কোথায় হচ্ছে কী হচ্ছে

কোথায় হচ্ছে কী হচ্ছে

কোথায় হচ্ছে কী হচ্ছে; বিজ্ঞান মেলা; মে/জুন -১৯৯২
শ্রীমতীর বয়স
সুনীল ভারত মহাসাগরের দক্ষিণ পশ্চিম প্রান্তে রয়েছে সবুজে ঢাকা ‘আইল অফ বার্ডস’। বাংলায় যাকে পাখিদের দ্বীপ বলা যেতে পারে। জনমানুষ তেমন নেই; রঙবেরঙের বিভিন্ন সামুদ্রিক পাখির বাস। কিছুদিন আগে এই দ্বীপেই পৃথিবীর বৃহত্তম কচ্ছপটির সন্ধান পেয়েছেন এক ফরাসী জীববিজ্ঞানী। কচ্ছপটির নাম রাখা হয়েছে মিসেস ইসমিব্যাল্ডা। এর ওজন প্রায় ৩০৮ কিলোগ্রাম। শ্রীমতীর বয়েস জানার জন্য বেশ কয়েকজন বিজ্ঞানী এখন গবেষণা চালাচ্ছেন।

খনিতে চাষবাস
কে না জানে, মাটির নিচে রয়েছে বিরাট রন্তভান্ডার। সোনা, লোহা, হীরা, কয়লা সবই থাকে মাটির আবরণে ঢাকা। খনিজ পদার্থ বের করে নেওয়ার পর খনিটি পড়েই থাকে, সেটি আর কোন কাজে আসে না। রুশ বিজ্ঞানীরা পরিত্যক্ত খনিকে ব্যবহার করার একটি ভাল উপায় বের করেছেন। তাঁরা পরীক্ষা করে দেখেছেন খনির ভেতর ফসল যত তাড়াতাড়ি বাড়ে, তেমনটি আর কোথাও হয় না।
বেশ কয়েকজন বিজ্ঞানী মনে করেন খনিগর্ভে মিথেন ও কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বেশি থাকার ফলে গাছের সালোক সংশ্লেষের হার বেড়ে যায়। তাছাড়া খনির আবর্জনা উচ্চমানের সারের মতো কাজ করে।

বাথটবে সুইমিং পুল
যারা সাঁতার কাটতে খুব ভালোবাসে কিন্তু ধারে কাছে পুকুর দিঘী নেই, তাদের জন্য একটা সুখবর। মার্কিন প্রযুক্তিবিদ রোনাল্ড রেপার্ট নতুন একধরনের সুইমিং পুল তৈরি করেছেন। একটি বাথটবেই সুইমিং পুল বানিয়ে ফেলেছেন। বাথটবের মধ্যে রয়েছে একটি বিদ্যুৎচালিত প্রোপেলার। সেটি টবের জলে যথেষ্ট শক্তিশালী স্রোত সৃষ্টি করতে পারে। যতবড় সাঁতারুই হোক না কেন এ স্রোতের প্রতিকূলে সাঁতার কেটে এক ইঞ্চির বেশি এগোতেই পারবে না।

ডাইনোসরের ডিম
বিজ্ঞানীদের মতে -আজ থেকে প্রায় ২৫০ কোটি বছর আগে পৃথিবীর বুকে জেগেছিল প্রথম প্রাণের স্পন্দন। তারপর বিভিন্ন সময় বহুরকমের প্রাণী এই ধরায় এসেছিল। এদের কেউ কেউ প্রকৃতির সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে আজও বেঁচে আছে। আবার টেরাডেকটাইল, ম্যামথ, ডাইনোসর প্রভৃতি প্রাণীরা পৃথিবী থেকে চিরদিনের জন্য বিদায় নিয়েছে। তবে হ্যাঁ, কিছুদিন আগে রোমানিয়ার কয়েকজন প্রত্নতত্ত্ববিদ দক্ষিণ কাপেথিয়ান অঞ্চলে বেশ কয়েকটি ডাইনোসরের ডিম পেয়েছেন। ডিমগুলি ৭০ কোটি বছর আগেকার। ১৪ থেকে ১৬ সেন্টিমিটার ব্যাসার্ধের খোসাগুলি ৪ মিলিমিটার পুরু। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন এই ডিমগুলি থেকে ডাইনোসর সম্বন্ধে বেশ কিছু নতুন তথ্য পাওয়া যাবে।

চাকায় এল হাওয়া
ডাঃ ডানলপ ছিল একজন শল্য চিকিৎসক। বিকাল বেলায় লনে বসে কফি পান করছিলেন। হঠাৎ তাঁর কিশোর ছেলের কান্ডকারখানার দিকে নজর পড়লো। শক্ত রাস্তার ধাক্কা থেকে বাঁচতে সাইকেলের চাকায় বাগানে জল দেওয়ার নল বেঁধে দিচ্ছে। ডানলপের মাথায় একটা বুদ্ধি এল। তিনি ‘নিউম্যাটিক টায়ার’ অর্থাৎ হাওয়া ভরা চাকা বানালেন। ধীরে ধীরে এই চাকা তাঁর দেশ স্কটল্যান্ড থেকে শুরু করে সারা বিশ্বে জনপ্রিয় হয়ে উঠল। শুধু সাইকেল কেন মোটর গাড়ি থেকে এরাপ্লেন সবেতেই এখন এই চাকা। টায়ার টিউব তৈরিতে সর্বপরিচিত একটি কোম্পানি এখন তাঁরই নাম অনুসারে।

জুতোয় তরমুজ
প্রচন্ড গরমে প্রিয় ফল কোনটি? অনেকেই হয়ত উত্তরে বলবে ‘তরমুজ’। হ্যাঁ, তরমুজ নিয়ে একটি মজার ঘটনা ঘটেছে। এক জার্মানি চাষী হরমোন ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করে বেশ বড় বড় সুস্বাদু তরমুজের চাষ করেছেন। এর খোসাটি পুরু, শক্ত কিন্তু নমনীয়। আসল চামড়ার মতো পুরোপুরি না হলেও, তিনি তরমুজের খোসা দিয়ে জুতার সোল তৈরি করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
পরীক্ষা করে দেখা গেছে এই জুতোর সোল শীত ও বর্ষাতে সমানভাবেই চলতে পারে, টেকেও অনেকদিন। সত্যিই একই সঙ্গে পেটের ও পায়ের দরকার মেটাতে এই ফল নতুনত্বের দাবী রাখে।

Join our mailing list Never miss an update