জন্ডিস ? খান ভেজফিশ

জন্ডিস ? খান ভেজফিশ

জন্ডিস ? খান ভেজফিশ; উত্তরবঙ্গ সংবাদ; ২৯ এপ্রিল ২০০৬; শনিবাসর
অসুখ মানেই ডাইনিং টেবিলে কার্ফু নয়। রোগ হয়েছে তো কী হয়েছে ? খেয়ে যান জিভে জল আনা স্বাস্থ্যসম্মত সব খাবারদাবার। যেসব খাবার-দাবারের কথা জানালেন ডাঃ পার্থপ্রতিম
অসুবিধার লক্ষণ। আমাদের রক্তে থাকা লোহিত কণিকাগুলির আয়ু মোটামুটিভাবে ১২০ দিন। লোহিত কণিকা আয়ুষ্কাল শেষে যকৃত, প্লীহা, হাড়ের মজ্জাতে গিয়ে ভেঙে যায়। লোহিত কণিকা ভেঙে যাওয়ার সময় হলদে রঙের বিলিরুবিন তৈরি হয়। সাধারণভাবে এই বিলিরুবিন পিত্তের সঙ্গে খাদ্যনালিতে আসে ও মলের সঙ্গে পৌষ্টিক নালির মধ্য দিয়ে বাইরে বের হয়ে যায়। সে কারণেই আমাদের মলের স্বাভাবিক রঙ হলদে। লিভার যখন আক্রান্ত হয়ে পড়ে তখন লিভার তার ওই কাজ ঠিকমতো করতে পারে না। ফলে বিলিরুবিন মিশে যায় রক্তে। এই বিলিরুবিন নামক রঞ্জক পদার্থের জন্যই চোখ, ত্বক, প্রস্রাব হলুদ হয়। জন্ডিস নামক উপসর্গ দেখা দেয়।
জন্ডিস বিভিন্ন কারণে হতে পারে। তেমনই অনেক রকমের জন্ডিসও হতে পারে। ডাক্তারি ভাষায় জন্ডিসকে হেপাটাইটিস বলা হয়। হেপাইটিস এ, বি, সি- এরকম বেশ কয়েক প্রকার জন্ডিস রয়েছে। রোগভিত্তিতে লক্ষণের হেরফের হলেও বেশ কিছু সাধারণ লক্ষণ সব জন্ডিসেই দেখা যায়। আমাদের দেশে সবচেয়ে বেশি হয় হেপাটাইটিস এ। এই রোগে প্রথম দুই সপ্তাহ রোগী তীব্র অরুচি, গা গোলানো, জ্বর জ্বর ভাব এসব উপসর্গে ভোগে। অনেকেরই ধারণা, জন্ডিস মানেই তেল- মশলা পুরোপুরি বন্ধ করে দাঁত-মুখ খিঁচিয়ে সেদ্ধ খেতে হবে। গিলতে হবে গ্লাসের পর গ্লাস গ্লুকোজ ওয়াটার ও আখের রস।
আসল বিষয়টি তেমন নয়। জন্ডিস হলে তেল, মশলা, ঝাল একটু কম খেতে হবে ঠিকই, তবে স্রেফ সেদ্ধ করা অখাদ্য গিলতে হবে এমন কোন কথা নেই।

ভেজ ফিশ
উপকরন : চার-পাঁচ টুকরো মাছ, ২চা চামচ পাতিলেবুর রস, আধ চা-চামচ গোলমরিচের গুঁড়ো, আধ কাপ মটরশুটি, আধ কাপ ফুলকপির রস, এক চতুর্থাংশ কাপ টকদই, ২ চা চামচ করনফ্লাওয়ার, একটি পেঁয়াজ মিহি করে কুচোনো, প্রয়োজনমতো হলুদও দিন। মটরশুঁটি ও ফুলকপি সেদ্ধ করুন। একটি পাত্রের মধ্যে দই, কর্ণফ্লাওয়ার, পেঁয়াজ, আদা ও লবণ দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। তাতে মাছগুলি দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ রাখুন। এবার প্রেসার প্যানে অল্প জল দেওয়ার পর মাখা মাছগুলো ছেড়ে দিন। সেদ্ধকরা মটরশুঁটি ও ফুলকপি ছড়িয়ে দিন। দিন হলুদ ও নুন। শেষে টম্যাটো কুচি দিয়ে সাজিয়ে দিন। অল্প আঁচে মিনিট কুড়ি রেখে দিতে হবে। নামানোর পর সামান্য গোলমরিচের গুঁড়ো ছিটিয়ে দেবেন।
আগেই বলেছি, জন্ডিস হলে মুখে অরুচি আসে। সাধারণ খাবারই ভালো লাগে না। আর সেদ্ধ খেতে দিলে তো মাথা গরম হবেই। যদি কোনো খাবার স্বাদ না লাগে, তবে সে খাবার কখনোই ঠিকমতো হজম হতে পারে না। তার কারণ, খাদ্য হজমের ক্ষেত্রে মুখের লালাগ্রন্থি নিঃসৃত রস এক বিরাট ভূমিকা পালন করে। এই রস বিশেষত শ্বেতসার জাতীয় খাদ্য পরিপাকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে।  

Join our mailing list Never miss an update