বাজি পটকার কথা

বাজি পটকার কথা

বাজি পটকার কথা; ডাঃ পার্থপ্রতিম;  ৩ নভেম্বর’ ৯১ পৃষ্ঠা-ষোলো; রবিবাসরীয়; আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত

‘গতবারের মত এ বছরেও বৃষ্টি এল না চারধারে শুকনো গরম হাওয়া। মাটি ফেটে চৌচির। সবুজ গাছপালা সব এখন হলদে। এ নিশ্চয়ই শয়তান-অপদেবতাদের কান্ডকারখানা। এদের জব্দ করতেই হবে, ভয় দেখাতেই হবে। তা ছাড়া বাঁচার উপায় নেই।’ এ হল আজ থেকে প্রায় দু হাজার বছর আগেকার কথা। তখন চীনে হ্যান রাজবংশ রাজত্ব করছে। সে সময়ে চীনদেশীদের ধারণা ছিল- অনাবৃষ্টি, মহামারী, ভূমিকম্প এগুলি হয় অপদেবতাদের কান্ডকারখানার ফলে। তাই তারা শয়তানদের ভয় দেখাতে বাজি-পটকা ফাটাত। এ বিশ্বাস বেশ কয়েক যুগ ধরেই বজায় ছিল। এমনকি ১২৩২ সালে যখন দুর্জয় মোঙ্গলরা চীন আক্রমণ করে তখন হাউইবাজির সাহায্যে তাদের ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দেয়। পঞ্চদশ শতক পর্যন্ত ইউরোপে বাজি-পটকা যুদ্ধ ও সামরিক কাজেই ব্যবহৃত হত। সম্ভবত ১৫০৯ সালে ইতালীতেও প্রথম আনন্দ উৎসবে বাজি পোড়ানো হয়। ইতিহাসের পাতা ওলটালে দেখা যায়- ইংল্যান্ডের রানী প্রথম এলিজাবেথ ১৫৭২ সালে ওভারভিচ শহরে এক বিরাট বাজি পোড়ানোর উৎসব করেন। ১৬১৩ সালে প্রথম জেমসের মেয়ের বিয়েতে টেমস নদীর বুকে নৌকা থেকে বাজি পটকা ফাটানো হয়। অষ্টাদশ শতকে পঞ্চদশ লুইয়ের উৎসাহে ফরাসী দেশে বাজি-পটকা নিয়ে শুরু হয় নতুন নতুন পরীক্ষা-নিরীক্ষা।

Join our mailing list Never miss an update