরে গেছে মনে হবে। আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিকাল নিউট্রিশনে জানিয়েছেন গবেষকরা। আমন্ড তথা কাঠবাদাম খেলে স্মৃতিভ্রংশ রোগে ভোগার আশঙ্কাও কমে। আমন্ড খেলে হার্টের শুশ্রুষা হয়, হার্টের রোগভোগান্তির আশঙ্কা কমে। আমন্ড শরীরের হজমতন্ত্রকে তন্দুরস্ত রাখে। সকাল সকাল একটা বা দুটো সেদ্ধ ডিম বা ডিমের পোচ খেয়ে নিন। অন্য খাবার কম খেতে হবে। ক্যালোরি কম যাবে শরীরে।
পেয়ারা খান। দিনে দু-বারে দুটো। খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমবে। ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়বে। ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে আসবে।
ব্লাড সুগারের দৌরাত্ম্য রোধ করতে আলুর খোসা খান। ইঁদুরদের উপর পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, আলুর খোসা ব্লাড সুগারের মাত্রাধিক্য হ্রাস করে। আলুর খোসায় লেকটিন নামে প্রোটিন থাকে, টিউমারের বাড়বৃদ্ধি আটকায় এই লেকটিন। মুখমন্ডলকে ব্লেমিশযুক্ত অর্থাৎ ছোপহীন করতে নিয়মিত আলুর রস লাগান। ব্রিটিশ জার্নাল অফ মেডিসিন-এ জানানো হয়েছে নিয়মিত কিছুটা করে অ্যাসপারাগাস খেলে ইনসুলিনের সক্রিয়তা বাড়ে, ফলে শরীর বাড়তি সুগার দ্রুত আত্মস্থ করতে পারে। খানিকটা অ্যাসপারাগাস খেলে দিনে যতটা ফোলেট তথা বি গোত্রের ভিটামিন মেলে, তাতে দিনে যতটা প্রয়োজন তার ৬০ শতাংশই মেলে। রক্তে হোমোসিস্টিন নামক রাসায়নিকের অতি-আধিক্য ঘটলে হার্টের রোগভোগান্তির আশঙ্কা থাকে। ফোলেট হোমোসিস্টিনের মাত্রা হ্রাস করে। অ্যাসপারাগাসে অ্যাসপারাজিন নামে প্রাকৃতিক রাসায়নিক মেলে, যা শরীর থেকে জলীয় পদার্থ নিঃসরণে সাহায্য করে। অ্যাসপারাগাসে থাকে ইনসুলিন নামে এক ধরনের কার্বোহাইড্রেট, যা নিজে হজম হয় না, কিন্তু হজমপ্রণালীতে বন্ধু ব্যাকটিরিয়াদের সংখ্যাধিক্য ঘটিয়ে পরিপাক তন্ত্রের স্বাস্থ্যরক্ষা করে। অ্যাসপারাগাস যৌনতাড়নাও বৃদ্ধি করে। কারণ অ্যাসপারাগাসে প্রচুর সেক্স ভিটামিন (ভিটামিন ই) থাকে।
অনিদ্রা দূর করতে প্রতিদিন রাতের খাবারের সঙ্গে একটা প্রমাণ সাইজের পেঁয়াজ খান। অথবা কপালে, মাথায় তিলতেলের মালিশ নিয়ে শুতে যান। মাঝেমধ্যে সরষের তেল দিয়ে পোস্তবাটা মাখা খান। কোন কোনদিন বেগুন পোড়া।