হৃদয়ের কথা পর্ব-৪১; খাদ্য গ্রহণের নিয়মবিধি

হৃদয়ের কথা পর্ব-৪১; খাদ্য গ্রহণের নিয়মবিধি

হৃদয়ের কথা পর্ব-৪১; খাদ্য গ্রহণের নিয়মবিধি
    সুন্দর স্বাস্থ্যের অধিকারী হতে গেলে শুধু পুষ্টিকর খাবার খেলেই চলবে না। খাদ্যকে সুন্দরভাবে সময় নিয়ে সঠিক পদ্ধতিতে খেতে হবে।
    বর্তমান যান্ত্রিকতার যুগে আমরা সবসময় ব্যস্ত। বাজার করা, ট্রেন ধরা, অফিসে পৌঁছানো ... সব কিছুতেই তাড়া। স্নান করে কোনোমতে মুখে গুঁজে কর্মস্থলের দিকে দৌড়। শরীর সুস্থ রাখতে হলে বাকি কাজগুলি তাড়াতাড়ি সেরে খাওয়ার ব্যাপারে সময় দিতে হবে। প্রথমত খাদ্য যদি ভালোভাবে চিবানো না হয় তাহলে খাদ্যগুলি বড়ো বড়ো টুকরোতেই থেকে যায়। পৌষ্টিকতন্ত্রের উৎসেচকের সঙ্গে ভালোভাবে মিশতে পারে না। পরিপাককার্য বাধাপ্রাপ্ত হয়। যেমন-রান্নার আগে সুসেদ্ধ হওয়ার জন্য সবজি ছোটো ছোটো টুকরোতে কেটে রান্না করতে হয়; এটিও সেই একই ব্যাপার।
    আমাদের মুখের মধ্যে তিনজোড়া লালাগ্রন্থি আছে। (১) প্যারোটিড গ্রন্থি (Parotid gland) (২) সাব ম্যাক্সিলারি বা সাব ম্যান্ডিবিউলার গ্রন্থি (Sub-maxillary or Sub Mandibullar gland) (৩) সাব লিঙুয়্যাল গ্রন্থি (Sub Lingual gland)।  আমরা যে খাদ্য খাই তা চিবানোর সময় মুখের গ্রন্থি নিঃসৃত রস খাদ্যকে পরিপাক করতে চেষ্টা করে। খাবার যত ভালোভাবে চিবানো যায় খাদ্য উৎসেচকগুলি তত ভালোভাবে মেশে। এ প্রসঙ্গে একটি কথা মনে রাখা দরকার - হৃদরোগীর খাবারে তেল কম দিলেও তা বিভিন্ন মশলার সাহায্যে রোগীর পছন্দ মতো খাবারকে সুস্বাদু ও সুগন্ধি করতে হবে। কারণ খাদ্য সুস্বাদু ও সুগন্ধি না হলে মুখের লালাগ্রন্থি থেকে উৎসেচক রস ঠিক মতো নির্গত হয় না। ফলে খাদ্য পরিপাক হতে বাধা পায়।
    খেতে বসে ধীরে সুস্থে খাবেন। বিশেষত দুপুর ও রাতের খাবার (Lunch & Dinner) কমপক্ষে ২০ মিনিট ধরে খেতে হবে। আপনার যদি তাড়াহুড়ো করে খাওয়ার বদভ্যাস থাকে তবে সম্ভব হলে খাওয়ার টেবিলের পাশে একটি অ্যাকোরিয়াম (Aquarium) রাখুন। খেতে খেতে মাছের গতিবিধি উপভোগ করুন। এ সময় ধীর লয়ে গান শুনতে পারেন। খাওয়ার সময় বার বার জল খাওয়া ঠিক নয়। তবে হৃদরোগীর ক্ষেত্রে খাবার টেবিলে অবশ্যই জলের গ্লাস রাখবেন। গলায় খাদ্য আটকে হার্ট অ্যাটাকে মারা যাওয়ার ঘটনা বিরল নয়।

Join our mailing list Never miss an update