জল সরবরাহ প্রযুক্তির ইতিকথা; ডাঃ পার্থপ্রতিম। জ্ঞান ও বিজ্ঞান (প্রতিষ্ঠাতা: আচার্য সত্যেন্দ্রনাথ বসু) ৪৪তম বর্ষ চতুর্থ সংখ্যা
‘জল জীবনধারনের অপরিহার্য উপাদান’- একথা আমাদের অজানা নয়। বহু প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ জলের প্রয়োজনীয়তা ও ব্যবহার সম্বন্ধে সচেতন ছিল। বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ সেই সাক্ষ্য বহন করে। পৃথিবীর প্রাচীনতম মানব সভ্যতাগুলি গড়ে উঠেছিল বিভিন্ন নদীর অববাহিকায়।
আজ থেকে প্রায় ৫৩০০ বছর আগে গড়ে ওঠা সিন্ধু সভ্যতার জল সরবরাহ ব্যবস্থা ছিল উন্নত। সিন্ধু নদের মোহনা থেকে ২৫০ মাইল ভিতরে ডানতীরে মহেঞ্জোদড়ো থেকে ৯০০ মাইল উত্তরে হরপ্পা নগরী অবস্থিত ছিল। এখানকার প্রতিটি বাড়িতে স্নানের ঘর ও পায়খানা থেকে ময়লা জল বের হত নালীর মাধ্যমে। মহেঞ্জোদড়োতে একটি স্নানাগারের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। এই স্নানগৃহটি লম্বায় ৩৯ ফুট চওড়ায় ২৩ ফুট এবং ৮ ফুট গভীর। চৌবাচ্চায় জল ধরে রাখার জন্য ইটের মধ্যবর্তী ফাঁক বিশেষ মশলা দিয়ে বন্ধ করা। জলাধরের এক কোনে জল ঢোকাবার ও বের করার ব্যবস্থা ছিল।
গ্রীকেরা দূরবর্তী পাহাড়ী ঝরণা থেকে পাইপ বা নালার সাহায্যে শহরের মধ্যস্থলে জল নিয়ে যেত। এইভাবে পিরেন (Pirena) থেকে করিস্থ (Corinth) ও ক্যালিরো (Collirrhoe) থেকে এথেন্সে জল আসতো। গ্রীকেরাই প্রথম পোড়ামাটির পাইপ ব্যবহার করে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে এথেন্স শহরে জলের চাহিদা বাড়ে। সেই কারণে খৃঃ পূঃ ৫৭০ তে ইলিশাসের পাহাড় থেকে এথেন্সে জল অনার জন্য দুটি সুরঙ্গ তৈরি করা হয়। সম্রাট হ্যাড্রেন (খৃঃ পূঃ ৭৬-৫০ অনুমানিক) পেনটিলিকন (Pentelikon) থেকে এথেন্স পর্যন্ত একটি ভূগর্ভস্থ নলপথ তৈরি করেন। যেটি বিংশ শতাব্দীতেও ব্যবহৃত হচ্ছে। গ্রীকেরা জলবিদ্যা বা হাইড্রোলজি (Hydrology)তে অগ্রগণ্য ছিল। হিরেন অব্ আলেকজেন্ড্রিয়া খৃস্টাব্দের প্রথম শতকে জলের প্রবাহ-মাত্রা নির্ণয়ের পদ্ধতি প্রচলন করেন।
রোমানদেরকেই আধুনিক জল সরবরাহ ব্যবস্থার জনক বলা যায়। ইউরোপ মহাদেশের দক্ষিণভাগে ইতালী অবস্থিত, ইতালীর তিনদিকে সমুদ্র ও উত্তরে সুউচ্চ আল্পস পর্বতমালা। সাতটি পাহাড়ের মাঝের সমভূমির বুক চিরে বয়ে গিয়েছে টাইবার (Tiber) নদী, এই নদীর দক্ষিণতীরে গড়ে ওঠে বিখ্যাত রোম নগরী। রোমে জলসরবরাহ হতো টাইবার নদী থেকে, কিন্তু রোম নগরের বৃদ্ধি ঘটার সাথে সাথে প্রয়োজনীয় জলের অভাব দেখা দেয়। ফলে পাহাড়ী ঝরণা থেকে জল আনবার জন্য খৃঃ পূঃ ৩১২তে তৈরি করা হয় বিখ্যাত অ্যাকুয়া অ্যাপিয়া নলপথ। ৩০৫ খৃস্টাব্দের মধ্যে এই ব্যবস্থার উন্নতি ঘটিয়ে ১৪ টি মোটা নলপথের সাহায্যে নগরের জলের চাহিদা মেটানো হতো। এর মধ্যে চারটি এখনো কার্যকর রয়েছে। পথের মোট দৈর্ঘ্য ৩৫৯ মাইল। এর মধ্যে ৫০ মাইল পাথরের খিলান (Arch) দিয়ে তৈরী।
রোমের কয়েকটি বিখ্যাত জলসরবরাহ পথের বিবরণ (সময়ক্রমানুসারে)-
১)অ্যাকুয়া অ্যাপিয়া (Aqua Appia)
তৈরি করান ‘অ্যাপিয়াস ক্লুডিয়াস’ ৩১২ খৃঃ পূঃ। টাইভেলির ঝরণা থেকে উত্তর রোম পর্যন্ত লম্বায় ছিল ১০.৩ মাইল। এটির গড় প্রস্থ ২.৫ ফুট এবং গভীরতা ৫ ফুট। যুদ্ধের সময় শত্রুরা যাতে সহজে জলকে বিষাক্ত করতে না পারে সে কারণে ৩৫০ ফুট ছিল ভূগর্ভস্থ।
২)অ্যানিও ভিন্টাস (Anio Ventus)
তৈরি করা হয় ২৭২ খৃঃ পূর্বাব্দে, তৈরিতে সময় লাগে ৪০ বছর। অ্যানিও উপত্যকার অ্যাপিন্নিনেস ঝরণা থেকে রোম পর্যন্ত লম্বায় ছিল ৪৩ মাইল। এর বেশির ভাগ অংশই ভূগর্ভস্থ। তবে ১,১০০ ফুট ছিল ব্রীজের ওপর দিয়ে।
৩)অ্যাকুয়া মারসিয়া (Aqua Marcia)
তৈরি করান ‘কুইনটাস্ মারিসাস রেক্স’ ১৪৪ খৃঃ পূঃ। টাইভেলি পাহাড়ের উঁচু ঝরণা থেকে রোম পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ছিল ৫৮ মাইল। এটি সবচেয়ে দীর্ঘ পথ। চওড়া ৪.৫-৫.৫ ফুট, গভীরতা -৯ ফুট। রোমের ১৮০ ফুট উঁচু জলাধারে জল পৌঁছে দিতো। ১৮৬৯ খৃস্টাব্দে এর কিছু অংশ সংস্কার করা হয়।
৪)অ্যাকুয়া টিপুল্লা (Aqua Tepula)
তৈরি হয় ১২৭ খৃঃ পূঃ। টাসকুলাম থেকে রোম পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ১১ মাইল, এর মধ্যে ৬ মাইল ছিল রোমের বিখ্যাত নলপথের ব্রীজ ‘ক্যাম্পাগনা ডি রোম (Campagna di Rome)’-এর উপর দিয়ে। এর জল উষ্ণ ও বিস্বাদ ছিল।
৫)অ্যাকুয়া জুলিয়া (Aqua Julia)
তৈরি করান ‘মারকস ভিপসানিয়াস এগ্রিপ্পা’ খৃঃ পূঃ ৩৩। এটিও শুরু হয়েছে টাসকুলাম পাহাড়ের ঝরণা থেকে। এর ৪ মাইল যুক্ত ছিল অ্যাকুয়া টিপুলার সঙ্গে। ১৫.৫ মাইল দীর্ঘ ছিল। ক্যাম্পাগনা ডি রোমের উপর ৬ মাইল লম্বা পথ অতিক্রম করে। অ্যাকুয়া টিপুলা ও জুলিয়া, অ্যাকুয়া মারসিয়া থেকে কম খরচে করা হয়। এখানে পাহাড়ের পরিবর্তে ইট ও কংক্রিট ব্যবহৃত হয়েছিল।
৬)অ্যাকুয়া আগস্টা (Aqua Augusta)
তৈরি করান রোমান ‘সম্রাট আগষ্ট’, যার নাম অনুসারে ইংরাজি মাসের নামকরণ হয়েছে। ২২ মাইল লম্বা পুরো পথটাই ভূগর্ভস্থ। সম্রাট ও সৈনিকদের ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য এটি তৈরি করা হয় ২ খৃষ্টাব্দে।
৭)অ্যক্তাকুয়া ভির্গো ( Auqa Virgo)
তৈরির কাজ শেষ করেন ভিপসানিয়াস এগ্রিপ্প’ ২০ খৃঃ পূঃ। লিসিয়াস-লিসিনিয়াস (Licious-Licinius) অঞ্চলের ক্যাপিয়াস ঝরণা থেকে জল এই পথের সাহায্যে রোমে পৌঁছে যেত। এর বেশির ভাগ ছিল ভূগর্ভস্থ। এই নলপথের জল ছিল মিষ্টি ও স্বাদু।
রোমানরাই প্রথম সীসার পাইপের ব্যবহার শুরু করে। পারিবারিক কাজের জন্য বাড়ির ছাদে ছোট জলাধার (Cistern) তৈরির রীতি রোমেই প্রথম প্রচলিত হয়। ৩০৬ খ্রীষ্টাব্দে রোম নগরের প্রতিদিন ৫ কোটি গ্যালন জল সরবরাহ করা হতো অর্থাৎ দৈনিক মাথাপিছু জলের পরিমাণ ৫০ গ্যালন বা ১৮৯ লিটার, যাকে নিঃসন্দেহে পর্যাপ্ত বলা যায়। রোমান সাম্রাজ্য বিস্তারের ফলে ফ্রান্সের লায়ন (Lion), নিম্স (Nimes) ও প্যারিসে, স্পেনের বিভিন্ন (Seville) ও সিগোভিয়া (Segovia) শহরে সুষ্ঠ জলসরবরাহ প্রযুক্তির বিস্তার ঘটে। একাদশ শতাব্দীর প্রথম দিকে রোমানরা ফান্সের আটোইজ (Artois) শহরে প্রথম আর্টিজিও কুপ আবিস্কার করে।
খ্রীঃ পূঃ ৩০০০ বছর আগে ফিনিশীয় সভ্যতার অধিবাসীরা নীচু জমিতে বড় বড় খাল কেটে বর্ষাকালে বন্যার জল ধরে রেখে সারাবছর তা ব্যবহার করতো। এভাবে জলসঞ্চয় ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ দুটো কাজই চালাতো। মিশরে পিরামিড তৈরির সময়েও (৩০০০-২০০০ খৃঃ পূঃ) একইভাবে জলসেচ চলতো। অ্যাসিরিয় রাজা ৭০৪ খৃঃ পূর্বাব্দে মাউন্টটাস পাহাড়ের জিয়ান নামক স্থান থেকে নিনিভশ্চ পর্যন্ত ৩০ মাইল দীর্ঘ খাল খনন করেন।
খ্রীঃ পূঃ ২০০০ বছর আগে এশিয়া মাইনরের পারগামাম (Paragamum) অঞ্চলে এক উন্নত জল-সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে ওঠে। এখানে ১২২০ ফুট উঁচু জলাধার থেকে জল ভুগর্ভস্থ নলের মাধ্যমে শহরের মধ্যস্থলের ৩৬৯ ফুট উঁচু জলাধারে পৌঁছে যেত। পন্ডিত হিরোডেটাসের বর্ণনা থেকে জানা যায় এশিয়া মাইনরের ঈওলিস জেলায় পাথর কেটে পাহাড়ের মধ্যদিকে ৪ ফুট ব্যাসের ১১০০ ফুট লম্বা সুড়ঙ্গ করে জল আনা হতো।
চীনে ১৫০০ ফুট গভীর কুপের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। যেটি খৃঃ পূঃ ২০০০ বছর আগে খনন করা হয়। প্রত্নতাত্ত্বিকেরা মনে করেন প্রাচীন চীনের অধিবাসীরা কূপ খননের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির যথেষ্ট উন্নতি ঘটিয়েছিল।
জলসরবরাহ সম্বন্ধে বাইবেলের তিনটি জায়গায় উল্লেখ আছে-
“খ্রীষ্ট পূর্ব সপ্তদশ শতকে জুডাস্ এর রাজা হিজিকিস (Hezakish) শহরের বাইরের বিল থেকে নলের দ্বারা জেরুজালেমের জল আনার ব্যবস্থা করেন---”
“---জিহান (Gihon) ঝরণার জল ১৭৭৭ ফুট নলের মাধ্যমে এনে একটি বড় চৌবাচ্চায় ভর্তি করা হয়। ---সুমেরীয় মহিলারা এই জল চৌবাচ্চা থেকে পাত্র করে এনে ঘরের কাজে ব্যবহার করতো। ---চৌবাচ্চাটি জেকব কূপ নামে বিখ্যাত ছিল---।”
“---খ্রীষ্ট পূর্ব ১৭০০ তে আব্রাহামের ছেলে জিরার (Gerar) উপত্যকায় জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য কূপ খনন করেন---”
বাইবেলের ‘সৃষ্টিতত্ত্ব’ বিষয়ক গ্রন্থ জেনিসিস (Genesis)-এ ধরনের ২৬টি উল্লেখ আছে।
খ্রীস্ট পূর্ব ২০০০ বছর আগে আর্যদের রচিত ‘বেদেও বহু স্তোত্র আছে যেগুলি জলের মান ও উপযোগিতা সম্বন্ধে তাদের সচেতনতার সাক্ষ্য বহন করে
‘অপ ইদ্বা উ ভেষজোরাপো অমীব চাতনীঃ
অপঃ সর্বস্য ভেষজোস্তান্তে কৃন্বন্ত ভেষজ্ম’
(ঋগ্বেদ ১০/১৩/৭৬)
--‘বিশুদ্ধ জলই ঔষধ, জলই ব্যাধিনাশ করে। দেহকে প্রাণবান্ রাখে। জল বহু রোগের মহৌষধ এই মহোপকরী জল তোমার রোগও আরোগ্য করুক।’
‘অপ্সন্তর মৃতং অপস ভেষজম আপামুত প্রশস্তয়ে।’
(ঋগ্বেদ ১/২৩/১৯)
‘জল পান করা ভাল, তার চেয়ে সুখের জলদান করা।’
রোমান সাম্রাজ্যের পতনের সময় থেকে মধ্যযুগের শেষ পযন্ত জলসরবরাহ প্রযুক্তির তেমন বিকাশ ঘটেনি। যদিও নবম শতাব্দীতে উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকার মুর জাতিরা সিভিল্লি ও করডোভা (Cordova) নলপথের সংস্কার করে। মেক্সিকোতে এক ফ্রানসিস্-ক্যান (Franciscan) সন্ন্যাসীর তত্ত্বাবধানে পাইপ লাইন বসানো হয়।
ডাচ্ ইঞ্জিনিয়ার পিটার মোরাইস ১৫৮২ খ্রীষ্টাব্দে টেমস নদীর জল লন্ডনে সরবরাহের জন্য লন্ডন ব্রীজে প্রথম জল উত্তোলক পাম্প বসান। এই পাম্পের সাহায্যে ১২০ ফুট উঁচু জলাধারে জল তোলার পরে ভূগর্ভস্থ নলের মাধ্যমে শহরে সরবরাহ করা হতো। সপ্তদশ থেকে অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যে লন্ডন ও প্যারিসে শহরে এই প্রযুক্তির প্রভূত উন্নতি ঘটে। একাজে ঢালাই লোহার পাইপের ব্যবহার শুরু হয়। ১৬১৯ খ্রীষ্টাব্দে কয়েকটি প্রাইভেট কোম্পানী বাণিজ্যিক ভাবে লন্ডনে বাড়ি বাড়ি জল আরম্ভ করে। ১৬৭১ খ্রীষ্টাব্দে লন্ডনে বাষ্প চালিত পাম্প বসে। এ ব্যাপারে ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলির চেয়ে আমেরিকা খুব পিছিয়ে ছিল। ১৮০১ খ্রীষ্টাব্দে আমেরিকার মাত্র ১৬ টি শহরে জলের ভাল ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু ১৯০১ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যেই ছ’হাজারটির বেশি শহরে উন্নত পদ্ধতিতে জল সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়। তারপর থেকে দ্রুত উন্নতির ফলে এই প্রযুক্তি বর্তমানের রূপ নেয়।
সমুদ্র জলের সবচেয়ে বড় ভান্ডার, কিন্তু সেই জল লবণাক্ত বলে পানের অযোগ্য। ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম থেকেই সমুদ্রের জলকে লবণমুক্ত করার প্রচেষ্টা শুরু হলেও; বড় আকারের প্রথম ডিস্টিলিং প্ল্যান্টটি ১৯৪১ খ্রীস্টাব্দে কুয়োতে স্থাপিত হয়। এর উৎপাদন ক্ষমতা আরও বাড়িয়ে করা হয় দৈনিক ১২ লক্ষণ গ্যালন, ১৯৫৮ খ্রীষ্টাব্দে ক্ষমতা আরও বাড়িয়ে করা হয় দৈনিক ৫০ লক্ষ গ্যালন। দ্বিতীয় প্ল্যান্টটি তৈরি হয় মেক্সিকোর রোসারিটো বীচে (Rosarito Beach) যার উৎপাদন ক্ষমতা ছিল দৈনিক ৭৫ লক্ষ গ্যালন।
ভারতবর্ষের অনেক রাজা প্রজাদের কল্যাণে জলের উপযুক্ত ব্যবস্থাতে সচেষ্ট ছিলেন। আনুমানিক খৃঃ পূঃ ৩২০তে মৌর্য রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য-র প্রতিনিধি পুষ্যগুপ্ত সৌরাষ্ট্রের (বর্তমানের গুজরাট) গিরিনগরে জল সরবরাহের জন্য সুদর্শন হ্রদ খনন করেন। বিখ্যাত পন্ডিত এইচ, জি, ওয়েলসের বিবরণ থেকে জানা যায় ২৬৮ খ্রীষ্ট পূর্বাব্দে সম্রাট অশোক প্রজাদের সুবিধার জন্য প্রজাদের বহু কূপ খনন করান।
এছাড়াও শেরশাহ, আকবর প্রভৃতি রাজারা এ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য কাজ করেছেন। প্রাচীন ভারতে জলচক্র, গবাদি পশু চালিত জল উত্তোলক যন্ত্র, জল তোলার উন্নত ধরনের কপিকল আরও বহু উচ্চমানের যন্ত্র ব্যবহৃত হতো। কিন্তু দুঃখের বিষয় উপযুক্ত রক্ষণা-বেক্ষণের অভাবে এগুলির ধ্বংসাবশেষও লুপ্তপ্রায়।