সুগার নিয়ন্ত্রণ করে কুন্দরি

সুগার নিয়ন্ত্রণ করে কুন্দরি

সুগার নিয়ন্ত্রণ করে কুন্দরি; -ডাঃ পার্থপ্রতিম ; ১ ডিসেম্বর ২০০৭; শনিবাসর পৃষ্ঠা সংখ্যা তিন; উত্তরবঙ্গ সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত
কেউ বলেন কুন্দরু, কেউ কেউ বলেন কুন্দরি বা কুদরি। সবে যাঁদের ডায়াবেটিস ধরা পড়েছে, উপোসি পেটে ব্লাড সুগার দুশোর নিচে, তাঁরা এই কুন্দরি খেয়ে ব্লাড সুগারের মাত্রা ১৬ থেকে ১৮ শতাংশ নামিয়ে আনতে পারবেন। পটোলের মতো দেখতে কুন্দরি সব বাজারেই পাওয়া যায়। ব্যাঙ্গালোরের ইন্সটিটিউট অফ পপুলেশন হেলথ অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল রিসার্চের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, দিনে ৫০ গ্রাম করে কুন্দরির সবজি খেলেই হবে। কুন্দরির সঙ্গে পরিণত কারিপাতা মিশিয়ে খেতে পারলে আরো ভালো। তিরিশ জনকে টানা তিন মাস ধরে প্রতিদিন কুন্দরি খাইয়ে দারুণ ফল পেয়েছেন চিকিৎসকরা। বাঙ্গালোরের সেন্ট জনস মেডিক্যাল কলেজ হসপিটালের এন্ডোক্রিনোলজলির অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডাঃ গণপতি বান্তওয়াল জানিয়েছেন, মাত্র ১৫ গ্রাম করে কুন্দরি বা এক গ্রাম করে কুন্দরি পাউডার খাইয়ে দেখা গিয়েছে, ব্লাড সুগার বেশ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কুন্দরি খাওয়ার ফলে গ্লাইকোসাইলেটেড হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ০.৪ শতাংশ হারে হ্রাস পেয়েছে, যা অবশ্যই তাৎপর্যময় সূচক। উল্লেখ্য, গ্লাইকোসাইলেটেড হিমোগ্লোবিনের সূচক বলে দেয়, বিগত ২ থেকে ৪ মাস ধরে ব্যক্তির রক্তে সুগারের মাত্রা কতটা ছিল। ডায়াবেটিসের চিকিৎসা করার সময় এই মাত্রা জানা জরুরি। ডাঃ বান্তওয়াল আরও জানিয়েছেন, যাঁদের উপোস থাকা রক্তে ব্লাড সুগারের মাত্রা ২০০ এর বেশি থাকে, তাঁদের জন্যও ওষুধের পাশাপাশি এই কুন্দরি খেলে উপকার মিলবে। সে পাউডারই খান আর চচ্চড়ি। ওষুধের সঙ্গে কুন্দরি খেলে কোনো ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ঘটে না। সুগার নিয়ন্ত্রণে কুন্দরির এই গুনের কথা ফলাও করে ছাপা হয়েছে ডায়াবেটিস কেয়ার নামে আন্তর্জাতিক জার্নালে। আয়ুর্বেদে ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় কুন্দরি বহু আগে থেকেই রয়েছে।
থাইল্যান্ডেও কুন্দরি দিয়ে ডায়াবেটিসের সুগার নিয়ন্ত্রণের চিকিৎসা চলে। কুন্দরিতে অনেকটা বিটা ক্যারোটিন, প্রোটিন, ফাইবার থাকে। ১৯৯৮ সালের ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেসে জানানো হয়েছিল, কিছু কিছু উৎসেচক, যেগুলি গ্লুকোজ উৎপাদন করে, কুন্দরির মধ্যে থাকা কিছু উপাদান জি-সিক্স-ফসফেট সহ ওই ধরনের উৎসেচক গুলিকে গ্লুকোজ উৎপাদনে বাধা দেয়।

Join our mailing list Never miss an update