Environment (17 )

শীতের কুম্ভকর্ণ

16 Feb 2018 শীতের কুম্ভকর্ণ

শীতের কুম্ভকর্ণ; -ডাঃ পার্থপ্রতিম; ১ মে ২০১৪; উত্তরবঙ্গ সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত নিদ্রা যায় কুম্ভকর্ণ জাগিবেক কবে। বিচার করিয়া দেখ সভাখন্ড সবে।। যায় অর্দ্ধ লঙ্কাপুরী কুম্ভকর্ণ ভোগে। ছয় মাস নিদ্রা যায়, একদিন জাগে।। পাঁচ মাস গত নিদ্রা এক মাস আছে। আজি লঙ্কা মজিলে সে কি করিবে পাছে।।     হ্যাঁ, কৃত্তিবাস অনুদিত সেই সপ্তকান্ড মহাকাব্যের লঙ্কাকান্ডে হয়তো অনেকেই এই অধ্যায় পড়েছেন। কুম্ভকর্ণের সেই ঘুমের কাহিনি ছেলে-বুড়ো সবারই জানা। আমাদের এই প্রাণী জগতে এমন কিছু প্রাণী রয়েছে যারা ততটা না হলেও শীতকালে কুম্ভকর্ণের সাথে টেক্কা দেয়। শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেশ কিছু প্রাণী কিছুদিনের জন্য চলে যায় আমাদের চোখের আড়ালে, ঘুমের দেশে। হ্যাঁ, একেই বলে শীতঘুম বা ইংরাজিতে হাইবারনেশন  (Hibernation)। সাধারণভাবে শীতঘুম দেখা যায়, সরীসৃপ, মাছ, বাঁদুড়, প্রভৃতি মেরুদণ্ডী ও শামুক, কীট-পতঙ্গ, কেঁচো প্রভৃতি অমেরুদন্ডী প্রাণীদের মধ্যে। শীতঘুমের মেয়াদ নির্ভর করে প্রাণীর পারিপার্শ্বিক পরিবেশের শীতের তীব্রতার ওপর অর্থাৎ যেখানে ঠান্ডা বেশি সেখানে ঘুম গ...

continue reading →

তুমি যদি পোকা হতে

28 Jan 2018 তুমি যদি পোকা হতে

তুমি যদি পোকা হতে ; ডাঃ পার্থপ্রতিম; বর্তমান; ১৮ই জানুয়ারী ১৯৯২; না  না রাগ করো না, আরে বাবা দু’চোখ বন্ধ করে একবার ভেবেই দেখনা; যদি তুমি মানুষ না হয়ে পোকা হতে তবে কেমন হতো?     দাঁতালোপোকা স্ট্যাগহর্ন বিটলের কথাই ধরা যাক। সে তার নিজের ওজনের নব্বইগুন ভারি জিনিস, তার দেহের দৈর্ঘের ত্রিশগুণ পথ অনায়াসে নিয়ে যেতে পারে। এই হিসাবে তোমাদের ওজন যদি ৪০ কেজি ও উচ্চতা ৫ ফুট হয় তবে, ৩৬০০ কেজি ওজনের বস্তু ৫০ গজ দূরে নিয়ে যেতে মোটেই পরিশ্রান্ত  হতে না। ফ্লি-মাছি যাকে বিজ্ঞানীরা বলেন- পুলেক্স ইরিট্যান্স। এদের পা খুব বেশী হলে কয়েক মিলিমিটার হবে। কিন্তু এরা এক লাফে ৩২ সেমি পথ যেতে পারে। লাফিয়ে উঠতে পারে ২০ সেমি উঁচুতে। তোমরা যারা উচ্চতায় পাঁচ ফুট, তারা ফ্লি-মাছি হলে লং জাম্প দিতে প্রায় পাঁচশো মিটার, দু’লাফে হাওড়ার ব্রিজ পার। আর হাইজাম্পে সাড়ে চারশো ফুট, এক লাফেই ৪৪ তলা বাড়ির ছাদে। কেমন  ব্যাপার বলো তো!     দেখার বিষয়ে- আমাদের দুচোখের মতো জলফড়িং বা ড্রাগনফ্রাই-এর আছে প্রায় ১০ হাজারটি চোখ। তাই সে সামনে-পেছনে উপর ও নিচের সব জিনিসকে একই সাথে দেখতে পায়।...

continue reading →

এত্ গন্ধ পুষ্পে - ফুলের রাণী

09 Dec 2017 এত্ গন্ধ পুষ্পে - ফুলের রাণী

এত্ গন্ধ পুষ্পে - ফুলের রাণী গোলাপ; ডাঃ পার্থপ্রতিম। বাংলার ডুয়ার্স পত্রিকার শারদীয়া সংখ্যা ২০১৬ তে প্রকাশিত হ্যাঁ, এমন করেই সব আসে যায়। ক্যালেন্ডারের পাতা ওল্টায়। চা-বাগিচার সবুজ গালিচা ভিজিয়ে ঐ বহু যুগের ওপার হতে আষাঢ় আসে। মাঠ-ঘাট জল থৈ থৈ। উপচে পরে হাতিনালার জল। তারপর কোন এক বর্ষা রাতের শেষে আছড়ে পড়ে সোনা রোদের আভা। শরৎ আসে, উৎসবের ঢাক বাজে বুকের ভেতর।         খুব ছোট্টবেলায় নরেনদাদুর শিউলিগাছ, নীল আকাশের তুলো মেঘ, রাঙাতি পাড়ের কাশেরবন জানান দিতো শরৎ আসছে। বাতাসে ধুনোর গন্ধ পেতাম। শুনতে পেতাম রাজার জামাইয়ের সেই গান- আহা! কী আনন্দ আকাশে বাতাসে... এখন কোথায় যেন লোপাট সেই সব কিছু। টিঙ্কুদি মজা করে বলেন- কেশে তোমার পাঁক ধরেছে বটে... তাই তোমার কাছে এসব হাওয়া। সবই আছে আগের মতোন। সত্যিই কী তাই? হোমটাক্সের চাপে শিউলিতলায় ভোরবেলায় পল্লীবালার কুসুম কুড়ানোর ফুরসৎ কী আছে। আজ ড্রইং কমপিটিশন, ডেন্স ড্রামা তো কাল ইউনিট টেষ্ট। তাছাড়া ডোরেমন, পোকোমন, ট্রান্সফরমারের আকর্ষণ মহিষাসুরের থেকে বহুগুণ বেশি। যাই হোক পূজা, আনন্দ ও উৎসবের সাথে ফুল বা পুষ্পে...

continue reading →

‘গ্রিন হাউস এফেক্ট’ এবং একটি অভয়বাণী

05 Dec 2017 ‘গ্রিন হাউস এফেক্ট’ এবং একটি অভয়বাণী

‘গ্রিন হাউস এফেক্ট’ এবং একটি অভয়বাণী; ডাঃ পার্থপ্রতিম। ২০ এপ্রিল ১৯৯৩,মঙ্গলবার; বর্তমান পত্রিকায় প্রকাশিত চারদিকে জলের ছড়াছড়ি। হলদিয়া বন্দর চলে গেছে দুই ফুট জলের তলায়। উত্তর ও দক্ষিণ দুই মেরুপ্রান্তের সব শুভ্র-স্বচ্ছ তুষার গলে তরল। প্রশান্ত মহাসাগরের কিরবাতিতুভাল-চৌঙ্গা ও ভারত মহাসাগরের মালদ্বীপ, বাংলাদেশের বেশ কিছু এলাকা সম্পূর্ণ সমুদ্রবক্ষে। ক্রান্তীয় অঞ্চলে অবিরাম ঝড়-ঝঞ্ঝা। মারা পড়েছে নাম জানা-না-জানা অসংখ্য পশুপাখি।     না-না, এসব বর্তমান ঘটনার বর্ণনা নয়। ভবিষ্যতের আশঙ্কা মাত্র। হ্যাঁ, বিষয়টি নিয়ে গত এক দশক ধরে ভূবিজ্ঞানীদের মধ্যে বেশ সোরগোল পড়ে গেছে। পৃথিবীর উত্তাপ ধীরে ধীরে বাড়ছে। বাড়ছে প্রাণীদের অস্তিত্ব সংকট। তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণ হিসাবে আবহাওয়াবিদেরা ‘গ্রিন হাউস এফেক্ট’কে সবচেয়ে বেশি দায়ী করেছেন। পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে রয়েছে কার্বন ডাই অক্সাইড, মিথেন গ্যাস। সূর্য থেকে আসা স্বল্পতরঙ্গ দৈর্ঘ্যের আলোকরশ্মি এর ভেতর দিয়ে পৃথিবীপৃষ্ঠে পৌঁছায়। কিন্তু এরা পৃথিবী থেকে বিকিরিত তাপকে বাইরে যেতে বাধা দেয়। এই ঘট...

continue reading →

বজ্রপাত, পরিবেশ ও উপযোগিতা

27 Nov 2017 বজ্রপাত, পরিবেশ ও উপযোগিতা

বজ্রপাত, পরিবেশ ও উপযোগিতা; ডাঃ পার্থপ্রতিম;  ১৪ সেপ্টেম্বর, সোমবার ১৯৯২; দৈনিক বসুমতী পত্রিকায় প্রকাশিত। 'বজ্রপাত' শব্দটির মধ্যে কেমন যেন ভয় ভয় ভাব লুকিয়ে আছে। ছোটবেলা থেকেই আমরা শুধু জেনে এসেছি বজ্রের ধ্বংসাত্মক কান্ডকারখানা। কিন্তু উদ্ভিদ তথা প্রাণীর অস্তিত্বরক্ষা ও দূষণ নিয়ন্ত্রিত পরিবেশের পেছনে রয়েছে বজ্রপাতের বিরাট অবদান। বজ্রপাতের সেই উপযোগিতা নিয়েই এই নিবন্ধে আলোচনা করেছেন---- বাঙলার বর্ষা। মেঘে ঢাকা আকাশ, রিম ঝিম-ঝিম বৃষ্টি, মাঝে মাঝে গুরু গুরু গর্জনে বজ্রপাত। বর্ষার ছোঁয়াতেই প্রকৃতির মাঝে এসেছে প্রাণের জোয়ার। শীতে যে সব গাছপালা পাতাঝরা, রুক্ষ ছিল; বর্ষার সজল পরশে তারাই সবুজ কিশলয়ে সেজে উঠেছে।     না, উদ্ভিদ জগতের কাছে শুধুমাত্র বৃষ্টির জলই নয়; বজ্রপাতও সমানভাবে অপরিহার্য। হ্যাঁ, বিষয়টিতে অবাক হওয়ার কারণ আছে বৈকি! ছোটবেলা থেকেই আমরা জেনে এসেছি বজ্রের ধ্বংসাত্বক কান্ডকারখানা। বাজ পড়ে বড়বড় গাছ ঝলসে যাওয়া বা বজ্রপাতের মৃত্যুর ঘটনা আমাদের মনকে আতঙ্কিত করেছে। কিছু সমাজবিজ্ঞানী বলেন-‘ভয় থেকেই ভক্তির উৎপত্তি’...

continue reading →

Join our mailing list Never miss an update