নভশ্চর হবে ; ডাঃ পার্থপ্রতিম; ২৮ মার্চ ২০০৯ ; পৃষ্ঠা-তিন; উত্তরবঙ্গ সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত
বয়স মাত্র ৬ বছর। কিন্তু আই কিউ তথা বুদ্ধ্যঙ্কের নিরিখে সে অ্যালর্বাট আইনস্টাইনের বুদ্ধ্যঙ্ক ছিল ১৬০। আমেরিকার ওহিওবাসী এই ছেলে প্রণব বীরা-র বুদ্ধ্যঙ্ক হয়। আমেরিকায় আজ পর্যন্ত যতজন প্রেসিডেন্ট হয়েছেন, তাঁদের নাম, জন্মদিন, কে কবে প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন পরপর গড়গড় করে বলে যেতে পারে প্রণব। ২০০০ সালের আগের যে কোনো বছরের যে কোনো মাসের তারিখ বললে, সেই দিনটির বার বলে দেবে সে। যখন কিন্ডারগার্টেনে পড়ে ১০০ পর্যন্ত গুনতে শেখাই যথেষ্ট, তখনই প্রণব ১০ লাখেরও বেশি গুনতে শিখে যায়। এ টু জেড নয়, জেড থেকে এ পর্যন্তও চটপট বলতে পারে। যখন সাড়ে চার বছর বয়স,তখন থেকেই নানা রঙের বর্ণমালাগুচ্ছ নিয়ে মেতে উঠতে থাকে। প্রণবের মা সুচিত্রা বীরা জানিয়েছেন, ওর স্মৃতিশক্তি যেন ক্যামেরার মতো। শাটার টেপে আর স্মৃতিতে তা ছবির মতো ধরে রাখে। স্কুলে বাঁদর ঝোলা খেলা থেকে উই-ই ভিডিও গেমস, সবই খেলে। যে কোনো বিষয়েই প্রণবের তথ্যের খিদে। আরো জানা চাই। বড়ো হয়ে কি হবে ? প্রণবের চটপট জবাব, মহাকাশচারী হব। নভশ্চর হয়ে আকাশটায় কী আছে খুঁজে খুঁজে বের করব। উল্লেখ্য, প্রণবের বাবা পিএইচডি করা মানুষ। প্রণবের মা এম এ দুই বিষয়ে।
মাছে মেধাবী
ছেলের বয়স কত ? হোক না ১৫-১৮ ? অথবা ১৩-১৪-১৫ ? ওকে সপ্তাহে অন্তত দুদিন মাছ দিন। না পারলে একদিন। যে কোনো তাজা মাছের অল্প মশলায় রান্না ঝোল কিংবা মাছভাজা। কারণ, মাছ বুদ্ধিমত্তা বাড়ায়। তৈলাক্ত মাছ, সামুদ্রিক মাছ, পাহাড়ি ঝোরার মাছ পেলেই খান, খাওয়ান। জ্যামিতি হোক আর পাটিগণিত, কেমিস্ট্রি হোক অথবা ফিজিক্স অথবা সাধারণ জ্ঞান, সব ক্ষেত্রেই ভালো করবে ছেলে, মাছ খেলে। মাছে থাকা দীর্ঘ শৃঙ্খলের পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড ব্রেন পাওয়ার বাড়ায়। মস্তিষ্ককে মেধাবী করে। দেখা, জানা, বোঝা ও শেখার ক্ষমতা বাড়ায়। জানিয়েছেন সুইডেনের ইউনিভার্সিটি অফ গোথেনবুর্গের গবেষকরা। জার্নাল অ্যাকটা পেডিয়াট্রিকা-তে সেই গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকদের তরফে প্রফেসর ডা. কেল তোরেন সেখানে জানিয়েছেন, সপ্তাহে যদি একদিনও মাছ খেয়ে যায় ছেলে তাহলে তাদের বুদ্ধিগম্যতা যারা মাছ খায় না তাদের তুলনায় বুদ্ধি-কৌলিন্যের পরীক্ষায় অন্তত ৩ শতাংশ বেশি নম্বর পায়। উল্লেখ্য, এর আগে বিভিন্ন গবেষণা প্রতিবেদন থেকে জানা গিয়েছে গর্ভবতীরা যদি শুরু থেকেই মাছ খান, সেইসব ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যতে স্মৃতিভ্রংশ হওয়ার আশঙ্কা অনেক কমে যায়। ইউনিভার্সিটি অফ গোথেনবুগের মস্তিষ্ক মেরামতি কেন্দ্রের গবেষক ডা. মারিয়া অ্যাবার্গের বক্তব্য, আর্থ-সামাজিক অবস্থান বা মা-বাবা কতটা লেখাপড়া করেছেন তার উপর ছেলেমেয়ের বুদ্ধির বিকাশ ঘটে, মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ে। বড়োদের জন্যও মাছ উপকারী, মাংস বেশি না খেয়ে মাছ খান। ছেলেমেয়েদের শিক্ষণি যোগ্যতা বাড়াতে এবং এনার্জি তথা শক্তিতে ভরপুর করতে ছোটবেলা থেকেই এদের দিতে হবে নানা ধরণের খনিজ পদার্থ এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার দাবার।