অপারেশন করতেই উধাও

        অপারেশন করতেই উধাও

অপারেশন করতেই উধাও; উত্তরবঙ্গ সংবাদ; ১১ নভেম্বর ২০০৬ শনিবাসর
২০০১ সালের ঘটনা। ব্রেন স্ট্রোক হয়েছিল শকুন্তলার মস্তিষ্কে সেই রক্তক্ষরণের জেরে প্রথমে অসহ্য মাথা যন্ত্রণা। মাথা হয়ে সেই ব্যথা শরীরের বাঁদিককার মুখ, হাত, পায়ে ছড়িয়ে পড়েছিল। দিনরাত ২৪ ঘন্টা টানা ব্যথা। এভাবে পাঁচ বছরেরও বেশি কেটে যায়। নেপালের কাঠমান্ডু নিবাসী শকুন্তলা থাপাকে নিয়ে ওঁর ইঞ্জিনিয়ার স্বামী কে থাপা ব্যাঙ্ককে চিকিৎসা করান তিন তিনবার। লাভ হয়নি কোনো। ততদিনে শুধুমাত্র বয়সই পাঁচ বছর বেড়ে গেছে। দুই সন্তানের মা শকুন্তলার ব্রেন স্ট্রোক হয়েছিল মস্তিষ্কের থ্যালামাস অংশে। মস্তিষ্কের ভেতরকার যে অঞ্চলটি সংবেদন স্নায়ুসমূহের উৎস, সেই এলাকাতেই ঘটেছিল রক্তক্ষরণ।

উল্লেখ্য, মস্তিষ্কের এই অঞ্চলটি ব্যথাসমূহের উৎসস্থল হিসেবেই বেশি পরিচিত। মুম্বইয়ের ওখার্ড হসপিটালের স্নায়ু শল্যবিদ আলোক শর্মা জানাচ্ছেন, ‘মস্তিষ্কের থ্যালামাস অংশে রক্তক্ষরণের জেরে যেভাবে আক্রান্ত হয়েছিলেন শকুন্তলা থাপা ৫৪, সেই ব্যথা দমন করার কোনো ওষুধ নেই। মানুষ যত ধরনের যন্ত্রণা ভোগ করে, তার মধ্যে এই থ্যালামিক পেন-ই সবচেয়ে বেশি যন্ত্রণাদায়ী। তাই অস্ত্রোপচার ছাড়া উপায় ছিল না। ভারতে এই প্রথম ব্রেন কর্টেজ স্টিমুলেশন সার্জারি হল। ব্রেনের মধ্যে ইলেকট্রোড তথা তড়িৎদ্বার স্থাপন করে পেশেন্টের বুকে পেসমেকারের সঙ্গে তাকে জুড়ে দিয়ে বাইরে থেকে মস্তিষ্কের উত্তেজনা তথা তৎপরতা নিয়ন্ত্রণ করে এই অস্ত্রোপচারের সময় রোগী সজ্ঞানেই ছিলেন। অ্যানাসথেসিয়া প্রয়োগ করা হয় নি। খুলির ডানদিকটা কেটে খোলা হয়। তারপর তড়িৎদ্বারের মাধ্যমে মস্তিষ্কের ক্রিয়াকর্ম পরখ করা হয়। রোগিনীকে ক্রমাহত প্রশ্ন করে যাওয়া হয়, এভাবে কেমন লাগছে, ওভাবে কেমন লাগছে। এইভাবে এগোতে এগোতেই একসময় ধরে ফেলি, মস্তিষ্কের ঠিক কোন জায়গাটায় তড়িৎদ্বার সংস্থাপন জরুরি।

Join our mailing list Never miss an update